শেষ ওভারের রোমাঞ্চে মোহামেডানকে হারাল আবাহনী

ঢাকার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের লড়াই। ছুটির দিনেও সেই ম্যাচ নিয়ে মানুষের তেমন কোন আগ্রহ নেই। প্রায় ফাঁকা গ্যালারিতে অবশ্য ম্যাচ হয়েছে জম্পেশ। তাতে বারবার রঙ বদলানোর পর শেষ ওভারে হাসি চওড়া হয় আবাহনী লিমিটেডের।
সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সুপার লিগ রাউন্ডে মোহামেডানকে ৮ রানে হারিয়েছে আবাহনী। আগে ব্যাট করে মোসাদ্দেক হোসেনের ফিফটিতে ২৫৮ রান করে আবাহনী। রান তাড়ায় মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন আর মাহমুদউল্লাহর ফিফটির পরও সমীকরণ মেলেনি মোহামেডানের। ব্যাট হাতে ৬৩ রান করার পর ৫১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে আবাহনীর নায়ক অধিনায়ক মোসাদ্দেক।
শেষ ৬ ওভারে দরকার ছিল ৬৩। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের করা ৪৫তম ওভারে দুই ছক্কায় ১৭ রান নিয়ে নেন আরিফুল হক। খেলা নিয়ে আসছিলেন মোহামেডানের মুঠোয়। মোসাদ্দেকের পরের ওভারের প্রথম বলেই মেরে দেন আরেক ছয়। ২৯ বলে সমীকরণ নেমে আসে ৩৯ রানে।
কিন্তু এরপরই মারাত্মক ভুল করে বসেন আরিফুল। লং অনের দিকে ঠেলেই দুই রানের জন্য ছুটে যান। রান প্রায় পুরোই করে ফেলেছিলেন। কিন্তু আফিফ হোসেন সরাসরি থ্রোতে ভেঙে দেন স্টাম্প। ওই আত্মঘাতি রান আউটে বদলে যায় ম্যাচের ছবি। কেবল টেল এন্ডাররা থাকায় তাদের নিয়ে আর দলকে জেতার রাস্তায় রাখা সম্ভব হয়নি শুভাগত হোমের। শেষ ওভারে দরকার ছিল ২০ রান। প্রথম বলে ছক্কা মেরে দেন মুশফিক হাসান। কিন্তু এক বল পর তিনিও আউট হয়ে যান। ওই ওভারে শেষ দুই বলে ১১ রান থাকতে স্ট্রাইক পান শুভাগত। মোসাদ্দেকের বলে উড়াতে পারেননি তিনি।
২৫৯ রানের লক্ষ্যে নেমে এদিন আবার ব্যর্থ সৌম্য সরকার। মাত্র ৭ রান করে ফেরেন তিনি। তানজিম হাসান সাকিবের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার দেন এলবডব্লিউর সিদ্ধান্ত। অধিনায়ক ইমরুল কায়েস নাহিদুল ইসলামকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে নেন বিদায়। শ্রীলঙ্কান কামিন্দু মেন্ডিস তিনে নেমেই ফেরেন ১ রান করে। ১২ রানে ৩ উইকেট খুইয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় মোহামেডান।
এরপর গত যুব বিশ্বকাপ খেলা আরিফুল ইসলামকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন অঙ্কন। দুজনের জুটিতে আসে ৭৩ রান। আরিফুলের বিদায়ের পর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে ৮৭ রানের জুটি পান অঙ্কন।
১১৩ বলে ৮৮ করা করা অঙ্কন মোসাদ্দেকের বলে ক্যাচ তুলে দিলে মোড় আবার ঘুরে যায়। যদিও অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ ছিলেন ক্রিজে। ফিফটি করে তিনিও শিকার হন মোসাদ্দেকের। এরপর আরিফুল আশা জাগালেও কাজটা শেষ করতে পারেননি।
সকালে টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে চরম বিপদে পড়ে আবাহনী। চতুর্থ ওভারে ছন্দে থাকা এনামুল হক বিজয়কে শিকার ধরেন নাজমুল ইসলাম অপু। দুই পেসার মুশফিক হাসান আর খালে আহমেদ ফিরিয়ে দেন নাঈম শেখ আর মাহমুদুল হাসান জয়কে। ৪৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় আবাহনী।
প্রবল চাপ সরিয়ে দিতে চতুর্থ উইকেটে জুটি বাধেন আফিফ হোসেন আর জাকের আলি অনিক। এই দুজনের ৭৫ রানের জুটি খেলায় ফিরিয়ে আনে শিরোপা প্রত্যাশিদের।
শুভাগত হোম এসে আফিফকে ফিরিয়ে ভাঙেন এই জুটি, জাকের আলিকেও পরে তুলে নেন তিনি। তবে পাকিস্তানি খুশদিল শাহর সঙ্গে ৫২ রানের আরেক জুটি পেয়ে যান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ২৫ বলে ২৯ করে খুশদিল রান আউট হয়ে গেলেও মোসাদ্দেক দলকে টেনে নিয়ে যান আরও। ৭০ বলে ৬৩ রানের ইনিংসে লড়াইয়ের পুঁজি পাইয়ে দেন তিনিই।
সুপার লিগে অন্য দুই ম্যাচই হয়েছে একপেশে। বিকেএসপিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ১৭৩ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। সেঞ্চুরি পেয়েছেন জাকির হাসান ও শাহাদাত হোসেন দিপু। ফতুল্লায় গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের কাছে বিধ্বস্ত হয় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি। শেখ জামালকে মাত্র ৮৯ রানে গুটিয়ে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতেছে আকবর আলির দল।
Comments