‘লড়াই’ বা হাতাহাতিতে নিহত হলে লাশ কোথায় গেল?

ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটের ভেতর এক লড়াইয়ে মারা গেছেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি, অবশেষে আজ শনিবার তা স্বীকার করল সৌদি আরব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের এমন ব্যাখ্যাকে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ বললেও, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ আইনপ্রণেতাদের অনেকের কাছেই তা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
জামাল খাশোগির সন্ধান দাবিতে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটের সামনে বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স

ইস্তাম্বুলে সৌদি কনসুলেটের ভেতর এক লড়াইয়ে মারা গেছেন সাংবাদিক জামাল খাশোগি, অবশেষে আজ শনিবার তা স্বীকার করল সৌদি আরব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের এমন ব্যাখ্যাকে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ বললেও, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ আইনপ্রণেতাদের অনেকের কাছেই তা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খাশোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে।

প্রাথমিক তদন্তের ওপর ভিত্তি করে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, কনসুলেটের ভেতর দেখা করতে যাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে লড়াই হয় খাশোগির। এর কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় তার।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার এবং দেশটির গোয়েন্দা বিভাগের উপ-প্রধান আহমাদ আল-আসসিরি ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নিরাপত্তারক্ষী সৌদ আল-কাহতানিকে বহিষ্কার করার খবর জানিয়েছে সৌদি আরব।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের ধারণা, চাপা দিতে না পেরে বাধ্য হয়ে সৌদি আরব দায় স্বীকার করেছে। এবং খাশোগি হত্যার যে গল্প তৈরি করেছে, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এখন প্রশ্ন আসবে, হাতাহাতি বা ‘লড়াই’য়ে যদি মৃত্যু হয় তবে লাশ কোথায় গেল? ব্যক্তিগত বিমান নিয়ে সৌদি আরব থেকে এসে হত্যা করে আবার যারা ফিরে গেল, তারা কারা বা কার নির্দেশে এসেছিল? খুব সহজেই এর সঙ্গে যুবরাজ সালমানের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলতে পারে।

সৌদি আরব বা সালমানের ভরসা এখন ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে রক্ষাকর্তা হিসেবে আরও সক্রিয় হবেন ট্রাম্প। এর বিনিময়ে সৌদি আরব থেকে বড় সুবিধা আদায় করে নেবেন। তবে ট্রাম্পের জন্যে তা খুব সহজ হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে তাকে নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হবে। সৌদি আরব তুরস্ককে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। সন্তুষ্ট করতে পারছে না ইউরোপকে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘এ ঘটনাকে মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু সৌদি আরব আমাদের মহান মিত্র দেশ।’

এক গোলটেবিল বৈঠকে ট্রাম্প আরও বলেন, প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দোষীদের গ্রেপ্তার করা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত এই কাজ বাস্তবায়নের জন্য তিনি সৌদি আরবের প্রশংসাও করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যেত, কিন্তু এতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে অবস্থিত সৌদি কনসুলেটে ব্যক্তিগত কাজে ঢোকার পর ‘নিখোঁজ’ হন দেশটির প্রথিতযশা সাংবাদিক জামাল খাশোগি। সে সময় সৌদি কর্তৃপক্ষ জানায় যে, কাজ শেষ করে ওইদিন বিকেলেই কনসুলেট ত্যাগ করেন খাশোগি। কিন্তু এর প্রেক্ষিতে তারা কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। কিন্তু তুর্কি কর্তৃপক্ষ বলছে খাশোগিকে হত্যা কারা হয়েছে এমন অকাট্য প্রমাণ আছে তাদের কাছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের এই কলামিস্টের হত্যাকাণ্ড নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্কে নতুন টানাপড়েন শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে চলতি মাসে রিয়াদে অনুষ্ঠিতব্য ‘মরুভূমির দাভোস’ খ্যাত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে অনেক স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যম।

Comments

The Daily Star  | English

World Bank ready to be part of key economic reforms in Bangladesh: VP

The World Bank is 'excited' by the interim government's reform agenda and 'it is worth visiting Bangladesh right now', says Martin Raiser

37m ago