অবিশ্বাস্য নাটকীয়তায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচ টাই
১৯ বলে দরকার ছিল স্রেফ ১০ রান, হাতে ৪ উইকেট। ম্যাচ তখন পুরোপুরি হেলে ভারতের দিকে। পরের কয়েক মিনিটে বদলে গেল দৃশ্যপট। ১৫ বলের মধ্যে ভারতের ৪ উইকেট ফেলে দিয়ে ম্যাচ টাই করল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজও শেষ হলো ১-১ সমতায়।
শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশের মেয়েদের করা ২২৫ রানের জবাবে ঠিক ২২৫ রানই করতে পেরেছে ভারত। এর আগে দুদলই একটি করে জেতায় সিরিজও হলো ড্র।
ম্যাচ জিততে ভারতের শেষ ওভারে দরকার ছিল ৩ রান, হাতে ছিল ১ উইকেট। তরুণ পেসার মারুফা আক্তারের প্রথম দুই বল থেকে আসে ২ রান। এরপর মেঘনা সিং অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে পরাস্ত হন। উইকেটের পেছনে ক্যাচ লুফে নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি। জোরালো আবেদনে সাড়াও দেন আম্পায়ার তানভির আহমেদ। ভারত আপত্তি করলেও উল্লাসে মেতে ওঠে স্বাগতিক দল।
২২৫ রান তাড়ায় শুরুতে উইকেট হারালেও স্মৃতি মান্ধানা আর হারলিন দেউলের ব্যাটে সহজ জয়ের দিকেই ছুটছিল ভারত। প্রায় হাতছাড়া হয়ে পড়া ম্যাচে দ্রুত উইকেট তুলে উত্তেজনা জমাল বাংলাদেশ। এতে বিশেষ ভূমিকা রাখলেন নাহিদা আক্তার। গুরুত্বপূর্ণ ফেইজে তিন উইকেট তুলে নেন তিনি।
এক পর্যায়ে ৪ উইকেটে ১৯১ ছিল ভারতের স্কোর। সেখান থেকে আর ৩৪ রান যোগ করতে বাকি ৬ উইকেট হারায় সফরকারীরা। এরমধ্যে দুটি ছিল রান আউট।
সকালে টস জিতে ফারজানা হক পিংকির রেকর্ডময় সেঞ্চুরিতে আগে ব্যাট করে ২২৫ রান করে বাংলাদেশ। চ্যালেঞ্জিং পুঁজি নিয়ে মন্থর উইকেটে বোলারদের জ্বলে উঠা দরকার ছিল। সেটা শুরুতে হচ্ছিলও। ২২৬ রান তাড়ায় নেমে দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট নেওয়ার সুযোগ হারান জ্যোতি। মারুফার বলে স্মৃতির সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন তিনি।
অবশ্য ওই ওভারেই আসে সাফল্য। মারুফার বলে সহজ ক্যাচ তুলে দেন শেফালি বর্মা। বোলার মারুফা সহজ ক্যাচ প্রথম দফায় হাতে জমাতে না পারলেও লাফিয়ে দ্বিতীয় চেষ্টায় মুঠোবন্দি করেন।
পঞ্চম ওভারে স্বস্তিকা ভাটিয়াকে এলবিডব্লিউ করে দেন সুলতানা খাতুন। এরপরই দারুণ জুটি পান স্মৃতি আর হারলিন। সহজেই রান বাড়াতে থাকেন তারা। তৃতীয় উইকেটে ১০৭ আনেন তারা ১৪২ বল খেলে। লেগ স্পিনার ফাহিমা খাতুনের বলে ক্যাচ দিয়ে স্মৃতির বিদায়ে ভাঙে জুটি। ৮৫ বলে ৫৯ করেন তিনি।
ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউর এসে হারলিনকে সঙ্গ দিয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। তবে থিতু হওয়ার পরই তাকে কাবু করেন নাহিদা আক্তার। জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে হারমানপ্রিত ক্ষিপ্ত হয়ে ব্যাট দিয়ে স্টাম্প ভেঙে ফেলেন, আম্পায়ারকেও ব্যাটে লাগার কথা ঈশারা করেবের হয়ে যান। যদিও রিপ্লেতে পরে দেখা যায় বল তার ব্যাটে লাগলেও আউট, কারণ বল স্লিপে ক্যাচ নিয়ে নেন ফাহিমা।
বৃষ্টিতে এরপর কিছুটা সময় খেলা বন্ধ থাকে। ম্যাচ শুরুর পর হারলিনের দক্ষতায় ছুটে যাওয়া ভারত ধাক্কা খায় ৪২তম ওভারে। সফট হ্যান্ডে বল ঠেলে জায়গা বদল করতে গিয়ে কাটা পড়েন হারলিন। ১০৮ বলে ৯ চারে ৭৭ রান করেন তিনি। এরপর দীপ্তি শর্মাকেও রান আউটের ফাঁদে ফেলে ম্যাচ জমিয়ে তুলে বাংলাদেশ। শেষ চার ওভারের অতি নাটকীয়তায় ম্যাচ থামে সমতায়।
(বিস্তারিত আসছে)
Comments