‘উপায় না দেখে’ ফের কোয়াবের দায়িত্বে দুর্জয়-দেবব্রত

বর্তমান সভাপতি নাঈমুর রহমান দুর্জয় তার বক্তব্যে জানিয়ে দেন আবার একই পদে থাকার ইচ্ছা নেই তার। নতুন নেতৃত্বকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত তিনি। কোয়াবের বার্ষিক সভায় বিভিন্ন পদের জন্য নির্বাচন করতে প্রার্থিতা আহবান করেন সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল, অনেকক্ষণ অপেক্ষা করা হয়। কিন্তু সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের কেউই সাড়া দেননি। উপায় না দেখে ফের দুর্জয়-দেবব্রতকেই আরও এক মেয়াদে নির্বাচিত করা হয়েছে।
২০১৪ সাল থেকেই ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (কোয়াব)'র দায়িত্বে আছেন দুর্জয়-দেবব্রত। এবার আরও ৪ বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ল তাদের। তবে এবারও সরাসরি ভোটের বদলে অন্য কারো ইচ্ছা না থাকায় বহাল থাকলেন তারা।
শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় কোয়াবের এজিএমের। নির্বাচনের প্রার্থিতা আহবান করার পর কমিশনার ও বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনামের কাছে কেউই নাম জমা দেননি। মাহবুব আনাম পরে তার বক্তব্যে বলেন, 'আমার কাছে কেউ নাম দেননি, কেউই দায়িত্ব নিতে রাজী না। কেউ অধিনায়ক হতে চান না। এটা দুর্ভাগ্যজনক। যেহেতু কেউ নাম দেননি কাজেই সবাইকে মিলে কাউকে দায়িত্বটা দিতে হবে।'
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও তার বক্তব্যের সময় উপস্থিত থাকা সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে এই দুই পদের জন্য প্রার্থী আহবান করেন। তার ডাকেও কেউ সাড়া দেননি।
পরে এজিএমের সমন্বয়কের ভূমিকায় থাকায় বিসিবি পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদ টিটো আগের দুই সংগঠকের নামই প্রস্তাব করেন, 'যেহেতু কেউ প্রার্থী হতে চাননা আমার প্রস্তাব হচ্ছে দুর্জয় ভাই ও দেবব্রতই দায়িত্ব পালন করে যান। দুর্জয় ভাই বলেছেন তার ইচ্ছা নেই কিন্তু আমরা সবাই তাকে চাই। তারা ভালো কাজ করছেন, তারাই আবার দায়িত্বে থাকুন। আপনারাদের এই সিদ্ধান্তে সায় থাকলে হাত তুলুন।'
তানভীরের ডাকে সাড়া দিয়ে উপস্থিত থাকা ক্রিকেটাররা হাত তুললে ফের নির্বাচিত হয়ে যান দুর্জয় ও দেবব্রত। আগামী দুই মাসের মধ্যে কমিটির বাকি সদস্যদের বেছে নেবেন তারা। ক্রিকেটারদের স্বার্থ রক্ষায় ২০০৪ খেলোয়াড় কল্যাণ সমিতি তৈরি করা হয়। পরে আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অব ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (ফিকা)'র সঙ্গে মিলে গঠন করা হয় কোয়াব। যার প্রথম সভাপতি ছিলেন হেলালউদ্দিন লিটন ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন নাঈমুর রহমান দুর্জয়। এরপর থেকে দুর্জয় সভাপতি ও দেবব্রত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

এদিন এজিএমে বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের সম্মাননা জানানো হয়। কিন্তু নানা কারণে তাদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন না। প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বিসিবি প্রধান। সম্মেলনে তাকে প্রশংসা করে একটি অডিও ভিজ্যুয়ালও পরিবেশন করা হয়। সাধারণ ক্রিকেটারদের সমস্যা নিয়ে কথা বলার সুযোগ পেয়ে মোহাম্মদ আশরাফুল তার বক্তব্যে, জেলা পর্যায়ের লিগগুলো যাতে নিয়মিত হয় সেই আহবান জানান কোয়াবের প্রতি।
২০১৯ সালে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনের সময় কোয়াবের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ক্রিকেটাররা। দুর্জয় ও দেবব্রতর পদত্যাগ চেয়ে নির্বাচন দাবি করেছিলেন তারা। পরে দুর্জয়-দেবব্রত পদত্যাগে রাজী হয়ে অন্যদের দায়িত্ব নিতে আহবান করলে কেউই সাড়া দেননি। সেই আন্দোলনে থাকা ক্রিকেটার নুরুল হাসান সোহানও তার বক্তব্যে বর্তমান কমিটিকে নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলেননি।
এই সম্মেলনে উপস্থিতি হননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মাশরাফি মর্তুজা, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালের মতন দেশের শীর্ষ ক্রিকেটাররা। বর্তমান জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত আর মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদেরকে মঞ্চে বসানো হয়। মঞ্চে ছিলেন নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতিও। এবারই প্রথম দেশের নারী ক্রিকেটারদের কোয়াবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
Comments