ভারতের ষাটের দশকের সব্যসাচী ক্রিকেটার সৈয়দ আবিদ আলির প্রয়াণ

প্রাক্তন ভারতীয় অলরাউন্ডার সৈয়দ আবিদ আলী বুধবার (১২ মার্চ) ৮৩ বছর বয়সে মারা গেছেন। ষাটের দশকে ভারতের হয়ে ২৯টি টেস্ট খেলা আবিদ ব্যাটিং, বোলিংয়ে সমান মুন্সিয়ানার পাশাপাশি দুর্দান্ত ফিল্ডার হিসেবে পরিচিত ছিলেন। একাধিক টেস্টে তিনি ভারতের হয়ে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে দুই বিভাগেই ওপেন করেছেন।
হায়দ্রাবাদে জন্মগ্রহণকারী এই ক্রিকেটার ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বরে অ্যাডিলেডে ভারতের হয়ে অভিষেক করেন, অভিষেকেই মিডিয়াম পেস বল করে ৫৫ রানে নেন ৫ উইকেট। ওই সফরে ব্যাট হাতে ৭৮ ও ৮১ রানের ইনিংসও খেলেছিলেন আবিদ। টেস্ট ক্রিকেটে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত খেলেছেন আবিদ। যাতে তিনি ৪৭টি উইকেট এবং ১০১৮ রান নিয়ে শেষ করেন।
এই ২৯টি টেস্টের মধ্যে একাধিক টেস্টে ভারতের হয়ে ব্যাটিং এবং বোলিং উভয় ক্ষেত্রেই ওপেন করার গৌরবও ছিল আবিদের। ১৯৬৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি অ্যাওয়ে ম্যাচ, ১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচ এবং ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি এবং এপ্রিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুটি ম্যাচে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে ওপেন করতে দেখা যায় তাকে।
এই কীর্তি ক্রিকেটারের প্রয়ানে শোক প্রকাশ করে কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার বলেছেন, 'খুব দুঃখজনক খবর, তিনি একজন সিংহ হৃদয় ক্রিকেটার ছিলেন যিনি দলের প্রয়োজনে সবকিছু করতেন। একজন অলরাউন্ডার হয়েও যিনি মিডল অর্ডারে ব্যাট করতেন, প্রয়োজনে তিনি ওপেনিংও করতেন। লেগ সাইড কর্ডনে অবিশ্বাস্য কিছু ক্যাচ নিয়ে আমাদের অসাধারণ স্পিন চতুষ্টয়ের (বিষেন সিং বেদী, চন্দ্রশেখর ,এরাপল্লি প্রসন্নর সঙ্গে ভেঙ্কটরাঘবন) ধার আরও বাড়িয়েছিলেন।'
'নতুন বলের বোলার হিসেবে তার একটি অনন্য রেকর্ড রয়েছে, স্মৃতি যদি আমাকে সঠিক বলে, তিনি দুবার টেস্ট ম্যাচের প্রথম বলে উইকেট নিয়েছেন। তিনি বল ঠেকে দিয়েই রান নেওয়া পছন্দ করতেন এবং আমার অভিষেক টেস্ট ম্যাচে যখন তাকে উপরে ব্যাট করতে পাঠানো হয়েছিল, তখন এই কৌশলের ফলে কিছু ওভারথ্রো হয়েছিল যা চাপ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিল। তিনি ছিলেন নিপাট ভদ্রলোক, অধ্যাপকসুলভ কথা বলতেন। তার পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা।'
আবিদ ভারতের হয়ে পাঁচটি ওয়ানডেও খেলেছিলেন, এর মধ্যে তিনটি ছিল প্রথম পুরুষদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে। জীবনের শেষ ৫০ ওভারের ম্যাচে তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৮ বলে ৭০ রান করেছিলেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২১২ ম্যাচে ৩৯৭টি উইকেটও ৮৭৩২ রান আছে আবিদের। যার মধ্যে ক্যারিয়ারের সেরা স্কোর ১৭৩*।
Comments