ক্রিকেট

ভয়ঙ্কর ইংল্যান্ডের 'ধাক্কা' আরও বাড়িয়ে দিতে পারবে স্থির বাংলাদেশ?

নিজেদের প্রথম ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ, অন্যদিকে বড় হার দেখেছে ইংলিশরা

ভয়ঙ্কর ইংল্যান্ডের 'ধাক্কা' আরও বাড়িয়ে দিতে পারবে স্থির বাংলাদেশ?

নিজেদের প্রথম ম্যাচে দারুণ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ, অন্যদিকে বড় হার দেখেছে ইংলিশরা
বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড
ছবি: বিসিবি

আফগানিস্তানকে ৯২ বল হাতে রেখে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু। তবে দাপুটে জয়ের পরও অতি উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেনি বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে সে জয়ের পর উল্লেখযোগ্য কোনো উদযাপনও হয়নি। জানা গেছে, অধিনায়ক সাকিবের বার্তা ছিল, মনোযোগে ব্যাঘাত না ঘটিয়ে ম্যাচ ধরে ধরে এগিয়ে যেতে।

বাংলাদশের সামনে পরবর্তী প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, যারা ধর্মশালায় এসেছে ৯ উইকেটে হার সঙ্গী করে। এমন বিধ্বস্ত ইংল্যান্ড কি আরও ভয়ঙ্কর রূপে দেখা যেতে পারে? সেটা সময় বল দিবে, তবে নিশ্চিতভাবে অমন হারের পর ইংলিশরা বাড়তি চাপে থাকবে নিঃসন্দেহে।

বাংলাদেশের বিপক্ষেই ২০১৫ সালে হারের পর তাদের ওয়ানডে ক্রিকেটে যে বিপ্লবের শুরু হয়েছিল, তার সর্বাধিনায়ক ছিলেন ইয়ন মরগান। সাবেক এই অধিনায়ক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর বলেছেন, ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা যথেষ্ট আক্রমণাত্মক ছিলেন না। আর জো রুট বলেছেন, 'সামনে আর চেক ড্রাইভে আউট হতে দেখবেন না, মারলে পুরোদমে।'

ইংলিশ ড্রেসিংরুমে যা আবহ, বাংলাদেশের বিপক্ষে যথেষ্ট আগ্রাসী ইংল্যান্ডেরই দেখা মিলবে। তবে তা মোকাবেলা করতে বলা যায় প্রস্ততই আছে বাংলাদেশ। গেল ম্যাচে সাকিব-মিরাজ মিলে আফগানদের গুড়িয়ে দিয়েছেন। আর বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বস্তির জায়গা তো এখন পেস বোলাররাই। ২০২২ সাল থেকে গড়ের হিসাবে বাংলাদেশের পেস বোলাররা সেরা তিনে অবস্থান করছেন।

তবে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের জন্য ধীরে ধীরে বড়সড় দুশ্চিন্তায় পরিণত হচ্ছেন লিটন দাস, যাকে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ভাবে দল। ফর্মহীনতায় ভোগা লিটন বিশ্বকাপের শুরুও করেছেন মলিনভাবে, ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এবছরে তার ব্যাটিং গড় ২৩.৪০। বাংলাদেশের ব্যাটারদের হাই-পেসে অনভ্যস্ততার দরুন অস্বস্তি আছে যথেষ্ট। মার্ক উড তাই বিশাল হুমকি। আদিল রশিদ যদিও ফর্মে নেই, তবে লেগ স্পিনটাও বাংলাদেশকে দেখেশুনে সামলাতে হবে।

আফগানরা বোলারদের পরীক্ষা নিতে পারেনি ওভাবে, ইংলিশদের বিপক্ষে একই কম্বিনেশনে কি দল নামাবে বাংলাদেশ, সে ভাবনাও থাকবে। পাঁচ জেনুইন বোলারের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পার্ট-টাইম অফ স্পিন, নাকি রিয়াদের জায়গায় বাড়তি স্পিনার হিসেবে শেখ মেহেদী হাসান কিংবা নাসুম আহমেদকে খেলানো। বোলিংয়ে বাড়তি অপশন নাকি ব্যাটিংয়ে গভীরতা ধরে রাখা, বাংলাদেশ যাবে কোন পথে, নির্ভর করবে পিচের উপর।

কিন্তু ধর্মশালার পিচ থেকেও আদতে বেশি আলোচনা হচ্ছে আউটফিল্ড নিয়ে। ধর্মশালার অনিন্দ্যসুন্দর স্টেডিয়াম সবারই চোখ জুড়িয়ে দেয়। কিন্তু সেখানের আউটফিল্ড উল্টো চিন্তারই কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্রিকেটারদের জন্য। আফগানিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচে মুজিব উর রহমানের হাঁটু আটকে গিয়েছিল বাউন্ডারিতে ফিল্ডিংয়ের সময়। ধর্মশালার আউটফিল্ড ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে ক্রিকেটারদের জন্য। এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে তুমুলভাবে। গ্রাউন্ডসম্যানদের কাজ করতেও দেখা গেছে তা নিয়ে অবশ্য।

বাংলাদেশ ম্যাচের পরদিন কোন অনুশীলন করেনি। লম্বা টুর্নামেন্টের বিশ্রামের প্রয়োজন, বেশিরভাগ ক্রিকেটাররা বিশ্রাম নিতেই আগ্রহী ছিলেন। তবে ম্যাচের পরদিন জিমে ঘাম ঝরিয়েছিলেন পাঁচজন ক্রিকেটার- মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয়, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও তানজিম সাকিব। ম্যাচের আগে ব্যাটে-বলের লড়াইয়ের জন্যও অনুশীলনে প্রস্ততি নেবে বাংলাদেশ।

ইংল্যান্ড ধর্মশালায় এসেছে বড়সড় 'ধাক্কা' খেয়ে। এবার বাংলাদেশ কি পারবে তাদের সেই ধাক্কার পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিতে? ইংল্যান্ড যতই বিশ্ব ক্রিকেটে প্রভাব বিস্তার করুক, আগত বিপদ সম্পর্কে ভালোই অবগত আছেন তারা। ২০১৫ বিশ্বকাপ, তার আগে ২০১১ বিশ্বকাপ, বাংলাদেশের কাছে যে হারতে হয়েছিল তাদের। সামর্থ্যের সবটুকু ঢেলে দিতে পারলে লেখা হয়েই যেতে পারে আরেকটি ইংলিশবধের গল্প।

Comments