৩৭৪ রানের লড়াই টাই, পরে সুপার ওভারে জিতল নেদারল্যান্ডস

৩৭৪ রান তাড়ায় ম্যাচ হলো টাই। এরপর সুপার ওভারে গড়ানো ম্যাচ জিতে নিল নেদারল্যান্ডস।

শেষ বলে প্রয়োজন ছিল একটি রানের। কিন্তু স্নায়ুচাপ সামলাতে পারলেন না লোগান ফন বিক। আউট হয়ে মাথা নিচু করে ফিরছিলেন তিনি। কিন্তু নাটকীয়তার তখনও বাকি। সুপারের গুরু দায়িত্ব পড়ল তার কাঁধে। প্রথমে ব্যাট হাতে দেখালেন তাণ্ডব। এরপর বল হাতে জাদু। শেষ পর্যন্ত মাথা উঁচু করেই মাঠ ছাড়লেন সেই ফন বিকই। অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ জিতে নেদারল্যান্ডস পেল মূল্যবান দুটি পয়েন্ট।

হারারেতে সোমবার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সুপার ওভারে হারিয়েছে ডাচরা। নির্ধারিত ম্যাচে দুই দলই সমান ৩৭৪ রান করে তোলে। এরপর সুপার ওভারে নেদারল্যান্ডস করে রেকর্ড ৩০ রান। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ করতে পেরেছে মাত্র ৮ রান।

অথচ নিকোলাস পুরানের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ৩৭৪ রানের বিশাল পুঁজি গড়েও নির্ভার থাকার কথাই ছিল ক্যারিবিয়ানদের। কিন্তু তেজা নিডামানুরুর সেঞ্চুরিতে লড়াই জমিয়ে দেয় নেদারল্যান্ডস। তারপরও অপর প্রান্তে নিয়ন্ত্রণ রেখে ম্যাচেই ছিল উইন্ডিজ। কিন্তু শেষ দিকে ফন বিকই বদলে দেন সব।

এই হারে বিশ্বকাপ স্বপ্ন বেশ কঠিনই হয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সুপার সিক্সে উঠলেও খালি হাতেই যেতে হচ্ছে তাদের। কারণ 'এ' গ্রুপ থেকে সুপার সিক্সে ওঠা জিম্বাবুয়ে ও নেদারল্যান্ডস দুই দলের সঙ্গেই হেরেছে তারা। পূর্ণ চার পয়েন্ট নিয়ে উঠেছে জিম্বাবুয়ে। আর আজকের জয়ে ডাচরা পেয়েছে দুই পয়েন্ট।

সুপার ওভারে ব্যাটিংয়ে নেমে জেসন হোল্ডারের করা ছয়টি বলেই বাউন্ডারি তুলে নেন ফন বিক। অথচ ডেথ ওভারে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করার দারুণ সুনাম রয়েছে হোল্ডারের। সমান তিনটি করে চার ও ছক্কায় স্কোরবোর্ডে আসে রেকর্ড ৩০ রান। ওয়ানডে তো বটেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সুপার ওভারেও এতো রান তুলতে পারিনি এর আগে কোনো দলই।

সেই লক্ষ্য তাড়ায় অধিনায়ক শাই হোপকে নিয়ে মাঠে নামেন জনসন চার্লস। প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে আশা জাগিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ানদের। কিন্তু এরপর বাকি গল্প শুধু ডাচদের। পরের দুই বলে দুটি সিঙ্গেল। এর পরের বলে চার্লসকে আউট করে জয় নিশ্চিত করে ফেলেন ফন বিক। পঞ্চম বলে আউট করেন হোল্ডারকেও।

এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১০১ রানের জুটি গড়ে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার ব্রান্ডন কিং ও চার্লস। ব্যক্তিগত ৫৪ রানে চার্লসকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন ভিভিয়ান কিংমা।  এরপর সামারাহ ব্রুককে নিয়ে ৫৯ রানের আরও একটি জুটি গড়ে আউট হন কিং। ৮১ বলে ৭৬ রান করেন তিনি। তিন রানের ব্যবধানে ব্রুককেও তুলে নেয় ডাচরা।

এরপর অধিনায়ক হোপের সঙ্গে ১০৮ রানের জুটি গড়েন পুরান। তবে হোপকে ফিরিয়ে জুটি ভেঙে দ্রুত আরও দুটি উইকেট তুলে ম্যাচে ফেরে নেদারল্যান্ডস। কিন্তু কিমো পলের সঙ্গে ৭৯ রানের আরও একটি জুটি গড়ে দলকে বড় পুঁজিই এনে দেন পুরান। হার না মানা ১০৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ৬৫ বলে ৯টি চার ও ৬টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ২৫ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ৪৬ রান করেন পল।

লক্ষ্য তাড়ায় ভালো সূচনা পায় নেদারল্যান্ডসও। ৭৬ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন বিক্রমজিত সিং ও ম্যাক ও'ডয়েড। তবে পঞ্চম উইকেটে অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসের সঙ্গে নিডামানুরুর ১৪৩ রানের জুটিতে লড়াই জমিয়ে দেয় ডাচরা। এরপর অবশ্য ১৪ রানের ব্যবধানে এই দুই ব্যাটার সহ আরও একটি উইকেট তুলে ম্যাচে ফিরে আসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

কিন্তু তাদের জয়ে বাধা দাঁড়ান ফন বিক। সঙ্গী হিসেবে পান আরিয়ান দত্তকে। ৪৪ রানে জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথেই নিয়ে গিয়েছিলেন এ দুই ব্যাটার। কিন্তু আলজেরি জোসেফের করা শেষ ওভারে এ দুই ব্যাটার আউট হলে টাই হয় ম্যাচটি। এরপর বাকি গল্প পুরোটাই ডাচদের।   

Comments

The Daily Star  | English
electoral irregularities

EC allows 29 more local observers to monitor polls

The Election Commission today allowed 29 more local observers to monitor the upcoming national election

56m ago