রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ভারতকে হারিয়ে দিল পাকিস্তান
মেয়েদের ক্রিকেটে দুই দলের শক্তির তফাৎ বেশ খানিকটা। মুখোমুখি টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যানেও অনেকটা এগিয়ে ভারত। চলতি এশিয়া কাপের ছন্দ বিচারেও ভারত ছিল পরিষ্কার ফেভারিট। তবে মাঠের খেলায় ভারতকে ভড়কে দিল পাকিস্তান। আগেরদিন থাইল্যান্ডের কাছে হারের ক্ষত ভুলে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে ধরাশায়ী করেছে বিসমাহ মারুফের দল।
শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মেয়েদের এশিয়া কাপে ভারতকে ১৩ রানে হারায় পাকিস্তান। আগে ব্যাট করতে গিয়ে নিদা ধরের ৩৭ বলে অপরাজিত ৫৬ রানে ১৩৭ রান করে পাকিস্তান। মাঝের ওভারের ব্যাটিং ব্যর্থতার পর ভারত করতে পারে ১২৪ রান।
ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও পাকিস্তানের নায়ক নিদা। ৪ ওভার বল করে ২৩ রানে ২ উইকেট নেন তিনি।
স্মৃতি মান্ধানা, হারমানপ্রিত কাউর, জেমাইমা রদ্রিগেজের ব্যর্থতায় নাগালে থাকা লক্ষ্যেও খেই হারিয়ে ফেলে ভারত। ৯১ রানে পড়ে যায় ৬ উইকেট। ম্যাচ জিততে শেষ ৩ ওভারে দরকার ছিল ৪৩ রান।
ওই অবস্থায় নেমে তিন ছয়, এক চারে খেলা জমিয়ে দেন রিচা ঘোষ। তার ঝড়ে সমীকরণ নেমে এসেছিল ১০ বলে ১৮ রানে। তবে সেখান শেষটা করতে পারেননি তিনি। বাঁহাতি স্পিনার সাদিয়া ইকবালকে লং অন দিয়ে আরেক ছয় উড়াতে গিয়ে ব্যাটে নিতে পারেননি। ১৩ বলে ২৬ করে আউট হয়ে যান রিচা। তার আউটেই মূলত মিইয়ে যায় উত্তেজনা। শেষ ওভারে ১৮ রানের সমীকরণ আর মেলাতে পারেনি তারা
১৩৮ রানের লক্ষ্যে ভারতের শুরুটা ছিল উড়ন্ত। সাবহিনেনি মেঘনা চার-ছয়ে ঝড়ের আভাস দিয়েছিলেন। তবে অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে সান্ধুর বলে বিদায় তার। ১৪ বলে ১ চার, ১ ছক্কায় তিনি করেন ১৫।
টুর্নামেন্টে ভারতের ব্যাটিংয়ে বড় ভরসা ছিলেন জেমাইমা রদ্রিগেজ। আগের দুই ম্যাচে নেমে করেন ফিফটি। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে হাসল না তার ব্যাট।
৮ বলে ২ রান করে নিদার বলে ক্যাচ তুলে নেন জেমাইমা। দলের ভরসা হতে পারতেন স্মৃতি। থিতু হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখান থেকে দলকে টানতে পারেননি। ১৭ রানে স্টাম্পিং হওয়ার হাত থেকে বেঁচে যান স্মৃতি । কিন্তু জীবনটা কাজে লাগাতে পারেননি। নাসরা সান্ধুর পরের বলেই উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ধরা দিয়ে ফেরত যান এই বাঁহাতি। ১৯ বল খেলে করেন কেবল ১৭ রান।
অধিনায়ক হারমানপ্রিত নেমেছিলেন সাতে। করতে পারেন কেবল ১২ বলে ১২ রান। রিচাকে আটে নামিয়ে পরে আর লাভ হয়নি।
টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে সতর্ক শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার সিদ্রা আমিন ও মুনিবা আলি। তবে পঞ্চম ওভারে ২৬ রানে এই দুজনের ছুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর দ্রুত তিন উইকেট হারায় পাকিস্তান।
পুজা ভাস্টাকারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সিদ্রা। মুনিবা দীপ্তি শর্মার বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে হয়ে যান স্টাম্পিং।
ওমাইনা সোহাইলকে এলবডব্লিউতে ফেরান দীপ্তি। এরপর ৭৬ রানের জুটি গড়েন পাকিস্তানের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার বিসমাহ মারুফ ও নিদা।
নিদা নেমেই তুলেন ঝড়। খেলার ভাষা বদলে যায় তার ঝাঁজে। ৩৫ বলে ৩২ করে বিসমাহ ফিরলেও নিদা দলকে নিয়ে যান শক্ত অবস্থায়। ৩৭ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৫৬ করেন তিনি। বল হাতেও এই পুঁজি ধরে রাখতে সেরাটা দেখান নিদা।
Comments