মঈনের ঝড়ে হারল বাংলাদেশ
লক্ষ্যটা খুব বড় দিতে পারেনি বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজ ও তরুণ তানজিদ হাসান তামিমের ব্যাটে মাঝারী পুঁজি দাঁড় করায় টাইগাররা। তবে লক্ষ্য ছোট হলেও আগ্রাসনে কোনো কমতি ছিল না ইংলিশ ব্যাটারদের। বিশেষকরে সাত নম্বরে নামা মঈন আলীর বিধ্বংসী ইনিংসে দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে হারতে হলো বাংলাদেশকে।
সোমবার গুয়াহাটিতে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ও শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে বৃষ্টি বিঘ্নিত এই ম্যাচে ৩৭ ওভারে ৯ উইকেটে ১৮৮ রান করেছে টাইগাররা। ডিএলএস পদ্ধতিতে ইংলিশদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৯৭ রান। ৭৭ বল বাকি থাকতেই সে লক্ষ্যে পৌঁছায় ইংল্যান্ড।
সংস্করণ যেটাই হোক সাম্প্রতিক সময়ে বেশ তেড়েফুঁড়ে খেলে থাকেন ইংলিশ ব্যাটাররা। এদিনের প্রস্তুতি ম্যাচেও তাদের দেখা গেছে একই চিত্রে। তবে তাদের আগ্রাসনের মাঝেও নিয়মিত উইকেট পেয়েছেন টাইগার পেসাররা। বিশেষ করে মোস্তাফিজুর রহমান দারুণ সূচনাই এনে দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। ব্যক্তিগত ৪ রানে ওপেনার ডেভিড মালানকে ফেরান অসাধারণ এক ডেলিভারিতে। আরেক ওপেনার জনি বেয়ারস্টোকে তো বোল্ড করে দেন তিনি। তবে আউট হওয়ার আগে ২১ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন এ ওপেনার।
হ্যারি ব্রুকও অফস্টাম্পের বাইরের বল টেনে বোল্ড হয়েছেন হাসান মাহমুদের বলে। উইকেটে নেমে চার-ছক্কার ফুলঝুরি ছোটানো অধিনায়ক জশ বাটলারকে থামান শরিফুল ইসলাম। ১৫ বলে টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩০ রান করা এ ব্যাটার আরও একটি ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন বাউন্ডারি লাইনে। লিয়াম লিভিংস্টোনকে তুলে নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। অবশ্য লংঅফে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
ফলে ১১৪ রানে ইংলিশদের ৫ উইকেট তুলে নিয়ে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ। কিন্তু টাইগারদের হতাশ করেন মঈন আলী ও জো রুট। রুট এক প্রান্ত আগলে রাখেন। অপর প্রান্তে ঝড়ো ফিফটি তুলে নেন মঈন। যদি শুরুতে কিছুটা ধীর গতিতেই আগান। পরে ধীরে ধীরে খুলতে থাকেন খোলস। ৩৯ বলে করা ৫৬ রানের ইনিংসে মারেন ৬টি ছক্কা। ষষ্ঠ উইকেটে রুটের সঙ্গে ৭৯ রান যোগ করে নাসুম আহমেদের বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে আউট হন মঈন।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ফর্মে ইঙ্গিত দিলেও আবারও ব্যর্থ হয়েছেন ওপেনার লিটন দাস (৫)। রিস টপলির কিছুটা এক্সট্রা বাউন্সে খোঁচা দিতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। তিনে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি দারুণ ছন্দে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তও (২)। তাকেও ফেরান টপলি। তার ফুলার লেন্থের বলে আউটসাইড এজ থার্ডম্যানে ধরা পড়েন গাস অ্যাটকিনসনের হাতে।
তবে আরেক প্রান্ত আগলে রাখেন তানজিদ তামিম। তৃতীয় উইকেটে জুটি বাঁধেন মিরাজের সঙ্গে। স্কোরবোর্ডে ৫২ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। তবে দলীয় ৭৮ রানে মার্ক উডের বলে ইনসাইড এজ হলে বোল্ড হয়ে যান তানজিদ। অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হন তিনি। তার ব্যাট থেকে এসেছে ৪৪ বলে ৪৫ রান।
ব্যর্থ হন মুশফিকুর রহিমও। শর্ট লেন্থের বলটি অবশ্য বেশ নিচু হয়। চেষ্টা করেও ব্যাটে খেলতে পারেননি। বোল্ড হয়ে যান ১৫ বলে ৮ রান করে। হতাশ করেন মাহমুদউল্লাহও। উইকেটে থিতু হয়ে ফিরেছেন তিনি। আদিল রশিদকে ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন বাউন্ডারি লাইনে। ২১ বলে ১৮ রান করেন তিনি। এরপর হৃদয়কে নিয়ে দলের হাল ধরতেই কিছুক্ষণ নামে বৃষ্টি। ফলে খেলা বন্ধ থাকে তিন ঘণ্টারও বেশি। ফলে কমে আসে ম্যাচের পরিধি। ৩৭ ওভারে নির্ধারিত হয় ম্যাচটি।
দ্বিতীয় দফায় মাঠে নেমে ব্যাটিংয়ের সুযোগ ছিল মাত্র সাত ওভার। হাতে ছিল পাঁচ উইকেট। কিন্তু দ্রুত রান তোলার তাগিদে ১৩ বলের ব্যবধানে হারায় ৪ উইকেট। এরপর তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের ব্যাটে অলআউট হয়নি বাংলাদেশ। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রাখেন মিরাজ। ডেভিড উইলির পরের ওভারে হাঁকাতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হওয়ার করেন ৭৪ রান। ৮৯ বলে ১০টি চারের সাহায্যে এই রান করেন তিনি।
Comments