সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা সংশোধনের দাবি

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত নয়টি ধারা সংশোধনের দাবিতে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে সম্পাদক পরিষদ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনের দাবিতে আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন। ছবি: প্রবীর দাশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত নয়টি ধারা সংশোধনের দাবিতে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে সম্পাদক পরিষদ।

আজ সকাল সোয়া ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন শুরু হয়। এতে ১৬টি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকরা অংশগ্রহণ করেন। সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম মানববন্ধনে তাদের দাবির কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, আলোচনা বন্ধ হয়নি। একে ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, আলোচনার নামে যেন প্রহসন না হয়।

তিনি আরও বলেন, সম্পাদক পরিষদ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরোধী নয়। পরিষদ আইনের বিশেষ কতগুলো ধারা সংশোধনের দাবি করছে। বর্তমান আইনটি শুধু সাইবার জগৎ নয়, স্বাধীন গণমাধ্যমেরও কণ্ঠরোধ করবে। সম্পাদক পরিষদ চায়, আগামী সংসদ অধিবেশনে এই আইন সংশোধনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতা নিশ্চিত করা হবে।

মানববন্ধনে মাহফুজ আনাম সম্পাদক পরিষদের সাত দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো:

১. সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও বাক্‌স্বাধীনতা সুরক্ষার লক্ষ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারাগুলো অবশ্যই যথাযথভাবে সংশোধন করতে হবে;

২. এসব সংশোধনী বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনেই আনতে হবে;

৩. পুলিশ বা অন্য কোনো সংস্থার মাধ্যমে কোনো সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালানোর ক্ষেত্রে তাদের শুধু নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু আটকে দেওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে, তবে কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা বন্ধ করার অনুমতি দেওয়া যাবে না। শুধু তখনই প্রকাশের বিষয়বস্তু আটকাতে পারবে, যখন সংশ্লিষ্ট সংবাদ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে কেন ওই বিষয়বস্তু আটকে দেওয়া উচিত, সেই বিষয়ে যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারবে;

৪. কোনো সংবাদমাধ্যমের কোনো কম্পিউটার ব্যবস্থা আটকে দেওয়া বা জব্দ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আদালতের আগাম নির্দেশ নিতে হবে;

৫. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের সাংবাদিকতা দায়িত্বের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথমেই আদালতে হাজির হওয়ার জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে সমন জারি করতে হবে। এবং সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীদের কোনো অবস্থাতেই পরোয়ানা ছাড়া ও যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া আটক বা গ্রেপ্তার করা যাবে না;

৬. সংবাদমাধ্যমের পেশাজীবীর দ্বারা সংগঠিত অপরাধের ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধেও মামলা দায়েরের গ্রহণযোগ্যতা আছে কি না, তার প্রাথমিক তদন্ত প্রেস কাউন্সিলের মাধ্যমে করতে হবে। ওই লক্ষ্যে প্রেস কাউন্সিলকে যথাযথভাবে শক্তিশালী করা যেতে পরে এবং

৭. এই সরকারের পাস করা তথ্য অধিকার আইন দ্ব্যর্থহীনভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ওপর প্রাধান্য দেওয়া উচিত। এই আইনে নাগরিক ও সংবাদমাধ্যমের জন্য যেসব স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে, সেগুলোর সুরক্ষা অত্যাবশ্যকভাবে করতে হবে।

সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গত শনিবার মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করে। তারা বলছেন, আইনটির এই ধারাগুলো স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago