নাটকীয় ম্যাচের শেষের গল্প শোনালেন শরিফুল

'এক ওভারে ৬ রান লাগে। মিরাজ ভাই যখন চার মারে তখন আমি প্রায় নিশ্চিত ছিলাম যে আমরা জিতে যাব, আমি মোস্তাফিজ ভাই, নাসুম ভাই রিল্যাক্স। একটা প্যাডও খুলে ফেলছিলাম। যখন মিরাজ ভাই আউট হলো তখন আবার প্যাড পরতে লাগলাম।'

শরিফুল ইসলাম যখন ব্যাটিংয়ে নামেন তখন হারের শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ। দুই বলে প্রয়োজন ছিল দুই রান। এমন অবস্থা থেকে অনেক ম্যাচই হেরেছে টাইগাররা। কিন্তু মনোমুগ্ধকর এক শটে পাশা উল্টে দেন শরিফুল। এরপর বুনো উল্লাস। অথচ এই ম্যাচে তাকে মাঠে নামতে হবে না ভেবে প্যাডও খুলে ফেলেছিলেন এই পেসার।

শুক্রবার আফগান বধের মূল নায়ক তাওহিদ হৃদয়। শামিম হোসেন পাটোয়ারিকে নিয়ে দুর্দান্ত এক জুটিতে বদলে দেন সব। তাদের কল্যাণে ম্যাচে টিকে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু এতো কিছুর পরও ম্যাচটা ফসকেই গিয়েছিল প্রায়। কিন্তু একটু উনিশ বিশ হলেই হয়তো আরও একটি হৃদয় ভাঙার গল্প লিখতে হতো।

শেষ ওভারে যখন ৬ রানের প্রয়োজন তখন করিম জানাতের প্রথম বলেই বাউন্ডারি আদায় করে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর জানাতের পাল্টা আঘাত। মিরাজকে তুলে নেওয়ার পরের দুই বলে তুলে নেন তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদকেও। অবিশ্বাস্য এক হারের শঙ্কায় থাকা দলের ত্রাতা তখন শরিফুল।

নাটকীয়তায় ভরা সেই ম্যাচ যেন এখন চোখে ভাসে এই পেসারের। শনিবার সন্ধ্যায় এক ভিডিও বার্তায় রোমাঞ্চকর সেই সময়গুলোর কথাই বললেন, 'এক ওভারে ৬ রান লাগে। মিরাজ ভাই যখন চার মারে তখন আমি প্রায় নিশ্চিত ছিলাম যে আমরা জিতে যাব, আমি মোস্তাফিজ ভাই, নাসুম ভাই রিল্যাক্স। একটা প্যাডও খুলে ফেলছিলাম। যখন মিরাজ ভাই আউট হলো তখন আবার প্যাড পরতে লাগলাম।'

'তাসকিন ভাই আউট হওয়ার পর আস্তে আস্তে নিচে গেলাম। নাসুম ভাই নামল উনি আউট হয়ে গেল। আমি যাচ্ছিলাম, কোচ আমাকে বলল, তুমি পারবা। শুধু ব্যাটে বলে সংযোগ করবা সহজ হয়ে যাবে। যখন আমি মাঠে নামছি, হৃদয়ও বলছিল এটা কোনো বিষয় না, কোনো চাপ না। দুই বলে দুই রান হবে, না লাগলেও তুমি দৌড় দেবা। বিশ্বাস রাখো হবে। পরে আল্লাহর রহমতে হয়ে গেছে।'

তবে পরিস্থিতি যতো কঠিনই ছিল না কেন নিজেদের উপর আস্থা হারাননি শরিফুল। নন-স্ট্রাইক প্রান্তে সেট ব্যাটার হৃদয় ছিলেন বলে নির্ভার ছিলেন তিনি, 'হৃদয় থিতু ব্যাটার ছিল। তারপরও ওর সঙ্গে অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছিলাম আন্ডার-১৯ বিশ্বকাপসহ অনেকে ম্যাচ খেলছি। ওর ওপর একটা বিশ্বাস ছিল আমি যদি নাও লাগাতে পারে ও যদি স্ট্রাইক পাইতো শেষ করতো। ওর উপর বিশ্বাস ছিল আর কি।'

শনিবার দলের অনুশীলন না থাকায় আরও কয়েকজনকে সিলেটের রাতারগুলে ঘুরতে গিয়েছিলেন শরিফুল। সামাজিকমাধ্যমে তার একটি ছবিও পোস্ট করেন এই বাঁহাতি পেসার। আর ক্যাপশনে লিখেছেন 'প্রশান্তি'। দলকে এমন জয় এনে দেওয়ার পর প্রশান্তিতে তো থাকবেনই শরিফুল।  

 

Comments

The Daily Star  | English

Mob justice is just murder

Sadly, when one lynching can be said to be more barbaric than another, it can only indicate the level of depravity of some our university students

1h ago