স্টোকসের লড়াই থামিয়ে জিতল অস্ট্রেলিয়া

এক প্রান্তে দারুণ লড়াই করেও ইংলিশদের জেতাতে পারলেন না অধিনায়ক বেন স্টোকস।

উদ্ভট এক রানআউট হয়ে জনি বেয়ারস্টো যখন সাজঘরে ফিরছিলেন তখন মনে হয়েছিল বড় হারের সামনেই রয়েছে ইংল্যান্ড। কারণ ততোক্ষণে লেজ বেড়িয়ে গিয়েছে দলটির। কিন্তু লেজের ব্যাটার স্টুয়ার্ট ব্রডকে নিয়েই দুর্দান্ত এক ইনিংসে লড়াই জমিয়ে দেন অধিনায়ক বেন স্টোকস। জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি করেছিলেন। তবে তার দুর্দান্ত ইনিংসও যথেষ্ট হয়নি। সতীর্থদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত হারতেই হয়েছে তাদের।

রোববার লর্ডসে টেস্টের পঞ্চম দিনে এসে ইংল্যান্ডকে ৪৩ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তাতে পাঁচ ম্যাচের অ্যাশেজ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল তারা। ৩৭১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এদিন ৩২৭ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশরা। প্রথম ইনিংসে দলটি করেছিল ৩২৫ রান। অস্ট্রেলিয়া তাদের দুই ইনিংসে করে ৪১৬ ও ২৭৯ রান।

আগের দিনের ৪ উইকেটে ১১৪ রান নিয়ে এদিন সকালে ব্যাটিংয়ে নামেন ইংলিশ আশা বাঁচিয়ে রাখা দুই ব্যাটার বেন ডাকেট ও স্টোকস। শুরুটা মন্দ ছিল না তাদের। প্রথম পানি পানের বিরতি পর্যন্ত সাবলীলভাবেই কাটিয়ে দেন এ দুই ব্যাটার। কিন্তু ফিরে এসেই বিপত্তি। জশ হ্যাজেলউডের শর্ট বলে পুল করতে গেলে উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারির তালুবন্দি হন ডাকেট। লাফিয়ে দারুণ ক্যাচ লুফে নেন ক্যারি।

ডাকেটের বিদায়ের পর প্রতিষ্ঠিত ব্যাটার বলতে ছিলেন বেয়ারস্টো। কিন্তু তিনি আউট হয়েছে কিছুটা দৃষ্টিকটু ভাবেই। ক্যামেরুন গ্রিনের বাউন্সার নিচু হয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। পেছনের দিকে না তাকিয়ে বল ডেড হয়ে গিয়েছে বলে ভেবে নেন তিনি। ওভারের শেষ বল হওয়ায় স্টোকসের সাথে প্রান্ত বদল করতে যান তিনি। অন্যদিকে বল ধরেই স্টাম্পের দিকে বল ছুঁড়ে দিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক ক্যারি। বেয়ারস্টো বের হতেই বল আঘাত হানে স্টাম্পে।

স্টোকস তখন ৬২ রানে ব্যাট করছিলেন। বল খেলেছিলেন ১২৬টি। বেয়ারস্টোর বিদায়ের পর পরিকল্পনায় বদল আনেন। হঠাৎ করেই মারমুখী ভঙ্গিতে অবতীর্ণ হন। প্রায় প্রতি ওভারেই চার ছক্কা হাঁকিয়ে রানের গতি বাড়াতে থাকেন দ্রুত। গ্রিনের করা ৫৬তম ওভারে তো তিনটি ছক্কা ও একটি চারে নেন ২৪ রান। টেস্ট ইতিহাসে ইংলিশরা এক ওভারে এরচেয়ে বেশি রান নিতে পেরেছে একবারই। গত ডিসেম্বরে রাওয়ালপিণ্ডিতে পাকিস্তানের জাহিদ মাহমুদের এক ওভারে ২৭ রান নিয়েছিলেন হ্যারি ব্রুক।

ব্রডের সঙ্গে ১২২ বলে ১০৮ রানের জুটি গড়েন স্টোকস। যেখানে ব্রডের অবদান ৩২ বলে ১১ রান। তখন জয়ের স্বপ্নই দেখছিল ইংলিশরা। তবে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এ জুটিও ভাঙেন হ্যাজেলউড। তাও আবার ফেরান দানবীয় রূপে অবতীর্ণ হওয়া স্টোকস। তার বলে লেগে ঘোরাতে চেয়েছিলেন ইংলিশ অধিনায়ক। কিন্তু ব্যাটের কানায় লেগে টপএজ হয়ে চলে যায় ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। উইকেটের পেছন থেকে দৌড়ে সে ক্যাচ সহজেই তালুবন্দি করেন ক্যারি। তার বিদায়ের পর লড়াইটা আর জমাতে পারেনি ইংলিশরা। জশ টংয়ের ইনিংস কেবল হারের ব্যবধানই কমেছে।

২১৪ বলে ১৫৫ রানের ইনিংস খেলেন স্টোকস। নিজের ইনিংসটি সাজান সমান ৯টি করে চার ও ছক্কায়। ডাকেটের ব্যাট থেকে আসে ৮৩ রান। ১২২ বলে ৯টি চারের সাহায্যে এ রান করেন এ ওপেনার। এছাড়া টং খেলেন ১৯ রানের ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স ও হ্যাজেলউড।

Comments

The Daily Star  | English

Corruption, zero-sum politics and democratic decline

Governments that score low in corruption indexes are more prone to use force and violence to control and suppress dissensions and protests.

3h ago