বাংলাদেশে কোচিং ডোমিঙ্গোর কাছে 'অনেক জটিল' ও 'নির্মম'

দক্ষিণ আফ্রিকায় ২৫ বছরে যে অভিজ্ঞতা হয়নি, বাংলাদেশে নাকি তা হয়েছে ডমিঙ্গোর
Russell Domingo
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

রাসেল ডোমিঙ্গো বাংলাদেশ জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন তিন বছরের বেশি সময়। উপমহাদেশের বাইরের যেকোনো কোচের জন্যই এই অঞ্চলে কোচিং করানো আলাদা চ্যালেঞ্জ। ডোমিঙ্গোর মতে উপমহাদেশে কোচিংয়ের মতো তুলনীয় কিছুই নেই। দক্ষিণ আফ্রিকায় ২৫ বছরে যা অভিজ্ঞতা হয়নি, এখানে নাকি তা হয়েছে তার। মূলত উপমহাদেশের একটি দলকেই কোচিং করিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের সাবেক এই কোচ বলেছেন, এদেশে কোচিং হতে পারে নির্মম এবং বেশ জটিল।

২০১৯ সালের আগষ্টে টাইগারদের প্রধান কোচের ভূমিকায় বাংলাদশে আসেন ডোমিঙ্গো। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এরপর চাকরি ছাড়েন এই প্রোটিয়া কোচ। এদেশে কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, 'এমন কিছুই নেই যা আপনাকে বাংলাদেশে কোচিং করানোর জন্য প্রস্তুত করবে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকায় সবকিছু বেশ কাঠামোবদ্ধ। বাংলাদেশে সবকিছুই আপনার উপর। কোন ব্যাটিং অর্ডার ব্যর্থ হলে, এটা আপনার ভুল। যদি দল না জিতে, আপনার ভুল। দক্ষিণ আফ্রিকায় আপনি বেশ সুরক্ষিত থাকেন। আমি সুরক্ষিত বলতে বোঝাচ্ছি, আপনার পাশে বেশ সমর্থন থাকে। বাংলাদেশে আপনি প্রধান কোচ, সবকিছু আপনার উপর, এরকম। তো অনেক জটিল। এটা নির্মম হতে পারে।'

বাংলাদশের কোচ হওয়ার আগে এই পেশায় ডোমিঙ্গো পুরোটা সময়ই জড়িত ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকায়। ২০১৩ থেকে ২০১৭- পাঁচ বছর প্রোটিয়াদের প্রধান কোচের ভূমিকায় ছিলেন তিনি। তবে সেখানে হাই-প্রোফাইল ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করাও নাকি তাকে পুরোপুরি প্রস্তুত করেনি। পিচসাইড পডকাস্টে ডোমিঙ্গো বলেন, 'যেকোনো কোচকেই আমি উৎসাহ দিব উপমহাদেশে কোনো না কোনো সময়ে কোচিং করানোর জন্য। কারণ উপমহাদেশে কোচিংয়ের মতো কিছু নেই। এটা বিশৃঙ্খল, এটা নির্মম। কখনো আপনার সস্তা মনে হয় -এটা কীভাবে কাজ করলো অথবা তারা কীভাবে এই দলটা নির্বাচন করলো। কিন্তু তবুও কাজ চলে, তারা নিজেদের দিনে যেকোনো দলকে হারাতে পারে। তো এরকম পরিবেশে কোচিং করানো দারুণ শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা যেকোন কোচের জন্য। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকায় এমন কিছুই অভিজ্ঞতা হয়নি আমাদের।'

বাংলাদেশে কোচিং নিয়ে ডোমিঙ্গো আরও বলেন, 'আমার বয়স এখন ৪৯, আমি কোচিং শুরু করেছি ২১ বছর বয়সে। কোচিংয়ের ২৫ বছর কেটেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। উপমহাদেশের কোচিংয়ের সঙ্গে কোন কিছুর তুলনা হয় না। যেমন আবেগ, সমর্থন, মিডিয়ার মনোযোগ, জেতার জন্য মরিয়া থাকা- এসব একেবারে ভিন্ন পর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকার তুলনায়। আপনাকে অবশ্যই বুঝতে হবে বাংলাদেশের মতো জায়গায় ২০ কোটি মানুষের বসবাস, এবং শুধুমাত্র ক্রিকেটেই তাদের আগ্রহ। দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের ৬ কোটি মানুষ। আমাদের রাগবি, ফুটবল. ক্রিকেট, বক্সিং- তো এখানে ক্রিকেটে কিছুটা কম অনুসারী আছেন। বাংলাদেশে শুধুই ক্রিকেট। ওই রকমের প্রত্যাশা, চাপ, অবিরত তদন্ত মোকাবিলা করতে পারা অবিশ্বাস্য শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা যেকোনো কোচের জন্যই।'

Comments