ফিফার বর্ষসেরা হবেন কে?
গত বছরটা লিওনেল মেসির কেটেছে স্বপ্নময়। সবচেয়ে বড় স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেছে তার। আর্জেন্টিনাকে তৃতীয় বিশ্বকাপ জেতাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ফিফার বর্ষসেরা 'দা বেস্ট ফিফা মেন'স প্লেয়ার অ্যাওয়ার্ড' পাওয়ার চূড়ান্ত লড়াইয়ে অনুমিতভাবেই আছেন তিনি। তার সঙ্গে লড়াইয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে দুর্দান্ত ফুটবল খেলা কিলিয়ান এমবাপে। আর রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মাঠ মাতানো করিম বেনজেমা।
২০২১ সালের ৮ অগাস্ট থেকে ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর- এই সময়ের পারফরম্যান্স বিবেচনায় প্রাথমিকভাবে ১৪জনকে মনোনীত করা হয়েছিল। তারমধ্য থেকে ভোটাভুটি শেষে শুক্রবার তিনজনের নাম ঘোষণা করে ফিফা।
পুরুষ জাতীয় দলের কোচ, অধিনায়ক, সাংবাদিক ও ফুটবলপ্রেমীদের ভোটে চূড়ান্ত হয় মেসি, এমবাপে আর বেনজেমার নাম। ২৭ ফেব্রুয়ারি প্যারিসের দেওয়া হবে এই পুরস্কার।
তিন ফাইনালিস্টের খতিয়ান:
লিওনেল মেসি
বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পর শুরুতে তেমন ভালো কিছু করতে পারছিলেন না মেসি। যদিও থিতু হয়ে আলো ছড়াতে দেরি হয়নি। তবে মেসির সেরাটা দেখা যায় আর্জেন্টিনার জার্সিতে। বিশেষ করে কাতার বিশ্বকাপে নিজেকে নিংড়ে দিয়ে খেলেন তিনি। আর্জেন্টিনার হয়ে প্রতিটি মুহূর্তে মাঠে ছিলেন, দলের হয়ে সর্বোচ্চ গোল, সবচেয়ে বেশি গোলে অবদানও রেখেছেন।
ফ্রান্সের বিপক্ষে ফাইনালেও জোড়া গোল করেন সাত বারের ব্যালন ডি'অর জয়ী ফুটবলার। ৭ গোলের সঙ্গে অ্যাসিষ্ট করেন তিনটি। বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও পান মেসি। মেসি তাই এই পুরস্কার জিততে এবারও দাবি জানাচ্ছেন জোরালোভাবে।
কিলিয়ান এমবাপে
২০১৮ সালেই দারুণ নৈপুণ্যে বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গেছে কিলিয়ান এমবাপের। ২৪ বছর বয়েসে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতার খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন ফরাসি তারকা। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনালে দুর্দান্ত ফুটবল খেললেও শেষটায় হিসাব মেলেনি।
বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৮ গোল করে গোল্ডেন বুট জেতেন এমবাপে। ফাইনালে হ্যাটট্রিকও করেন তিনি। ফাইনালে দুই গোলে পিছিয়ে থাকা ফ্রান্স ঘুরে দাঁড়ায় তার একার ঝলকে। সমতা ফেরানোর পর জেতার অবস্থাও তৈরি করেছিলেন তিনি। টাইব্রেকারে হেরে কান্নায় ভেঙে পড়তে হয় তাকে।
জাতীয় দলের মতো ক্লাব ফুটবলেও দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন এমবাপে। পিএসজির হয়ে লিগ জেতায় সর্বোচ্চ ২৮ গোল করেন, সবচেয়ে বেশি ১৭ অ্যাসিস্ট আসে তার পা থেকে। সব আসর মিলিয়ে ৩৯ গোলের সঙ্গে ২৬টি গোলে ভূমিকা রাখেন এই তারকা। বিশ্বকাপ না জিতলেও সার্বিক পারফরম্যান্সে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতার বিবেচনায় তার অবস্থানও বেশ শক্ত।
করিম বেনজেমা
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে অসাধারণ ঝলক দেখিয়ে বিশ্বকাপে গিয়েছিলেন করিম বেনজেমা। তবে চোট তার অভিযান থমকে দেয়। খেলার আগেই ছিটকে যান ফরাসি তারকা, আর ফিরতে পারেননি।
অথচ ক্লাব ফুটবলে বেনজেমা ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে করেন ১৫ গোল। ১০ গোলই করেন নকআউট পর্বে। স্প্যানিশ লা লিগা জিততেও দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭ গোল আসে বেনজেমার পা থেকে।
ক্লাবে এমন নৈপুণ্যে গেল বছর ব্যালন ডি'অর জিতেছেন তিনি। তবে বিশ্বকাপ খেলতে না পারায় হয়ত মেসি ও এমবাপে থেকে কিছুটা পিছিয়ে গেলেন এই তারকা।
Comments