বার্সেলোনাকে হারিয়ে শীর্ষে রিয়াল
আবারও সেই রক্ষণভাগের ব্যর্থতায় প্রথমার্ধেই জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়ে বার্সেলোনা। শেষদিকে একটি গোল শোধ করতে পারলেও যোগ করা সময়ে পেনাল্টি উপহার দিয়ে হজম করে আরও একটি গোল। ফলে মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে হারল বার্সেলোনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়েই লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে ফের শীর্ষে ফিরেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।
রোববার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে লা লিগার ম্যাচে বার্সেলোনাকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। দলের হয়ে একটি করে গোল করেছেন করিম বেনজেমা, ফেদে ভালভার্দে ও রদ্রিগো। বার্সেলোনার হয়ে একমাত্র গোলটি করেন ফেরান তোরেস।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো লিগেও বার্সেলোনা শিবিরের রক্ষণভাগে চিড় দেখা দিল প্রকটভাবে। বিশেষকরে রিয়ালের কাউন্টার অ্যাটাকে দারুণ ভুগেছে দলটি। এদিনও এরিক গার্সিয়া করেছেন একাধিক ভুল। ফলে ব্যর্থতার বৃত্তে আবদ্ধ কাতালানরা শীর্ষস্থান হারালো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছে।
তবে বরাবরের মতো মাঝমাঠে প্রাধান্য বিস্তার করেছে বার্সেলোনা। আক্রমণও করে বেশি তারাই। কিন্তু ম্যাচের ফলাফল আনতে পারেনি পক্ষে। ৫৭ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে ১৮টি শট নেয় দলটি। যার ৭টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ৮টি শট নিয়ে ৪টি লক্ষ্যে রেখেই ৩টি গোল আদায় করে নেয় রিয়াল।
গত মৌসুমে উড়ন্ত ছন্দে কাটানো বেনজেমা শেষ পাঁচে পাননি কোনো গোল। সেই গোল খরা কাটালেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষেই। তার গোলেই ম্যাচের ১২ মিনিট না যেতেই এগিয়েই রিয়াল। এরপর সতীর্থরাও জ্বলে উঠলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারে তারা।
দ্বাদশ মিনিটে পাওয়া রিয়ালের গোলের মূল কারিগর টনি ক্রুস। মাঝমাঠে তাকে টেনে ধরেছিলেন সের্জিও বুসকেতস। কিন্তু তারমধ্যে আলতো টোকায় দারুণ এক থ্রু পাস দেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে। অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বল নিয়ে এগিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে শট নেন এ ব্রাজিলিয়ান। তবে তার শট ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন। আলগা বল একেবারে অরক্ষিত অবস্থায় পেয়ে যান বেনজেমা। জোরালো এক শটে বল জালে পাঠাতে কোনো ভুল হয়নি এ ফরাসি ফরোয়ার্ডের।
৩৫তম মিনিটে দ্বিতীয় গোল হজম করে বার্সেলোনা। আবারও রক্ষণভাগের ব্যর্থতা। এবার ফেরলান্দ মেন্দির ক্রস থেকে একেবারে অরক্ষিত অবস্থায় পেয়ে যান ভালভার্দে। ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে নেওয়া তার জোরালো শট জাল খুঁজে নিলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে চ্যাম্পিয়নরা।
৮৩তম মিনিটে একটি গোল পরিশোধ করে বার্সা। দুই খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বাঁ প্রান্ত থেকে দারুণ এক কাটব্যাক করেন বদলি খেলোয়াড় আনসু ফাতি। পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন লেভানদোভস্কি। তবে তিনি না পারলেও পেছনে ফাঁকায় ছিলেন আরেক বদলি খেলোয়াড় তোরেস। আলতো টোকায় বার্সাকে ম্যাচে ফেরান এ স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
তবে ম্যাচের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে বার্সার সমতায় ফেরার সব আশা শেষ করে দেন রদ্রিগো। সফল স্পট কিক থেকে গোল আদায় করে নেন এ ব্রাজিলিয়ান। ডি-বক্সে তাকে ফাউল করেছিলেন গার্সিয়া। শুরুতে না দিলেও ভিএআরে যাচাই করে পরে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
তবে ম্যাচে গোলের সুযোগ ছিল আরও বেশ কিছু। পঞ্চম মিনিটে রাফিনহার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট না হলে শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারতো বার্সা। তিন মিনিট পর গোলের দারুণ সুযোগ নষ্ট করেন ভিনিসিয়ুসও।
২৫তম মিনিটে তো অবিশ্বাস্য এক মিস করেন লেভানদোভস্কি। রাফিনহার ক্রস থেকে একেবারে ফাঁকায় পেয়েছিলেন এ পোলিশ তারকা। তবে তার স্লাইড শটে বল বারপোস্টের উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট পর উসমান দেম্বেলের হেডও লক্ষ্যে থাকেনি।
৪৩তম মিনিটে লেভাও পারেননি লক্ষ্যে হেড রাখতে। ৫২তম মিনিটে বল জালে জড়িয়েছিলেন বেনজেমা। তবে অফসাইডের কারণে গোল মিলেনি। ৭৭তম মিনিটে ফাতির শট বারপোস্ট ঘেঁষে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে হতাশ বাড়ে দলটির।
৮৭তম সমতায় ফেরার সুবর্ণ সুযোগ হারায় বার্সা। সের্জি রোবার্তোর হেড এক খেলোয়াড় ব্লক করলেও ফাঁকায় আলগা বল পেয়ে গিয়েছিলেন। ভালো সাইড ভলি করতে পারলেই গোল পেতে পারতেন। তবে ঠিকভাবে সংযোগ না হলে নষ্ট হয় সে সুযোগ।
Comments