অথচ ক্রিকেট খেলাই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন হৃদয়

গ্রামের জমি বন্ধক রেখে যে টাকাটা দিয়েছিলেন মা, বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে এসে দেখলেন সেখানে কোনো একাডেমির অস্তিত্বই নেই। সব টাকাই খুইয়ে ফেলেন প্রতারকের খপ্পরে পরে, তখন মনোবল আর কীভাবে শক্ত থাকে। এক পর্যায়ে ক্রিকেট ছেড়েই দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বগুড়ার ছেলে তাওহীদ হৃদয়। দুরন্ত এই ছেলে পড়াশুনায় কখনো মনোযোগ দিতে পারেননি। স্বপ্নই ছিল ক্রিকেটার হওয়া। কিন্তু পরিবার থেকে যথার্থ সাহায্য পাননি। এক প্রকার তার জেদের কারণে মার কাছ থেকে টাকা নিয়ে এক বড় ভাইয়ের সাহায্যে ভর্তি হয়েছিলেন একটি একাডেমিতে। কিন্তু পরে দেখা যায় পুরো টাকাই গিয়েছে জলে।

গ্রামের জমি বন্ধক রেখে যে টাকাটা দিয়েছিলেন মা, বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে এসে দেখলেন সেখানে কোনো একাডেমির অস্তিত্বই নেই। সব টাকাই খুইয়ে ফেলেন প্রতারকের খপ্পরে পরে, তখন মনোবল আর কীভাবে শক্ত থাকে। এক পর্যায়ে ক্রিকেট ছেড়েই দিতে চেয়েছিলেন তিনি।

কিন্তু রক্তেই যার ক্রিকেটার নেশা তাকে আটকে রাখা দায়। নজরে পড়েন খালেদ মাহমুদ সুজনের। এরপর বয়সভিত্তিক দল। এরপর নানা পথ পেরিয়ে জাতীয় দলে। আর জাতীয় দলে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচেই পেয়েছেন সেরার পুরষ্কার। খেলেন ৯২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।

সেই সব দিনের স্মৃতিচারণ করে ম্যাচ শেষে হৃদয় বলেন, 'যখন একাডেমিতে গিয়েছিলাম, অনেক কিছু আসলে ক্ষতি করেই গিয়েছিলাম ওখানে। তারপর একটা সময় ক্রিকেট খেলার কোনো ইচ্ছে ছিল না। পরিবার থেকেও ওভাবে কোন সাপোর্ট ছিল না, বাবার সাপোর্ট ছিল না, যদিও বাবা খেলা বুঝে না। আমি যখন জেদ ধরতাম মায়ের সঙ্গে, যতটুকু পেরেছে আর কী চেষ্টা করেছে।'

'একটা সময় আমার খেলার ইচ্ছে ছিল না। সেসময় সুজন স্যার আসলে সেই ছোট বেলাতেই, যখন আমি অনূর্ধ্ব-১৬ খেলি, সুজন স্যার ওখান থেকে নিয়ে এসেছে এবং উনি আসলে সুযোগ করে দিয়েছে। ওখান থেকে ফার্স্ট ডিভিশন খেলে আস্তে আস্তে ওখান থেকেই উঠে আসা,' যোগ করেন হৃদয়।

তবে বর্তমানে দারুণ খুশি হৃদয়ের বাবা-মা। হৃদয়ের ভাষায়, 'অবশ্যই প্রতিটা বাবা-মায়ের প্রতিক্রিয়াই ভালো হওয়ার কথা। আমার বাবা-মাও খুশি হয়েছে। আমার মা বিশেষ করে একটু বেশি খুশি হয়েছে। উনি তো ছোটবেলা থেকেই আমাকে অন্যভাবে দেখেছে। পরিবার থেকে পড়াশোনার জন্য সবসময় চাপ দিতো, পড়াশোনার দিকে বেশি ফোকাস ছিলাম না। যতটুকু পেরেছি বেশির ভাগ সময় মাঠেই থাকতাম। বাবা-মা খুশি হয়েছে, আশেপাশের আত্মীয়-স্বজনরাও খুশি।'

এছাড়া নিজ এলাকার আরেক তারকা খেলোয়াড় মুশফিকুর রহিমের গল্পও অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছেন হৃদয়ের, 'মুশফিক ভাই... আমি অনেক ছোট ছিলাম ২০০৭ এর একটা কাহিনী। মুশফিক ভাই বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জিতে একটা স্টাম্প পেয়েছিলেন। তখন আমি অনেক ছোট, একদিন স্টেডিয়ামে গিয়েছিলাম। একটা প্রোগ্রামে মুশফিক ভাইয়ের কাছে যখন স্টাম্প দেখি তখন থেকেই অনেক অনুপ্রাণিত হই। ওখান থেকেই ইচ্ছে ছিল যদি একদিন খেলতে পারি জাতীয় দলে।'

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago