সেরা কম্বিনেশন পেয়ে গেছেন শ্রীরাম?
ত্রিদেশীয় সিরিজে এবার টাইগারদের ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে হয়েছে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা। দলের সেরা ব্যাটার সাকিব আল হাসানও এক ম্যাচে খেলেছেন সাত নম্বরে। আসরে খেলা চার ম্যাচে ভিন্ন চারটি ওপেনিং জুটিও দেখেছে দল। তবে এতো এতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অবশেষে সঠিক কম্বিনেশন খুঁজে পেয়েছেন বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরাম।
বৃহস্পতিবার ক্রাইস্টচার্চে বাংলাওয়াশ ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের ফিফটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৩ রান করেছিল বাংলাদেশ। সে লক্ষ্য ১ বল হাতে রেখে পেরিয়ে যায় পাকিস্তান।
হারলেও শেষ ম্যাচে ব্যাটিংটা ভালো হয়েছে বাংলাদেশের। অবশ্য টাইগারদের লড়াইয়ের পুঁজিটা এনে দেওয়ার মূল কৃতিত্ব সাকিব ও লিটনের। এদিনও ধুঁকেছে ওপেনিং জুটি। ডেথ ওভারের ব্যাটিংও ছিল যাচ্ছে তাই। সাকিব-লিটন মাঠে থাকা অবস্থাতেই রানের চাকা ঘুরেছে বাংলাদেশের।
সিরিজে সব ম্যাচ হারলেও পছন্দের কম্বিনেশন পাওয়াই যেন স্বস্তি। শ্রীরামের ভাষায়, 'আমরা যে সেরা দলটিকে খেলাতে চাই, সেটা নিয়ে আমরা পরিষ্কার আছি। অধিনায়ক, আমি এবং ডিরেক্টর, আমরা সবাই একই অবস্থানে আছি। আমাদের ভাবনায় দুই-তিনটি কম্বিনেশন আছে। কন্ডিশন, প্রতিপক্ষ বিবেচনায় আমরা সেভাবে দল সাজাবো এবং মানিয়ে নেব।'
সেরা কম্বিনেশন খুঁজে পেতে এতো সময় লাগার কারণটাও ব্যাখ্যা করেন টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট, 'আমি তো মাত্র এক (আসলে দুই) মাস হলো যোগ দিয়েছি। ছেলেদের সম্পর্কে তো এখনও জানছি। আমি যখন দায়িত্ব নেই, দল কিছুটা খারাপ অবস্থায় ছিল। আমার ছেলেদের সম্পর্কে আরও জানতে হবে। আমার মনে হয়, সেখানে পৌঁছাতে পারব।'
এমনকি ব্যাটিং লাইনআপ নিয়ে এতো পরীক্ষা-নিরীক্ষার কারণও জানিয়েছেন তিনি, 'আমরা আমাদের ছেলেদের সম্পর্কে তখনই জানতে পারব যখন তাদেরকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে খেলতে দিয়ে দেখব তারা কেমন করছে। আমরা অনেক কিছুই জেনেছি। দল ভেদে আমরা কেমন কম্বিনেশন খেলাতে চাই, সেটা নিয়ে আমাদের পরিষ্কার ধারণা রয়েছে।'
'যেমন, ভারতের বিপক্ষে যে কম্বিনেশন থাকবে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আমরা ভিন্ন কম্বিনেশন নিয়ে নামব, অথবা ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যারাই কোয়ালিফাই করে। আমাদের সব বিকল্প প্রস্তুত রাখতে হবে। আমরা হয়তো একজন বাড়তি স্পিনার কিংবা পেসার খেলাতে পারি। আমার মনে হয় ওই জায়গা গুলোতে আমরা প্রস্তুত,' যোগ করেন শ্রীরাম।
এতো যাচাই বাছাইয়ের পর মাঠের ফলাফল নিজেদের পক্ষে পায়নি বাংলাদেশ। হারতে হয়েছে সবগুলো ম্যাচই। তবে এ দলটিই একসময় ভালো করবে বলে বিশ্বাস করেন তিনি, '(দলের ওপর) বিশ্বাস তো অবশ্যই আছে। এই দল সেরা দল, আমাদের সঙ্গে যারা আছে তারা বাংলাদেশের সেরা। তাদের ওপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে।'
এদিন ব্যাটিং ও বোলিং উভয় ইনিংসে শেষ ১০ ওভারে ঘাটতিটা টের পেয়েছেন শ্রীরাম। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে রান তাড়ায় শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১০৪ রান। হাতে তখনও ৮ উইকেট। কিন্তু সেই ম্যাচ হারে ২১ রানে। আজ শেষ ১০ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১০১ রানের। তাও আটকে রাখতে পারেনি টাইগার বোলাররা।
তাই শেষ ১০ ওভারে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলেন শ্রীরাম, 'পাকিস্তানের বিপক্ষে আমাদের সুযোগ ছিল। প্রথম ম্যাচে শেষ ১০ ওভারে ১০০ রান দরকার ছিল আমাদের, এই ম্যাচেও ১০ ওভারে ১০০ রান ডিফেন্ড করতে হতো। দুই ম্যাচেই অল্পের জন্য হয়নি। এই ছোট মার্জিনগুলোই আমাদের শিখতে হবে।'
'দল যখন ধারাবাহিকভাবে জিতবে, দল জানবে শেষদিকে কীভাবে ওভারে ১০ করে রান করতে হয় বা ১০ রান ডিফেন্ড করতে হয়, যেটা ভালো দলগুলো করে থাকে। আমি মনে করি না, এটা কেবল নির্দিষ্ট একটি জায়গা বা নির্দিষ্ট একজনের বিষয় নয়। এটা পুরো দলের সমন্বিত ব্যাপার,' যোগ করেন তিনি।
Comments