ভিসা-স্পন্সর জটিলতা

শঙ্কায় চ্যাম্পিয়ন সাইক্লিস্টের বিশ্ব ডুয়াথলনে অংশ নেওয়ার স্বপ্ন

রাকিবুল প্রথম বাংলাদেশি ক্রীড়াবিদ হিসেবে এই বিশ্ব আসরে অংশগ্রহণ করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। শুধু তাই নয়, এবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে একমাত্র প্রতিযোগী হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন তিনি।
জাতীয় স্বর্ণপদক জয়ী সাইক্লিস্ট রাকিবুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

গত ছয়-সাত বছরে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে সাইক্লিংকে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় করে চলেছেন জাতীয় স্বর্ণপদক জয়ী সাইক্লিস্ট রাকিবুল ইসলাম। স্পন্সর ও ভিসা জটিলতায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ২০২৩ সালের ডুয়াথলন চ্যাম্পিয়নশিপে তার অংশ নেওয়া।

রাকিবুল প্রথম বাংলাদেশি ক্রীড়াবিদ হিসেবে এই বিশ্ব আসরে অংশগ্রহণ করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। শুধু তাই নয়, এবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে একমাত্র প্রতিযোগী হিসেবে আমন্ত্রণ পেয়েছেন তিনি।

পাওয়ারম্যান ডুয়াথলন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। পৃথিবীর কঠিনতম ক্রীড়া প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি। প্রথমে ১০ কিলোমিটার দৌড়, এরপর ১৫০ কিলোমিটার সাইক্লিং এবং শেষে আবার ৩০ কিলোমিটার দৌড়ে অংশ নিতে হয় প্রতিযোগীদের। এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় সম্পূর্ণ পাহাড়ি এলাকার রাস্তায়।

রাকিবুল জানান, এই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করা তার একটি স্বপ্ন। সেজন্য গত পাঁচ বছর ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি। তিন বছর আগে ছেড়েছেন চাকরিও। এমনকি পরিবার-পরিজন ছেড়ে গত দুই বছর ধরে একাকী খাগড়াছড়ির পাহাড়ে নীরবে-নিভৃতে কঠোর অনুশীলন করে যাচ্ছেন তিনি।

আগামী ২-৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে দুইদিনব্যাপী বিশ্ব ডুয়াথলন চ্যাম্পিয়নশিপ। সেখানে রাকিবুল বিশ্বের বাছাই করা (১৬০ থেকে ১৭০ জন) অ্যাথলেটদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবেন। কিন্তু অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে রাকিবুলের সুইজারল্যান্ড যাত্রা।

এই চ্যাম্পিয়নশিপের কর্তৃপক্ষ গত ১৩ জুলাই আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে রাকিবুলকে। কিন্তু ভিসার জন্য আবেদন করতে সব  প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও স্পন্সর যোগাড় করতে ধকল পোহাতে হচ্ছে তাকে।

গত ৮ অগাস্ট শেনজেন ভিসার জন্য আবেদন করেন রাকিবুল। কিন্তু সুইস অ্যাম্বাসি থেকে তাকে জানানো হয়, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভিসার ইন্টারভিউয়ের জন্য কোনো তারিখ (স্লট) খালি নেই। শেনজেন ভিসা পেতে অন্তত ১৫ দিন আগে আবেদন করতে হয় বলেও উল্লেখ করে তারা।

ভিসার আবেদন করতে কেন দেরি হল জানতে চাইলে রাকিবুল বলেন, 'এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য অনেক কাগজপত্র লেগেছে। আমার কর্তৃপক্ষ (চট্রগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার) অনাপত্তিপত্র নেওয়া লেগেছে। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য রেস লাইসেন্স এটি ওয়ার্ল্ড ট্রায়থলন অরগানাইজেশন(ডব্লিউটিও) দিয়ে থাকে। স্পন্সর কনফারমেশন, রেস ইন্সুরেন্স (শেনজেনভুক্ত দেশে রেস করার জন্য), সিভিল স্ট্যাটাসের নোটারীকরণসহ আরও বেশ কিছু অফিসিয়াল কাগজপত্র নিশ্চিত করতে হয়।'

তিনি যোগ করেন, 'এছাড়া, সম্প্রতি পাহাড়ি বন্যার কারণে খাগড়াছড়ি থেকে ঢাকা বা চট্টগ্রাম যাতায়াত অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে ইভেন্ট রেজিস্ট্রেশনের ফি দিতেও পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। দেশ থেকে ক্রেডিট কার্ডে একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৩০০ ডলার পে করা যায়। কিন্তু আমাকে পে করতে হবে ৪১০ ডলার। পরে কুপন কিনে কিনে তা জোড়া দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়।'

রাকিবুল আরও বলেন, 'নিজের ও স্পন্সরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগে। আমার জন্য স্পন্সর পাওয়া খুব কঠিন। অবশেষে গত ৯ অক্টোবর আমি একটি স্পন্সর পেয়েছি। কিন্তু তারাও পুরো খরচ দিতে পারছে না। সেজন্য শেষ পর্যায়ে এসে বড় বিপাকে পড়েছি। সব ঠিকঠাক করে সুইজারল্যান্ডের শেনজেন ভিসা ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। ভিসা ইন্টারভিউয়ের স্লট ১১ সেপ্টেম্বরের আগে মিলবে না। এখন ২৮ অগাস্টের মধ্যে আমি কীভাবে যাব সুইজারল্যান্ড?'

Comments

The Daily Star  | English

US Visa Policy: Some officials in admin, police ill at ease

A section of officials in the administration and police have a feeling of unease over the US visa curbs, but they would not publicly admit it.

10h ago