মুমিনুলের একার লড়াইয়ের দিনে ৩৮ বছর আগের স্মৃতি ফেরালো শ্রীলঙ্কা
চতুর্থ দিনে খেলা শেষ হওয়া নিয়ে সংশয়ে ছিলেন না কেউই। দেখার ছিলো বাকি ৫ উইকেট নিয়ে আর কতটা লম্বা হয় খেলা। মুমিনুল হকের সৌজন্যে এক সেশনের কিছু বেশি লড়াই হলো। অনুমিত বড় এই হারের মাঝেও সান্ত্বনা হতে পারেন মুমিনুল হক। অন্তত কিছুটা লড়াইয়ের ঝাঁজ দেখালেন তিনি। বাংলাদেশকে গুটিয়ে পেসারদের নৈপুণ্যে ১৯৮৬ সালের পর একটা গৌরবময় স্মৃতি ফিরিয়ে আনল তারা।
সোমবার সিলেটে বাংলাদেশের ইনিংস টিকেছে ১৮৬ মিনিট। অলআউট হয়েছে ১৮২ রানে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট হেরেছে ৩২৮ রানের বিশাল ব্যবধানে। এদিন খেলার ফল কি হতে যাচ্ছে জানত সবাই। স্রেফ আনুষ্ঠানিকতার মতই হারের ব্যবধানটা চূড়ান্ত হওয়ার ব্যাপার ছিলো।
দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টায় নাহিদ রানাকে বাউন্সারে কাবু করে বাংলাদেশকে মুড়িয়ে দেন লাহিরু কুমারা। এতেই ১৯৮৬ সালের পর একটি পেসারদের একটি অর্জন ফিরে আসে। কোন টেস্টে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেটের সবগুলোই নেওয়ার ঘটনা শ্রীলঙ্কান পেসাররা করে দেখালেন তৃতীয়বার। শেষবার এটা তারা করেছিল ১৯৮৬ সালে।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ১০ উইকেটের ৪টা নিয়েছিলেন বিশ্ব ফার্নেন্দো। কাসুন রাজিতা, লাহিরু কুমারা নেন ৩টা করে। দ্বিতীয় ইনিংসে রাজিতা শিকার ধরেন ক্যারিয়ার সেরা ৫৬ রানে ৫ উইকেট। এবার বাঁহাতি বিশ্ব পান ৩৬ রানে ৩ উইকেট। বাকি ২ উইকেট নেন লাহিরু কুমারা।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস মুড়ে দিতে অবশ্য খুব বেশি খাটতে হয়নি লঙ্কানদের। আলগা শট, আত্মঘাতি শটে নিজেরাই বিপদ ডেকে এনেছেন। ৫১১ রানের লক্ষ্যে আগের দিন বিকেলে নেমে অদ্ভুতুড়ে ব্যাটিংয়ে ৩৭ রানে পাঁচ উইকেট হারায় স্বাগতিকতা। নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাসরা ফেরেন ব্যাখ্যাতীত শটে।
চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের পাওয়ার ছিলো সামান্য। মুমিনুলের দৃঢ়তা কেউ প্রাপ্তির জায়গায় রেখে সান্ত্বনা খুঁজতে পারেন। ম্যাচের ফলে কোন প্রভাবক না হলেও সাবেক অধিনায়ক নিজের কাজটা তো অন্তত করেছেন। ১৪৮ বল খেলে ৮৭ রানে অপরাজিত থেকে দেখেছেন বাকিদের আসা যাওয়া। তার মতন নিবেদন অন্য আরও অন্তত দুজন দেখাতে পারলে দ্বিতীয় টেস্টের আগে আত্মবিশ্বাস চাঙ্গা করতে পারত দল।
যেকোনো হার হারই। তবে সিলেটে বাংলাদেশ যেভাবে হেরেছে, তাতে উঠবে প্রশ্ন। টেস্ট ক্রিকেটের টেম্পারমেন্ট, লড়াইয়ের মানসিকতা নিয়ে পুরনো সমালোচনা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
Comments