শেষ আশাটাও রইল না শ্রীলঙ্কার

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা জিতলে অন্তত ওয়েস্ট ইন্ডিজের উপরে উঠে আট নম্বরে স্থানে থাকতে পারতো শ্রীলঙ্কা। এরপর তাকিয়ে থাকতে হতো নেদারল্যান্ডসের দিকে। দারুণ কিছু করে যদি ডাচরা দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দিতে পারতো তাহলে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলতে পারতো দাসুন শানাকারা। কিন্তু নিজেদের কাজটিই করতে পারেনি দলটি।
শুক্রবার হ্যামিলটনের স্যাডন পার্কে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪১.৩ ওভারে ১৫৭ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। জবাবে ১০৩ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছায় স্বাগতিকরা।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচে জয় পেলে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলতে পারতো শ্রীলঙ্কা। প্রথম ম্যাচে হারে আশা কমে আসে। আর দ্বিতীয় ম্যাচ পণ্ড হওয়ায় কার্যত তখনই সব শেষ হওয়া যায় দলটির। আর তৃতীয় ম্যাচের পর্যায়ে বাছাই পর্ব খেলা নিশ্চিত হওয়া যায় তাদের।
বর্তমান ওয়ানডে সুপার লিগে ২৪ ম্যাচ খেলে ৮২ পয়েন্ট শ্রীলঙ্কার। ৮৮ পয়েন্ট নিয়ে আট নম্বরে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের ছাপিয়ে আট নম্বরে উঠতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৭৮ পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা দশে আছে তারা। তাদের শেষ দুই ম্যাচের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দলটির বিপক্ষে জিতলে ৯৮ পয়েন্ট নিয়ে সরাসরি বিশ্বকাপ নিশ্চিত হবে প্রোটিয়াদের।
এদিন লঙ্কানদের শেষ আশাটা গুঁড়িয়ে দেন তিন কিউই পেসার ম্যাট হেনরি, হেনরি শিপলি ও ড্যারিল মিচেল। তিন পেসারই নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। তাতে সাদামাটা পুঁজি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় শ্রীলঙ্কাকে। এরপর বোলাররাও পারেনি আহামরি কিছু করতে। ফলে বড় জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করল নিউজিল্যান্ড।
অথচ এদিন টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছিল লঙ্কানরা। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে দলটি। নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারায় দলটি। ষষ্ঠ উইকেটে অধিনায়ক শানাকার সঙ্গে ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কার ৩০ রানের জুটিই ছিল ইনিংসে সর্বোচ্চ।
একমাত্র নিসাঙ্কাই ধারা বিপরীতে এক প্রান্ত আগলে লঙ্কানদের টানছিলেন। কিন্তু তাকে ফিরতে হয় রানআউট হয়ে। ইশ শোধির বলে কভারে ঠেলে দিয়েছিলেন নিসাঙ্কা। সেখানে রান না থাকলেও অধিনায়ক শানাকা সিঙ্গেল নিতে চেয়েছিলেন। রাজী ছিলেন না নিসাঙ্কা। শেষ পর্যন্ত নিজের উইকেট বিসর্জন দিয়ে ফেরেন। এরপর অবশ্য চামিকা করুনারত্নেকে নিয়ে ২৮ রানের জুটি গড়েছিলেন শানাকা। তবে তাতে পুঁজি খুব একটা বড় হয়নি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন নিসাঙ্কা। ৬৪ বলে ৮টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৩৬ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ৩১ রান করেন শানাকা। চামিকার ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ১০ ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন ম্যাট হেনরি। এছাড়া ৩টি করে উইকেট নেনে হেনরি শিপলি ও ড্যারিল মিচেল।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। লাহিরু কুমারার তোপে দলীয় ৬ রানেই দুই ওপেনার চাদ বোয়েস ও টম ব্লান্ডেলকে হারায় কিউইরা। এরপর দলীয় ২১ রানে ড্যারিল মিচেলকেও হারায় দলটি। তাতে বড় চাপে পড়েছিল স্বাগতিক দলটি। এরপর তৃতীয় উইকেটে টম লাথামের সঙ্গে ৩৮ রানের জুটি গড়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন উইল ইয়ং।
লাথামকে বোল্ড করে এ জুটি ভাঙেন লঙ্কান অধিনায়ক শানাকা। এরপর হেনরি নিকোলসকে নিয়ে দলের হাল ধরেন ইয়ং। অবিচ্ছিন্ন ১০ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এ দুই ব্যাটার। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৬ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ইয়ং। ১১৩ বলে ১১টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। ৫২ বলে ৫টি চারের সাহায্যে হার না মানা ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন নিকোলস।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে ৩৯ রানের খরচায় ২টি উইকেট পান কুমারা।
Comments