অসময়ে ‘টি-টোয়েন্টি’ ম্যাচ তবু ব্যতিক্রম তারা 

Sylhet  Fan
সিলেটের গ্রাউন্ড দুইয়ে বাংলাদেশের সমর্থকরা। ছবি- স্টার

টি-টোয়েন্টি সংস্করণের সঙ্গে রাতের আলোর একটা গভীর সম্পর্ক আছে। বেলা শেষে ফ্লাডলাইটের নিচে হবে চার-ছক্কার বিনোদন। কাজ সেরে মানুষ এই বিনোদনে মজে খুঁজবেন আনন্দ। সেই জায়গায় সকাল ৯টায় যদি শুরু হয় কোন কুড়ি ওভারের ম্যাচ, সেটা বেমানান লাগারই কথা। এবারের নারী এশিয়া কাপের ম্যাচগুলোর সূচিও ঠিক দর্শক বান্ধব নয়।  

মেয়েদের খেলা, সময়টাও সুবিধাজনক নয় তবু শনিবার সকালে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড ম্যাচে শ পাঁচেক দর্শক মাতিয়ে রাখলেন মাঠ। সবুজ ঘাসের টিলায় বসে  শামীমা সুলতানার একেকটি শট তাদের উদযাপনের মাত্রা করল দ্বিগুণ। 

এদের সবাই যে কাছাকাছি এলাকা থেকে এসেছেন তাও নয়। টাইগার শোয়েব বলে পরিচিত শোয়েব আলি কয়েকজনকে এসেছেন ঢাকা থেকে। বাংলাদেশের খেলা হলে তার উপস্থিতি অবশ্য স্বাভাবিক বিষয়। 

৭০ কিলোমিটার দূরের সুনামগঞ্জ থেকে স্ত্রী-সন্তানসহ এসেছেন সরকারি কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম। জানালেন মাঠে এসে খেলা দেখার সুযোগ হারাতে চাননি বলেই তাদের এই উপস্থিতি, 'আমরা টিভিতে তো খেলা দেখি। কিন্তু মাঠে খেলা দেখার অন্যরকম অনুভূতি। এখানে আউটার মাঠে খেলা হচ্ছে, শুনেছি ভেতরের মাঠেও হবে। সেখানে ভালো সুযোগ সুবিধা থাকবে দর্শকদের। এখানে রোদে কষ্ট হলেও সরাসরি খেলা দেখতে পারার আনন্দ পাচ্ছি। এর আগে ঢাকায় মাঠে গিয়ে খেলা দেখেছি।'

তার স্ত্রী মিথিলা আক্তার বলেন, সম্প্রতি সাফ ফুটবলে বাংলাদেশ নারীদের শিরোপা জেতা তাদের উদ্দীপিত করেছে এখানে আসতে,  'আমাদের দেশের মেয়েরা ফুটবলে একটা ট্রফি অর্জন করেছে। এখন ক্রিকেটে এসেছে। সব কিছু মিলিয়ে আমাদের মধ্যে উন্মাদনা কাজ করেছে বলে সুনামগঞ্জ থেকে এখানে এসেছি। আমরা খেলা দেখার জন্যই এসেছি। আমাদেরও আরও ম্যাচ দেখার ইচ্ছা আছে। ছেলেদের ক্রিকেট যেরকম উন্নতি করেছে। আমরা আশা করব মেয়েদের ক্রিকেটও উন্নতি করবে। '

সিলেট শহরের ৫০ কিলোমিটার দূরের জৈন্তাপুর উপজেলা থেকে এসেছেন রুবেল আহমেদ, তার মতে ছেলে হোক, মেয়ে হোক বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রতি নিখাদ ভালোবাসা থেকে সমস্ত কষ্ট তুচ্ছ করেছেন তারা,  'আমি নিজেও ক্রিকেট খেলি। এবং দেশ-বিদেশের ক্রিকেট ভালোবাসি। নিজেকে একজন ক্রিকেট ভক্ত মনে করি। সুযোগ পেলে বাংলাদেশের খেলা মাঠে গিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি। আমি জৈন্তাপুর থেকে এসেছি, শহর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকে ছুটে এসেছি।'

'ক্রিকেট খেলা সারাবিশ্বেই ছড়িয়ে গেছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে জনপ্রিয়তা। এটা এশিয়ার জন্য বিশ্বকাপের মতো। সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশ খেলছে, লাল সবুজের প্রতিনিধিরা, বাঘিনীরা নেমেছে। তাদেরকে সমর্থন করা দরকার।'

এই দর্শকরা চান, ঘরের মাঠে আরেকবার বিজয় কেতন ওড়াবেন নিগার সুলতানা জ্যোতিরা,  'বাংলাদেশ খুব ভালো পারফর্ম করছে। এশিয়ায় বাংলাদেশ এখন বড় শক্তি। যেহেতু আমাদের হোম গ্রাউন্ডে খেলা হচ্ছে, আমাদের নারী দলের এটা একদম ঘরের মাঠ। সব সুযোগ কাজে লাগিয়ে সেরাটা দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হবো।'

এশিয়া কাপ ঘিরে সিলেট শহরে কোন আলোড়নই নেই। শহরবাসী বেশিরভাগ মানুষেরও এই টুর্নামেন্টের কথা জানা কঠিন। দর্শকরা বলছেন আরেকটু প্রচার-প্রচারণা হলে আর সময়টা জুতসই হলে একটা হাইপ উঠতে পারত। 

সময় নিয়ে অবশ্য বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির অবশ্য কোন আপত্তির জায়গা নেই, 'এটা সম্পূর্ণ এসিসির বিষয়। তবে আর্লি মর্নিংয়ের সুবিধা যারা নিতে পারবে তারা সফল হবে। আমরা কাইন্ড হোম গ্রাউন্ডের সুবিধাটা নিতে পেরেছি।' 

 

Comments

The Daily Star  | English

Advisory council clears anti-terrorism law amendement

Draft includes provision to ban an entity's activities, restrict terrorism-related content online

1h ago