টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ: পরিসংখ্যানে সাকিবের রাজত্ব

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচনালগ্ন থেকে ধারাবাহিকভাবে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামী জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় আসরটি দিয়ে নবমবারের মতো ২০ ওভারের ক্রিকেটের বিশ্ব আসরে খেলবে তারা। ২০ দলের বিশ্বকাপের 'ডি' গ্রুপের তাদের সঙ্গীরা হলো দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল ও দলের ক্রিকেটারদের উল্লেখযোগ্য কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো দ্য ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য:

০- ২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবগুলো আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে নয়টি দল। তারা হলো বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এদের মধ্যে কেবল বাংলাদেশই কখনও পারেনি সেমিফাইনালে উঠতে।

১- বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের একমাত্র সেঞ্চুরিটি করেছিলেন ২০১৬ সালের আসরে। প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে ধর্মশালায় ওমানের বিপক্ষে ৬৩ বলে অপরাজিত ১০৩ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচে ৫ উইকেট নেওয়া একমাত্র বাংলাদেশি বোলার মোস্তাফিজুর রহমান। ২০১৬ সালের আসরেই সুপার টেনে কলকাতায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ রানে ৫ উইকেট শিকার করেছিলেন বাঁহাতি এই পেসার।

ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

৩- অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি হাফসেঞ্চুরি করেছেন।

৯- বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগের আট আসরে মোট ৩৮ ম্যাচ খেলে জিতেছে মাত্র নয়টি ম্যাচ।

অধিনায়ক হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি নয়টি ম্যাচ খেলেছেন মুশফিকুর রহিম।

১০- বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১০টি ক্যাচ নেওয়ার কীর্তি দুজনের দখলে। তারা হলেন সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

১১- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক আসরে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক সাকিব। বাঁহাতি স্পিনে ২০২১ সালের আসরে তিনি ৬ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েছিলেন।

২০- মোহাম্মদ আশরাফুল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরির মালিক। তিনি ২০০৭ সালের আসরে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০ বলে ফিফটি স্পর্শ করেছিলেন।

২৩- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি ২৩টি ছক্কা হাঁকানোর কীর্তি রয়েছে সাকিবের নামের পাশে।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

২৪.৩২- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অন্তত ১০ ম্যাচ খেলা ১৫ দলের মধ্যে জয়ের হারে বাংলাদেশের অবস্থান সবার নিচে। তারা জিতেছে শতকরা ২৪.৩২ ভাগ ম্যাচ। তাদের ঠিক ওপরে আছে স্কটল্যান্ড। ১৮ ম্যাচের পাঁচটিতে জেতায় স্কটিশদের জয়ের হার ২৯.৪১ শতাংশ। ৪৪ ম্যাচের ২৭টিতে জিতে শতকরা ৬৩.৯৫ ভাগ জয়ের হার নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ভারত।

২৮- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৮টি ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। আর কোনো দল অন্তত ২০ বা এর চেয়ে বেশি ম্যাচে হারেনি। বাংলাদেশের পরের অবস্থানে থাকা ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা হেরেছে ১৯টি করে ম্যাচ।

৩৬- সাকিব টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের জার্সিতে সর্বোচ্চ ৩৬টি ম্যাচ খেলেছেন। ত্রিশের ঘরে ম্যাচ খেলেছেন আর কেবল দুজন। তারা হলেন মুশফিকুর রহিম (৩৩) ও মাহমুদউল্লাহ (৩০)।

৪৭- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে বেশি ৪৭টি উইকেট নিয়েছেন সাকিব। তার গড় ১৮.৬৩ ও ইকোনমি ৬.৭৮। তিনি ৪ উইকেট পেয়েছেন তিনবার। কেবল বাংলাদেশের নয়, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসেরই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি সাকিব।

৭০- পাঁচবার বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একশ ছোঁয়ায় আগেই অলআউট হয়েছে। সর্বনিম্ন ৭০ রানে তারা গুটিয়ে গিয়েছিল ২০১৬ সালের আসর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কলকাতায়।

১০৩- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের মালিক তামিম। ওমানের বিপক্ষে তার ৬৩ বলে অপরাজিত ১০৩ রানের ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও ৫টি ছক্কা।

ফাইল ছবি: ফিরোজ আহমেদ

১১২- রানের হিসাবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটি। ২০১৪ সালের আসরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মিরপুরে সাকিব ও মুশফিক তৃতীয় উইকেটে ১১২ রান যোগ করেছিলেন। এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের শতরানের জুটি আছে আর একটি। ২০০৭ সালের আসরে জোহানেসবার্গে আশরাফুল ও আফতাব আহমেদ তৃতীয় উইকেটে ১০৯ রান যোগ করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।

১৮১- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কখনও দলীয় পুঁজি দুইশ পর্যন্ত নিতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০২১ সালের আসরের প্রথম রাউন্ডে আল আমেরাতে পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৮১ রান তারা তুলেছিল ৭ উইকেট খুইয়ে।

২৫৭.১৪- অন্তত ২৫ রান করেছেন, এই বিবেচনায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক ইনিংসে বাংলাদেশের জার্সিতে সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেট আফতাবের। তিনি ২০০৭ সালের সালের আসরে কেপটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৫৭.১৪ স্ট্রাইক রেটে ১৪ বলে ৩৬ রান করেছিলেন। তিনি ৫টি চারের মেরেছিলেন দুটি ছক্কা।

২৯৫- তামিম ইকবাল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এক আসরে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের কীর্তি তামিমের। তিনি ২০১৬ সালের আসরে ৭৩.৭৫ গড় ও ১৪২.৫১ স্ট্রাইক রেটে করেছিলেন ২৯৫ রান। সেবার তার ব্যাট থেকে এসেছিল একটি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটি।

৭৪২- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের মালিক সাকিব। তিনি ৩৬ ম্যাচে ২৩.৯৩ গড় ও ১২২.৪৪ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ৭৪২ রান। তার নামের পাশে তিনটি ফিফটি থাকলেও কোনো সেঞ্চুরি নেই।
 

Comments