ইয়ানসেনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সিরিজ প্রোটিয়াদের

টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ওয়ানডে সিরিজেও এমন শঙ্কা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। প্রথম দুই ম্যাচেই হেরে যায় তারা। এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। টানা তিনটি ম্যাচ জিতে উল্টো সিরিজ জিতে নিয়েছে প্রোটিয়ারাই।

রোববার জোহানার্সবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ১২২ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১৫ রান করে তারা। জবাবে ৩৪.১ ওভারে ১৯৩ রানে গুটিয়ে যায় অজিরা। ফলে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জিতে নীল স্বাগতিকরাই।

এদিন মূলত অলরাউন্ডার মার্কো ইয়ানসেনের তোপে বিধ্বস্ত হয় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন আপ। তাদের প্রথম পাঁচটি উইকেটই তুলে নেন তিনি। এর আগে ব্যাট হাতেও জ্বলে ওঠেন তিনি। খেলেন ৪৭ রানের দারুণ এক ক্যামিও ইনিংস। তাতেই বড় পুঁজি পায় প্রোটিয়ারা।

লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য বেশ আগ্রাসী ঢঙেই শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। প্রথম তিন ওভারেই রান আসে ৩৪। কিন্তু পরের ওভারে ইয়ানসেন বোলিংয়ে আসতেই ভাঙে তাদের ওপেনিং জুটি। ডেভিড ওয়ার্নারকে এইডেন মার্করামের ক্যাচে পরিণত করার পর একই ওভারে জশ ইংলিশকেও তুলে নেন ইয়ানসেন। তাতেই চাপে পড়ে যায় অজিরা।

এরপর অবশ্য মার্নাস লাবুশেনের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েছিলেন অধিনায়ক মিচেল মার্শ। ৯০ রানের জুটি গড়েন তারা। কিন্তু দ্বিতীয় স্পেলে বল করতে এসে মার্শকে ফিরিয়ে আবারও অজি শিবিরে ধাক্কা দেন ইয়ানসেন। যদিও সে ওভারে দুটি ছক্কা হাঁকান মার্শ। কিন্তু এবার ইয়ানসেনের বলে আপারকাট করতে গেলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে লুঙ্গি এনগিডির ক্যাচে পরিণত হন অজি অধিনায়ক।

পরের ওভারে ফিরে লাবুশেনকেও ফেরান এই পেসার। তাতে ফের চাপে পরে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেই চাপ থেকে আর উতরে উঠতে পারেনি দলটি। কারণ শেষ দিকে রুদ্ররূপ ধারণ করেন স্পিনার কেশভ মহারাজও। লেজ ছাঁটাইয়ের কাজ দারুণভাবে করেন তিনি। ফলে হার মেনেই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭১ রানের ইনিংস খেলেন অজি অধিনায়ক মার্শ। ৬৬ বলে সমান ৬টি করে চার ও ছক্কায় এই ইনিংস খেলেন তিনি। লাবুশেন ৬৩ বলে ৪৪ রান করেন ৩টি বাউন্ডারিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ৩৯ রানের খরচায় ৫টি উইকেট নেন ইয়ানসেন। ৩৩ রানের বিনিময়ে মহারাজ পান ৪টি উইকেট।

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। দলীয় ৩ রানেই রানআউট হয়ে সাজঘরে ফিরেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। এরপর আরও ৩৪ রান যোগ করে জশ ইংলিশের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আরেক ওপেনার কুইন্টন ডি ককও। তাতে কিছুটা চাপে পড়ে প্রোটিয়ারা। তবে তৃতীয় উইকেটে রাসি ফন ডার ডুসেনকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালান এইডেন মার্করাম। ৪৩ রানের জুটি গড়েন তারা।

ডাসেনকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন শন অ্যাবট। এরপর দ্রুত হেনরিক ক্লাসেনকেও তুলে নেয়। অ্যাডাম জাম্পার বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। আগের ম্যাচেই এই ব্যাটার খেলেছিলেন ১৭৪ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। এরপর ডেভিড মিলারের সঙ্গে দলের হাল ধরেন মার্করাম। স্কোরবোর্ডে ১০৯ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। তাতেই বড় স্কোরের ভিত পেয়ে যায় দলটি। এরপর টিম ডেভিডের শিকার হয়ে মার্করাম ফিরে গেলেও সেই ভিতে ঠিকই ইমারত গড়েন বাকি ব্যাটাররা। শেষ দিকে ঝড়ো ইনিংস খেলেন ইয়ানসেন ও আন্দিল ফেলুকায়ায়ো।

দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯৩ রানের ইনিংস খেলেন মার্করাম। ৮৭ বলে ৯টি চার ও ৩টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান এই ব্যাটার। ৬৫ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬৩ রান করেন মিলার। ১৯ বলে ৩৯ রানের ক্যামিও খেলে অপরাজিত থাকেন ফেলুকায়ায়ো। ২টি চার ও ৪টি ছক্কায় খেলেন এই ইনিংস। ইয়ানসেনও কম যাননি। ২৩ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৪৭ রান করেন ক্যামেরুন গ্রিনের শিকার হন এই অলরাউন্ডার।

শেষ দিকে জাম্পার ঘূর্ণিতে পূর্ণ ৫০ ওভার খেলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। ৭১ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান এই লেগস্পিনার। ৫৪ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট নেন অ্যাবট।

Comments

The Daily Star  | English

Sheikh clan’s lust for duty-free cars

With an almost decimated opposition and farcical elections, a party nomination from the ruling Awami League was as good as a seat in the parliament.

7h ago