মন পরিষ্কার রাখার তরিকায় লিটন
ক্রিকেট যতটা ব্যাট-বলের খেলা, ঠিক ততটাই যেন মনেরও ব্যাপার। অনুশীলন, ফিটনেস সব ঠিকঠাক তবু কখনো প্রত্যাশার পারদ, কখনো বাড়তি চাপ কাবু করে ফেলে ক্রিকেটারদের। এসব সমস্যা থেকে বেরুতে জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে মনোবিদের শরণাপন্ন হচ্ছে বাংলাদেশ। তার আগে ওপেনার লিটন দাসের কথায়ও বেরিয়ে এলো তার পারফরম্যান্সের মনস্তাত্ত্বিক দিক।
বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা পড়ে লিটনের। ঘরোয়া ক্রিকেটে নামলেই ভুরি ভুরি রান। তাকে ঘিরে বিস্তর প্রত্যাশা থাকা অমূলক নয়। কিন্তু সামর্থ্যের কাছাকাছিও যেতে পারছিলেন না তিনি। বারবার ব্যর্থ হওয়া নিজের সামর্থ্য নিয়ে নিজেরই সংশয় তৈরি করে দেয়। এসব পরিস্থিতিতে তালগোল পাকিয়ে বেড়ে যায় জটিলতা।
এশিয়া কাপের ফাইনালে সেঞ্চুরির আগে লিটনকে ঘিরেও তৈরি ছিল সংশয়। ঘরোয়া ক্রিকেটে যতটা নামডাক, আসলেই কি ঠিক ততটা সামর্থ্যবান তিনি? বাইরের লোক এসব প্রশ্ন তুলতেই পারে। খোদ লিটনের মনেও যে ছিল সংশয়ের চোরাবালি। জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রস্তুতির ফাঁকে শোনাচ্ছিলেন ওসব পরিস্থিতিতে তার মনের খবর, ‘ক্রিকেট তো সম্পূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক খেলা। মানুষ বলে, মন যত পরিষ্কার থাকবে তত ভাল খেলবেন। যেহেতু পারফর্ম করিনি, তখন মনে নিজের সামর্থ্যে একটু প্রশ্ন থাকেই।’
ফাইনালে নেমেছিলেন মাথা পরিষ্কার করে। কোন কিছু হারানোর নেই, পাওয়ার আছে অনেক কিছু। এমন ভাবনায় বড় মঞ্চের চাপ আর তাই স্পর্শ করেনি। সামর্থ্যের সেরাটা দিয়ে খেলতে পেরেছেন স্বাভাবিক খেলা। রান পাওয়ার পর যেন নেমে গেছে মাথার উপর চেপে বসা বোঝা। বাস্তবতার জমিনে দাঁড়িয়ে তখনই টের পেয়েছেন হালকা লাগছে বেশ, ‘পারফর্ম করার পর মানসিকভাবে একটু চাপ মুক্ত হওয়া যায়। এই জন্য হয়তো ভাল হয়েছে।’
টেস্ট ক্রিকেটে একটু-আধটু ঝলক দেখিয়েছেন। মুন্সিয়ানা ছিল টি-টোয়েন্টিতেও। ১৮তম ওয়ানডেতে গিয়ে প্রথম ফিফটি পেরুনো এবং সেই ফিফটিকে তিন অঙ্কে নিয়ে যেতে পেরেছেন। ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপের ফাইনালে ওই সেঞ্চুরি হতে পারে তার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্টও। লিটন নিজে অতটা ভাবতে রাজি নন। এখানেও যেন মনস্তাত্ত্বিক চাপটা খামাখা গায়ে মাখতে চাইলেন না, ‘আমার কাছে এতটা মনে হয় না। আমার কাছে মনে হয় প্রতিদিন প্রতিটা ম্যাচ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা সত্যি, একটি ম্যাচ অনেকের ক্যারিয়ারে অনেক প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু আমাকে পরের ম্যাচে কিন্তু আবার শূন্য থেকেই শুরু করতে হবে। আমার চেষ্টা শূন্য থেকে বড় কিছু করা। ওটা নিয়ে এখন আশা করে বা চিন্তা করে কোন লাভ নেই। ’
Comments