'আইপিএলের পর আমরা ছিলাম, কিন্তু সবাই হয়তো ছাড়িয়ে গেছে'

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) জন্মলগ্নে ভারতের আইপিএলের সমমানের টুর্নামেন্ট আয়োজনই ছিল বিসিবির লক্ষ্য। কিন্তু প্রায় প্রতি বছরই ক্রিকেটীয় প্রযুক্তি থেকে শুরু করে খেলোয়াড়দের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত নানা জটিলতায় বারবার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি আসর। মানের বিচারে আইপিএলের পরই বিপিএলের অবস্থান, এমনটা অতীতে অনেকবার বলেছেন বিসিবি কর্তারা। তবে বর্তমানে অন্যান্য দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরগুলো বাংলাদেশের এই আয়োজনকে ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করেন খালেদ মাহমুদ সুজন।
উদ্বোধনী আসর থেকেই কোনো না কোন ভূমিকায় বিপিএলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছেন সুজন। এবার খুলনা টাইগার্সের কোচের দায়িত্বে থাকছেন তিনি। বিশ্বজুড়ে অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমের (ডিআরএস) ব্যবস্থা থাকলেও এবারও এই প্রযুক্তি আনতে পারেনি বিসিবি। এর পিছনে কারণ হিসেবে চলমান অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের কথা উল্লেখ করেন সুজন।
মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এই বিসিবি পরিচালক বলেন, 'সারা বিশ্বে কেবল একটি কোম্পানি আছে যারা ডিআরএস প্রদান করে থাকে। একসঙ্গে তিনটা টুর্নামেন্ট হচ্ছে। এজন্য একটা সমস্যা তৈরি হয়েছে যতটুকু আমি জানি। আর পেশাদারিত্বের হিসেবে আমরা খুবই ভালো ছিলাম। আইপিএলের পর আমরা ছিলাম, কিন্তু সবাই হয়তো টেক ওভার করেছে (আমাদের ছাড়িয়ে গেছে)। অনেকেই হয়তো ভালো করছে।'
এই মুহূর্তে চলছে অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগ বিগ ব্যাশ। বিপিএল চলাকালে শুরু হবে আরও দুটি বিশ্বমানের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট দক্ষিণ আফ্রিকার সিএসএ টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টি। ফলে অধিকাংশ বিদেশি তারকা বিপিএলে থাকছেন না এবার। আইপিএলে ডাক পেতেই তারা বিপিএল খেলার চেয়ে সেই আসরগুলোতে খেলা শ্রেয় মনে করছেন বলে ধারণা সুজনের।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, 'এটাও সত্য কথা যে আমাদের ফ্রাঞ্চাইজি যারা আসছে এবার, ড্রাফট থেকে খুব ভালো খেলোয়াড় আমরা পাইনি। যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকা টুর্নামেন্ট করছে, যারা ওখানে খেলছে, তারা কিন্তু আইপিএলভিত্তিক দলই। তাদের জন্য মুখ্য ভূমিকা থাকে আইপিএল খেলার। খেলোয়াড়রা কিন্তু আলটিমেটলি (দিনশেষে) চায় ওইসব টুর্নামেন্ট খেলতে যেন আইপিএলের নজর কাড়তে পারে।'
২০১২ সালে যাত্রা শুরু করেছিল বিপিএল। কিন্তু টুর্নামেন্টটির কোনো স্পষ্ট আর্থিক কাঠামো এখনও দাঁড় করাতে পারেনি বিসিবি। তৈরি হয়নি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর আয়ের কোনো নিশ্চিত রাস্তা। ফলে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের লড়াইয়ে বিপিএল পড়ে গেছে অনেক পিছনে।
এই প্রসঙ্গে সুজন বলেন, 'সারাবিশ্বে আইপিএলের ওপর কোনো ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট নেই। তাদের দলে খেলার জন্য ইচ্ছা তো থাকবেই। আমি খেলোয়াড় হলে আমারও থাকতো। আমি এখানে না থেকে ওখানে যেতাম। আমার মনে হয়, আমরা ভারতের মার্কেটের (বাজারের) সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারছি না। আমাদের ফ্রাঞ্চাইজি মালিকারাও যে খুব বড় বাজেটের দল করছেন তা না। তিন-চার বছর আগে তিন-চারটা টিম বড় বাজেটের দল করত, সেটাও এখন কমে গেছে।'
Comments