বিয়ার বিক্রিতে শেষ মুহূর্তে ইউ-টার্ন নিলো কাতার
কাতারে ফুটবলের মহাযজ্ঞকে সামনে রেখে অনেক দিন ধরেই বিতর্ক ছড়াচ্ছে বিভিন্ন ইস্যু। এর মধ্যে অন্যতম অ্যালকোহল (মদ ও বিয়ার)। মদ্যপায়ীদের জন্য স্টেডিয়ামের নির্দিষ্ট অংশে অ্যালকোহলের ব্যবস্থা থাকবে এমনটা বলে আসছিল আয়োজকরা। তবে এবার শেষ মুহূর্তে পাল্টে গেল তাদের সিদ্ধান্ত, কাতারের আটটি ভেন্যুর একটিতেও বিক্রি করা হবে না বিশেষ এই পানীয়।
কঠোর ইসলামিক শাসনে পরিচালিত হয়ে থাকে মরুর দেশটি। সেখানে প্রকাশ্যে মদ্যপান থেকে শুরু করে নিষিদ্ধ সমকামিতার মতো বিষয়গুলোও। তবে বিদেশী পর্যটকদের কথা বিবেচনায় নিয়ে স্টেডিয়ামের নির্দিষ্ট অংশে অ্যালকোহল বিক্রি করতে রাজি হয়েছিল কাতার। তবে এবার সেই অবস্থান থেকেও সরে এলো তারা।
মূলত চাপটা আসে রাজ-পরিবার থেকে। বিশ্বকাপের সব স্টেডিয়ামে মদ বা মদ জাতীয় পানীয়ের বিক্রি নিষিদ্ধ করতে আদেশ দেয় তারা। রাজা নিজে কিছু না বললেও তার ভাই ও কাতার ফুটবল সংস্থার সভাপতি শেখ জাসিম বিন হামাদ বিন খলিফা আল-থানি আপত্তি তোলেন। তাতেই চাপে পড়ে যায় ফিফা।
রাজপরিবারের নির্দেশ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা সম্ভব নয় আয়োজকদের জন্য। বিকল্প পথ খুঁজেও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় ফিফা। এদিকে বিশ্বকাপের অন্যতম প্রধান স্পনসর একটি বিয়ার প্রস্তুতকারক সংস্থা। এদিকে রাজপরিবারের আপত্তির কথা জানার পর অস্থায়ী সব বিয়ারের দোকান এরমধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছে দোহার পুলিশ।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে ফিফা জানিয়েছে, 'আয়োজক দেশের কর্তৃপক্ষ ও ফিফার মধ্যকার আলোচনা শেষে কাতার ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২ এর স্টেডিয়ামের ভেতর থেকে বিয়ার বিক্রির স্থানগুলো অপসারণ করে অ্যালকোহল যুক্ত পানীয়গুলো ফ্যান ফেস্টিভ্যাল, ফ্যানদের অন্যান্য গন্তব্যস্থল ও অনুমোদন প্রাপ্ত ভেন্যুতে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।'
বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আরও জানিয়েছে, 'স্টেডিয়াম ও আশেপাশের এলাকাগুলোতে যাতে উপভোগ্য, সম্মানজনক ও আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা হয় ভক্তদের সেটা নিশ্চিত করতে আয়োজক দেশের কর্তৃপক্ষ ও ফিফা কাজ করতে থাকবে।'
তবে বিশ্বকাপের মাত্র দুই দিন আগে সিদ্ধান্ত বদলানোর সমালোচনা করেছে সমর্থকদের সংগঠন ফুটবল সাপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েসন (এফএসএ)। তাদের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, 'কিছু ভক্ত খেলা চলাকালে বিয়ার (পান করতে) পছন্দ করে ও কিছু ভক্ত করে না, কিন্তু আসল ইস্যু হলো শেষ মিনিটে ইউ-টার্ন নেওয়া যেটা অনেক বড় সমস্যার কথা বলে-সমর্থকদের প্রতি আয়োজক কমিটির সম্পূর্ণ যোগাযোগ ও স্পষ্টতার অভাব এটা।'
Comments