মেসির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করবে না পিএসজি!

কাতারি বোর্ডের 'বিশেষ অনুমতি' পেলেও সৌদি আরব ভ্রমণে অনুমতি দেননি কোচ ও ফুটবল পরিচালক কেউই। কিন্তু তারপরও সৌদিতে গিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। যার জেরে তাকে দুই সপ্তাহের জন্য নিষিদ্ধ করেছে পিএসজি। ঘটনা এখানেই শেষ নয়, আর্জেন্টাইন অধিনায়কের সঙ্গে চুক্তি নবায়নই করতে চায় না ক্লাবটি!
বুধবার ফ্রান্সের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম লা'কিপ জানিয়েছে, মেসিকে আর দলে রাখতে চায় না পিএসজি। ফলে তাকে আর নতুন করে কোনো প্রস্তাব দিচ্ছে না প্যারিসের ক্লাবটি। অর্থাৎ দুই মৌসুমেই শেষ হচ্ছে মেসির পিএসজি অধ্যায়। আর এমনটা হলে পিএসজির জার্সিতে আর তিন ম্যাচে দেখা যাবে মেসিকে। কারণ দুই সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞার জন্য আগামী দুই ম্যাচে মাঠে নামতে পারবেন না তিনি।
পিএসজির সঙ্গে মেসির বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে এই গ্রীষ্মের শেষে। যদিও তৃতীয় মৌসুমের জন্য একটি ধারা চালু করার বিকল্প ছিল ক্লাবটির। তবে মেসির বর্তমান আচরণে ক্লাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে ছেড়ে দেওয়ার দিকেই ঝুঁকছেন বলে জানিয়েছে লা'কিপ। যদিও আলোচনা এখনও চলমান। তবে সৌদি সফরে পিএসজি ক্যারিয়ারের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছেন বলে মনে করছে সংবাদমাধ্যমটি। এই গ্রীষ্মে মেসির প্রস্থান নিশ্চিত বলে দাবি করেছে তারা।
মেসির সঙ্গে এর আগে চুক্তি নবায়ন নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা চললেও তা আলোর মুখ দেখেনি। পিএসজির দেওয়া প্রস্তাবে রাজী হননি এ আর্জেন্টাইন। যে কারণে আরও একটি নতুন প্রস্তাবের কথা ভাবছিল না প্যারিসের ক্লাবটি। ফলে চুক্তি নবায়নের একটি সম্ভাবনা তো ছিলই। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে লাভ হয়েছে ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার। মেসিকে ফেরাতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছে ক্লাবটি।
বার্সেলোনার সঙ্গে সম্পর্কের ইতি ঘটার পর ২০২১ সালের অগাস্টে পিএসজিতে পাড়ি জমিয়েছিলেন মেসি। ক্লাবটির হয়ে এখন পর্যন্ত ৭১ ম্যাচে ৩১ গোল করেছেন মেসি। রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী ফুটবলার সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন আরও ৩৪ গোল। গত মৌসুমে লিগ ওয়ানের শিরোপা জেতার স্বাদ নিয়েছেন তিনি। এবারও শিরোপা ধরে রাখার পথে আছে তারা। ৩৩ ম্যাচে তাদের অর্জন ৭৫ পয়েন্ট।
উল্লেখ্য, লরিয়ঁর বিপক্ষে হারের পর গত সোমবার সৌদি উড়ে যান মেসি। অথচ ১-৩ ব্যবধানে সেই হারের পর খেলোয়াড়দের উপরও বেজায় চটেছিলেন কোচ ক্রিস্তফ গালতিয়ের। অনেক খেলোয়াড়ই নিজের সেরা স্তরে নেই বলে তোপ দাগিয়েছিলেন। সরাসরি না বললেও মেসিও যে এর বাইরে নন সে ইঙ্গিত স্পষ্ট। কারণ সে ম্যাচে নিজের সেরা ছন্দে ছিলেন না মেসি।
ম্যাচে সেদিন মেসি কোনো গোল তো করতে পারেনইনি, ছিল না প্রতিপক্ষের পোস্টে কোনো শট। পারেননি কোনো অ্যাসিস্ট করতেও। ১০ বার ড্রিবলিংয়ের চেষ্টা করে সফল হয়েছেন মাত্র দুই বার। বলও হারিয়েছেন ২২ বার। ফলে গ্যালারীতে থাকা সমর্থকদের দুয়োও শুনতে হয়েছিল তাকে। তখন থেকেই সমালোচনা চলেছে ফরাসি সংবাদমাধ্যমগুলোতে।
এছাড়া সোমবার ছুটি থাকলেও মঙ্গলবার ছিল দলীয় অনুশীলন পর্ব রেখেছিলেন গালতিয়ের। সেই হারের পর দলের সবাইকেই অনুশীলনে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সৌদিতে থাকায় মেসি ছিলেন অনুপস্থিত। নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী দুই সপ্তাহ দলের সঙ্গে অনুশীলনও করতে পারবেন না এই সাবেক বার্সা তারকা।
Comments