ওপেনিং নিয়ে দুশ্চিন্তা দূর হওয়ার আভাস
প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কি? কেউ বলতে পারেন ৭ উইকেটের জয় একটা ভালো আত্মবিশ্বাস দেবে। তবে প্রস্তুতি ম্যাচ যে তীব্রতায় খেলা হয় তাতে হার-জিত খুব একটা ম্যাটার করে না। বরং প্রাপ্তিগুলো নির্ভর করে ঘাটতি পূরণের উপর।স
সব দিক বিচার করলে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ গুমোট পরিস্থিতিতে ফুরফুরে হাওয়ার মতোন হয়ে এসেছে দুই ওপেনারের কারণে। ওপেনিং নিয়ে নানান বিতর্ক, সমালোচনা, নানামুখী আলোচনা চলমান। থিতু ওপেনার লিটন দাসের সাম্প্রতিক ছন্দহীনতা আর আনকোরা তানজিদ হাসান তামিমের জুটি নিয়ে অনেকেই ভরসা রাখতে পারছিলেন না।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে লিটন-তানজিদ রান তাড়ায় যেভাবে ব্যাট করলেন তাতে অন্তত তাদের উপর ভরসা রাখাই যায়। ২০ ওভারে আনলেন ১৩১ রানের জুটি। দুজনেই সহজাত স্ট্রোক মেকার, পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগিয়ে দৃষ্টিনন্দন সব শটে রান বের করতে তাদের কোন সমস্যা হয়নি। সবচেয়ে আশা কথা হচ্ছে তাদের দেখে মনে হয়েছে মেদবিহীন, ঝরঝরে। স্লগিং না করেও প্রায় টি-টোয়েন্টি মেজাজে রান বাড়াতে পেরেছেন।
দুজনের স্ট্রাইক রোটেশন, বোঝাপড়াও ছিল নজরে পড়ার মতন। পাওয়ার প্লের পর ফিল্ডিং রেস্ট্রিকশন উঠে গেলে নতুন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে পড়তে দেননি রানের চাকা। গত তিন বছর বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা লিটন সম্প্রতি নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে রান না পাওয়ার পর নিজের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ভেঙে ফেলেন ব্যাট। তার হতাশার ছবি বেরিয়ে আসে তীব্রভাবে।
এবার বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে বড় কিছু করতে হলে অবশ্যই লিটনের অবদান জরুরি। নিজেকে ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে ৫৬ বলে ৬১ রানের ইনিংসটা কিছুটা হলেও বিশ্বাস দেবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে অভিজ্ঞ ওপেনারকে।
তানজিদের আত্মর্জাতিক অভিষেক হয়েছে একদম ঝাঁজালো সময়ে। একদম এশিয়া কাপে নামিয়ে দেওয়া হয় তাকে। প্রথম ম্যাচে ব্যর্থতার পর একাদশে জায়গা হারান। আবার ফেরার পরও তেমন কিছু করতে পারেননি। মাত্রই ৫ ম্যাচ খেলেছেন। তাতেই যেন হয়ে পড়ছিলেন ধৈর্যহারা। তানজিদকে বিশ্বকাপ দলে রাখা নিয়ে সমালোচনায় হয়েছে বিস্তর। আপাতত সেসব আগুনে সামান্য পানি ডালতে পেরেছেন এই তরুণ। লঙ্কনাদের বিপক্ষে যেভাবে ব্যাট করেছেন তাতে ছিল আত্মবিশ্বাস আর স্পার্ক। বড় শট খেলতে পারেন, দারুণ ফিট থাকায় রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে চনমনে। ৮৮ বলে ১০ চার, ২ ছক্কায় ৮২ রানের ইনিংস দিয়ে তিনি জানালেন বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে খেলার জন্য তিনি প্রস্তুত। কে জানে বিশ্বকাপে এই জুটি হয়ত বাংলাদেশকে দিবে সুখের সময়। অন্তত আশা রাখতেই পারেন সমর্থকরা।
Comments