শেষ ওভারের নাটকীয়তার পর জিতল বাংলাদেশ

শেষ পাঁচ বলে যখন জয়ের জন্য ২ রান প্রয়োজন বাংলাদেশের, তখন হ্যাটট্রিক করে ম্যাচ জমিয়ে দেন আফগান পেসার করিম জানাত।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৬ রানের। প্রথম বলেই দারুণ এক শটে বাউন্ডারি এনে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তখন মনে হয়েছিল সহজ জয়ের পথেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু নাটকের তখনও বাকি। টানা তিন বলে তিনটি উইকেট তুলে হ্যাটট্রিক তুলে নিলেন করিম জানাত। তখন প্রয়োজন দুই বলে দুই। শঙ্কা তখন আরও একটি হারের। কিন্তু পঞ্চম বলে বাউন্ডারি তুলে নেন শরিফুল ইসলাম। বাংলাদেশ পায় নাটকীয় এক জয়। 

শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আফগানিস্তানকে ২ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান তোলে আফগানরা। জবাবে এক বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা।

শরিফুলের হাত ধরে জয় এলেও জয়ের মূল নায়ক এদিন তাওহিদ হৃদয়। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন শামিম হোসেন পাটোয়ারি। পঞ্চম উইকেটে ৪৩ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। এরপর শামিম আউট হলেও তাওহিদ খেলেছেন শেষ পর্যন্ত। যদিও শেষ ওভারে নন স্ট্রাইক প্রান্তে ছিলেন। ক্ষণিকের জন্য মনে হয়েছিল হয়তো অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে নাটকীয় একটি হার দেখতে হতে পারে তাকে। তবে শেষ পর্যন্ত স্বস্তির জয় মিলেছে টাইগারদের।

শরিফুলের হাত ধরে জয় এলেও এদিন বাংলাদেশের জয়ের নায়ক তাওহিদ হৃদয়। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন শামিম হোসেন পাটোয়ারি। পঞ্চম উইকেটে ৪৩ বলে ৭৩ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। এরপর শামিম আউট হলেও তাওহিদ খেলেছেন শেষ পর্যন্ত। যদিও শেষ ওভারে নন স্ট্রাইক প্রান্তে ছিলেন। ক্ষণিকের জন্য মনে হয়েছিল হয়তো অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে নাটকীয় একটি হার দেখতে হতে পারে তাকে।

তবে সাকিব আল হাসান যখন আউট হন তখনই মনে হয়েছিল ম্যাচটা বুঝি ফসকেই গেল বাংলাদেশের হাত থেকে। তখনই দায়িত্ব কাঁধে নেন দুই তরুণ তুর্কি হৃদয় ও শামিম। তাদের জুটিতেই জয়ের ভিত মিলে যায় বাংলাদেশ। আর তাদের গড়া ভিত এতোই মজবুত ছিল যে শেষ ওভারে হ্যাটট্রিক তুলেও তা ভাঙতে পারেননি করিম। শেষ পর্যন্ত স্বস্তির জয় মিলেছে টাইগারদের।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ভাঙে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। রনি তালুকদারকে বোল্ড করে দেন ফজলহক ফারুকি। তার লেংথ বল সোজা ব্যাটে খেলতে গেলেও ব্যাট নামাতে কিছুটা দেরি হয় তার। এরপর আরেক ওপেনার লিটন দাসের সঙ্গে ব্যাটিংয়ে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত। খেলছিলেন ভালোই। কিন্তু আউট হয়েছেন অদ্ভুতভাবে। মুজিব উর রহমানের বলে পিছনের দিকে সরে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বল তার কনুইয়ের কিছুটা উপরে লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে। ফলে কিছুটা চাপে পড়ে যায় টাইগাররা।

বাংলাদেশের চাপ আরও বাড়িয়ে ব্যক্তিগত ১৮ রানে ফিরে যান লিটন দাস। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে টপএজ হয়ে ক্যাচ তুলে দেন রশিদ খানের হাতে। ফলে কিছুটা বিপদেই পড়ে যায় টাইগাররা। সেখান থেকে তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে দলকে উদ্ধারের চেষ্টা চালান অধিনায়ক সাকিব। বাউন্ডারি মেরে সচল রানের গতিও সচল রাখার চেষ্টা করেন তিনি। তবে চতুর্থ উইকেটে ২৫ রান যোগ করার পর ভাঙে এ জুটি। ফরিদ আহমেদের বলে কভার দিয়ে বাউন্ডারি আদায় করতে চেয়েছিলেন সাকিব। তবে ব্যাটে বলে ঠিকঠাক সংযোগ না হলে চলে যায় ডিপ পয়েন্টে থাকা করিম জানাতের হাতে।

এরপর শামিম পাটোয়ারিকে নিয়ে দলের হাল ধরেন হৃদয়। ইনিংস মেরামতের পাশাপাশি রানের চাকা সচল রাখার দায়িত্বটাও তারা পালন করেন দারুণভাবে। ওমরজাইয়ের করা ১৩তম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি নিয়ে ২১ রান আদায় করে নেন এ দুই ব্যাটার। তখন থেকেই ম্যাচ হালতে শুরু করে বাংলাদেশের দিকে। 

দলীয় ১৩৭ রানে আউট হন শামিম। রশিদ খানের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে টপঅজ হয়ে বিদায় নেন তিনি। এরপর মাঠে নেমে ৬ বলে ৮ রান করেন মিরাজ। শেষ ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারিটি আসে তার ব্যাট থেকে। কিন্তু পরের বলে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন নবির হাতে। এরপর পরের দুই বলে আউট তাসকিন ও নাসুম আহমেদও। তখন জটিল হয়ে উঠেছিল সমীকরণ। তবে চার মেরে সব জটিলতা শেষ করেন শরিফুল।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন হৃদয়। ৩২ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ৩৩ রান আসে শামিমের ব্যাট থেকে। ২৫ বলে ৪টি চারের সাহায্যে এ রান করেন তিনি। এছাড়া সাকিব ১৯ রান করেন। আফগানদের পক্ষে ১৫ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান করিম।

এর আগে এদিন আফগানদের ব্যাটিংয়ের মূল স্তম্ভই ছিলেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মাঠে নামা এ ব্যাটার শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে দলকে এনে দিয়েছেন লড়াকু পুঁজি। ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে ৪০ বলে খেলেন হার না মানা ৫৪ রানের ইনিংস। পঞ্চম উইকেটে নজিবউল্লাহ জাদরানের সঙ্গে ৩৫ রানের জুটির পর ষষ্ঠ উইকেটে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের সঙ্গে মাত্র ৩১ বলে গড়েন ৫৬ রানের জুটি। তাতেই লড়াইয়ের পুঁজি পায় তারা।

অথচ পাওয়ার প্লের মধ্যেই তিনটি উইকেট তুলে শুরুটা দারুণ করেছিল বাংলাদেশ। হজরতউল্লাহ জাজাই, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহীম জাদরান ও করিম জানাতদের ফিরিয়েছেন তেমন কোনো ক্ষতি করার আগেই। গুরবাজ অবশ্য মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠছিলেন। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ রান করেছিলেন। আরও একটি ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে তাসকিন আহমেদের বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে।

৫২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর নজিবউল্লাহর সঙ্গে ইনিংসের হাল ধরেন নবি। তখন কিছুটা দেখেই খেলতে থাকেন তারা। এ জুটি ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগে নজিবউল্লাহকে ফেরান মিরাজ। এই বাঁহাতি ব্যাটারের ব্যাটে লেগে প্যাড ছুঁয়ে আসা বল অসাধারণ রিফ্লেক্সে দ্বিতীয় দফায় গ্লাভসে জমান লিটন। এরপর উইকেটে নেমে শুরু থেকেই হাত খুলে খেলতে থাকেন ওমরজাই। তার সঙ্গে আগ্রাসী হন নবিও। ফলে দ্রুত বাড়তে থাকে তাদের পুঁজি। শেষ ২৪ বলে ৫৩ রান করে দলটি।

সাকিবের করা ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে টানা দুটি ছক্কা মারেন ওমরজাই। অবশ্য সে ওভারেই তাকে ফিরিয়েছেন সাকিব। দারুণ ক্যাচ লুফে নিয়েছেন তাসকিন। ১৮ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলেন ওমরজাই। মারেন ৪টি ছক্কা। বাংলাদেশের পক্ষে ২৭ রানের খরচায় ২টি উইকেট নেন সাকিব।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago