যেসব অনন্য কীর্তিতে ভাস্বর পেলে

দারিদ্র্য পীড়িত পরিবার থেকে উঠে এদসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো ফুটবল বিশ্বে আলো ছড়াতে শুরু করেন ১৮ বছর পেরুনোর আগেই। বাবার দেওয়া নাম আড়ালে ফেলে হয়ে ওঠেন পেলে, ফুটবলের রাজা। ১৯৭৭ পর্যন্ত ফুটবল মাঠে এই সম্রাট গড়েছেন অনেক কীর্তি। সেসবের বেশ কিছু আজও কেউ ছড়াতে পারেননি। তাকে ঘিরে আছে অনেক মন্ত্রমুগ্ধ গল্পগাঁথাও।
- সবচেয়ে কম বয়েসী খেলোয়াড় হিসেবে ফুটবল বিশ্বকাপ জিতেছিলেন পেলে। ১৯৫৮ সালে ব্রাজিলের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপ জেতার সময় তার বয়স ছিল স্রেফ ১৭ বছর ২৪৯ দিন। ফাইনালে সেবার সুইডেনকে ৫-২ গোলে হারিয়েছিল ব্রাজিল। পেলে সেই ম্যাচে করেছিলেন দুই গোল।
- ১৯৫৮, ১৯৬২ এবং ১৯৭০- মোট তিনবার বিশ্বকাপ জিতেছেন পেলে। বিশ্বের আর কোনো খেলোয়াড়ের এই কীর্তি নেই। ১৯৫৮ সাল এবং ১৯৭০ সালের ফাইনালে গোলও করেছিলেন পেলে।
- ব্রাজিলের জার্সিতে মোট ৯২ ম্যাচে ৭৭ গোল করেন পেলে। যা দীর্ঘ দিন ব্রাজিলের হয়ে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড হয়ে ছিল। সবশেষ কাতার বিশ্বকাপে নেইমার এই রেকর্ড স্পর্শ করেন।
- ১৩৬৩ স্বীকৃত ম্যাচ খেলে ১ হাজার ২৮১ গোল করেছেন পেলে, যা আজও কেউ ভাঙতে পারেনি।
- বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার রেকর্ডও তৈরি করেন পেলে। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে ওয়েলসের বিরুদ্ধে গোল করার সময় তার বয়স ছিল ১৭ বছর ২৩৯ দিন।
- বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিকেরও নজির গড়েন পেলে। ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করা কালো মানিকের বয়স ছিল ১৭ বছর ২৪৪ দিন।
পেলেকে নিয়ে আরও যত কীর্তি গাঁথা, যত মত
- পেলের মূল নাম এদসন আরান্তেস দো নাসিমেন্তো। মার্কিন বিজ্ঞানী টমাস আলভা এদিসনের নামে তার বাবা নামটি রেখেছিলেন। শৈশবে ফুটবল খেলতে গিয়ে তার ছদ্মনাম হয়ে যায় পেলে। যা আজ মূল নামের চেয়েও অনেক বেশি প্রতিষ্ঠিত।
- ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি এক ভোটাভুটিতে পেলেকে শতাব্দীর সেরা অ্যাথলেটের স্বীকৃতি দেয়।
- ১৯৯৭ সালে তাকে সম্মানসূচক ব্রিটিশ 'নাইটহুড' খেতাব দেওয়া হয়।
- ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জেতা অধিনায়ক ববি মুরের মতে, পেলে হলেন সবচেয়ে পরিপূর্ণ ফুটবলার।
- পেলেকে দলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ইন্টার মিলানের মতো ইউরোপ সেরা ক্লাবগুলো। তা আটকাতে ১৯৬১ সালে পেলে 'রাষ্ট্রীয় সম্পদ' ঘোষণা করে ব্রাজিল সরকার।
- ১৯৬৯ সালের ১৯ নভেম্বর ক্যারিয়ারে ১ হাজারতম গোল করেন পেলে। সান্তসে এরপর ১৯ নভেম্বর দিনটি 'পেলে দিবস' হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
- কে সেরা পেলে নাকি ম্যারাডোনা? এমন বিতর্কে ২০০৬ সালে পেলে বলেছিলেন, '২০ বছর ধরে আমাকে এই প্রশ্ন করা হচ্ছে।। আমি বলি উত্তর পেতে হলে ঘেটে দেখতে হবে সে ডান পায়ে আর মাথা গিয়ে কটা গোল করেছে।
- পর্তুগিজ মহাতারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর মতে ফুটবল ইতিহাসে পেলে সর্বকালের সেরা, আগামীতেও তিনি তাই থাকবেন।
Comments