বিপদে বাংলাদেশ
এক প্রান্তে ব্যাটারদের আসা যাওয়া থাকলেও অপর প্রান্তটা আগলে রেখেছিলেন তামিম ইকবাল। দারুণ সব শট খেলে বাংলাদেশকে লক্ষ্যের পথে রেখেছিলেন তিনিই। নিজেও এগিয়ে যাচ্ছিলেন হাফসেঞ্চুরির দিকে। তবে ফিরে গেছেন এই ওপেনারও। তাতে বিপদেই পড়েছে টাইগাররা।
শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১০২ রান করেছে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহ ২৩ ও শেখ মেহেদী হাসান ২ রানে ব্যাটিং করছেন। এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৫৫ রানের লক্ষ্য দেয় নিউজিল্যান্ড।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ট্রেন্ট বোল্টের করা ইনিংসের চতুর্থ বলেই ফিরে গিয়েছিলেন লিটন দাস। তার বিরুদ্ধে এলবিডাব্লিউর আবেদনে সাড়া দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান টাইগার অধিনায়ক। রিপ্লেতে দেখা যায় বল কিছুটা উপরে থাকায় মিস করে স্টাম্প। তবে খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ৬ রানে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক। কাইল জেমিসনের বলে কাট করতে গেলে টপএজ হয়ে চলে যায় থার্ডম্যানে রাচিন রবীন্দ্রর হাতে।
এরপর তানজিদকে নিয়ে দলের হাল ধরেছেন তামিম। এদিন শুরুটা দারুণ করেছিলেন তানজিদ। বোল্টের বিরুদ্ধে নিজের প্রথম বলেই ড্রাইভ করে মেরেছেন দারুণ এক বাউন্ডারি। এরপর আরও দুটি বাউন্ডারি মারেন। তবে আরও একটি মারতে গিয়ে লংঅনে লোকি ফার্গুসনের হাতে ক্যাচ তুলে ফিরে যান তিনি। ৮ বলে ১৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। একই ওভারে সৌম্য সরকারকেও তুলে নেন সোধি। অনেকটা আনাড়ির মতো ব্যাট চালিয়ে বোলারের হাতে ক্যাচ তুলে খালি হাতে বিদায় নেন এই ব্যাটার।
খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তাওহিদ হৃদয়ও। সোধির বলে কভারের দিকে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হয়ে যান এই ব্যাটার। ৭ বলে ৪ রান করেন তিনি। এরপর অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে দলের হাল ধরেছিলেন তামিম। কিন্তু ব্যক্তিগত ৪৪ রানে সোধিকে সুইপ করতে গেলে উইকেটরক্ষকের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিল নিউজিল্যান্ড
মোস্তাফিজুর রহমান ও খালেদ আহমেদের তোপে শুরুতেই নিউজিল্যান্ডকে চাপে ফেলে দিয়েছিল বাংলাদেশ। হেনরি নিকোলস আর টম ব্লান্ডেলের জুটিতে সেই চাপ সামলে ঘুরে দাঁড়ায় কিউইরা। পরে হাসান মাহমুদ-নাসুম আহমেদ মিলে আবার দাপট ফেরান বাংলাদেশের। যদিও টেল এন্ডারদের দৃঢ়তায় মন্থর উইকেটের বিচারে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেয়েছে লকি ফার্গুসনের দল।
১০ ওভার অল করে ৫৩ রানে ২ উইকেট নেন মোস্তাফিজ। হাসান ১০ ওভারে ৪৬ রানে পান ১ উইকেট। অভিষিক্ত খালেদ ৬০ রানে পান ৩ উইকেট। ভালো বল করেছেন অফ স্পিনার শেখ মেহেদী। ১০ ওভারের কোটা পূরণ করে ৪৫ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন তিনি।
ম্যাচের তৃতীয় ওভারে বাড়তি লাফানো বলে উইল ইয়ং ফেরান মোস্তাফিজ। ইয়ংয়ের ব্যাটের উপরের দিকে লেগে ক্যাচ যায় কিপার লিটন দাসের গ্লাভসে। ৮ বলে ০ করে ফেরেন তিনি।
১৫ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ফিন অ্যালেন দলের হাল ধরতে পারেননি। সপ্তম ওভারে মোস্তাফিজকে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন স্লিপে। লাফিয়ে উঠে দারুণ ক্যাচ হাতে জমান সৌম্য সরকার। ২৬ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় কিউইরা।
তিনে নেমে চাঁদ বোওজ প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও বেশিক্ষণ টেকেননি। ৮ম ওভারে ওয়ানডেতে প্রথম বল হাতে নিয়ে তাকে ফেরান খালেদ। খালেদের বলে ফ্লিক করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে জমা পড়েন তিনি। ৩৬ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড।
এরপরই জমে উঠে ব্লান্ডেল-নিকোলসের জুটি। ২৭তম ওভারে এসে এই জুটি ভাঙেন খালেদ। দারুণ খেলতে থাকা নিকোলস খালেদের বলে কিপারের হাতে ক্যাচ দেন। ৬১ বলে ৪৯ রানে থামেন তিনি। খালেদ পান দ্বিতীয় উইকেট।
বাঁহাতি নিকোলসকে অ্যারাউন্ড দ্য উইকেটে বল করতে এসে সাফল্য পান ডানহাতি পেসার। ভেতরে ঢোকা বল কাট করতে গিয়ে পরাস্ত হন। তাতে ১৩১ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। এর আগে লম্বা সময় বাংলাদেশকে হতাশ করছিলেন নিকোলস।
রাচিন রবীন্দ্রকে থিতু হতে দেননি শেখ মেহেদী হাসান। মেহেদীর বলে পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন এই ব্যাটার। হাসানের বলে রানের খোঁজে থাকা ব্লান্ডেল হন পরিষ্কার বোল্ড। নাসুম আহমেদ তুলে নেন কুল ম্যাকনকিকেও। আচমকা পথ হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড।
৮ম উইকেটে কাইল জেমিসনককে নিয়ে ৩২ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন ইশ সোধি। টেল ছাঁটতে গিয়ে হাসান রান আউট করেন। ক্রিকেটে বহুল আলোচিত 'মানকাড়' আউট হিসেবে আলোচিত তা। তবে সোধিকে আউট না করে লিটন তাকে ফিরিয়ে আনেন। নিশ্চিত আউট থেকে বেঁচে ৩৯ বলে ৩৫ করে দলকে আড়াইশো পার করান সোধি।
Comments