সেনেগালের বিপক্ষে ঘাম ঝরিয়ে জিতল নেদারল্যান্ডস
শক্তির বিচারে এগিয়ে ছিল নেদারল্যান্ডসই। কিন্তু ছেড়ে কথা বলল না সেনেগালও। দলের সবচেয়ে বড় তারকা সাদিও মানে না থাকলেও আক্রমণ গড়ায় আধিপত্য বিস্তার করল আফ্রিকার দলটিই। কিন্তু শেষ সময়ে স্নায়ুচাপ ধরে রাখতে পারেনি তারা। ঠিকই জোড়া গোলের দেখা পেল ডাচরা। দারুণ লড়েও হার নিয়ে মাঠ ছাড়ল সেনেগাল।
সোমবার কাতারের আল থুমামা স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের 'এ' গ্রুপের ম্যাচে সেনেগালকে ২-০ গোলে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার কডি গাকপোর গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ডেভি ক্লাসেনের শেষ মুহূর্তের গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ইউরোপিয়ান দলটি। একের পর এক আক্রমণ গড়েও গোলের দেখা পায়নি আফ্রিকান চ্যাম্পিয়নরা, ডাচ গোলরক্ষক আন্দ্রিস নোপার্ট দারুণ কিছু সেভে একাধিকবার শঙ্কামুক্ত করেছেন দলকে।
এই ম্যাচে ৩-৪-৩ ফর্মেশনে একাদশ সাজান ডাচ কোচ লুইস ভন গল। অন্যদিকে নিজেদের চিরচেনা ৪-৩-৩ ফর্মেশনেই অটল থাকেন সেনেগাল কোচ আলিউ সিসে। বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড মেমফিস ডিপাইকে শুরুতে বেঞ্চে রাখেন গল।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে দুই দল। ডাচদের তুলনায় অধিক আক্রমণ শানাতে থাকে সেনেগাল। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই কর্নার আদায় করে নেয় তেরাঙ্গার সিংহরা। প্রথমার্ধে তাদের রুখতে বেশ কয়েকবার ফাউলেরও আশ্রয় নেয় ভন গলের শিষ্যরা। প্রথমার্ধে আটটি ফাউল করে তারা।
তবে সুযোগ ধরা দেয় নেদারল্যান্ডসের হাতেও। ১৯ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ং। বক্সের ভিতর দুজন সেনেগাল খেলোয়াড়কে পরাস্ত করলেও শট নিতে পারেননি বার্সা মিডফিল্ডার। ২৭ মিনিটে কর্নার থেকে লাফিয়ে হেড করলেও তা লক্ষ্যে রাখতে ব্যর্থ হন ভার্জিল ভ্যান ডাইক।
৪০ মিনিটে আবারও গোলের সম্ভাবনা জাগায় ডাচরা, ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন মিডফিল্ডার বারঘাস। কিন্তু লক্ষ্যে থাকেনি তার চেষ্টা, বারের সামান্য উপর দিয়ে বেরিয়ে যায় বল। প্রথমার্ধে আলোর মুখ দেখেনি কোন দলের প্রচেষ্টাই। গোলশূণ্য স্কোরলাইন নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পর ৪৭ মিনিটে বল নিয়ে ডাচ বিপদসীমায় প্রায় পৌঁছে গিয়েছিলেন সেনেগাল ফরোয়ার্ড দিয়া, কিন্তু তাকে পরাস্ত হতে হয় ভ্যান ডাইক, ন্যাথান একেদের কাছে। ৫৩ মিনিটে কর্নার থেকে আবারও গোল করার সুযোগ ছিল অধিনায়ক ভ্যান ডাইকের, কিন্তু লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় তার হেড।
৬২ মিনিটে ভিনসেন্ট ইয়ানসেনকে উঠিয়ে ডিপাইকে মাঠে নামান গল। সেনেগালও একাদশে আনে বদল, আবদু দিয়ালোর পরিবর্তে মাঠে নামেন ইসমাইল জ্যাকবস। ৬৫ মিনিটে দিয়ার জোরালো শট রুখে স্কোরলাইন ০-০ রাখেন নেদারল্যান্ডস গোলরক্ষক নোপার্ট।
৭১ মিনিটে আহত হয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন সেনেগালের চেইকু কুয়াতে। তার বদলে নামেন পাপে গে। এর দুই মিনিট বাদে আবারও ত্রাতা হয়ে দলকে বাচান নোপার্ট। ইদ্রিসা গের দারুণ শট ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন ডাচ গোলকিপার।
৮৪ মিনিটে অপেক্ষার অবসান ঘটে নেদারল্যান্ডসের, ডি ইয়ংয়ের ক্রস থেকে লাফিয়ে হেড করে দলকে এগিয়ে নেন গাকপো। গোল হজম করে মরিয়া হয়ে উঠে সেনেগাল। ৮৬ মিনিটে আবারও দলকে রক্ষা করেন নোপার্ট, দুর্দান্ত ডাইভে গের নিঁখুত শট ঠেকিয়ে বিপদমুক্ত করেন দলকে।
যোগ করা সময়ে একাধিক আক্রমণ গড়ে সেনেগাল। কিন্তু ফিনিশিং ব্যর্থতায় সমতা ফেরাতে পারেনি তারা। ৯৩ মিনিটে আহমাদু বাম্বা দিয়েং বক্সের ভিতর থেকে হেড করেন বারপোস্টের অনেক উপরে। তবে নেদারল্যান্ডস ঠিকই পায় ম্যাচের দ্বিতীয় সাফল্য, যোগ করা সময়ের নবম মিনিটে ফিরতি শটে গোল করেন ক্লাসেন। এতে শেষ পেরেক ঠোকা হয়ে যায় সেনেগালের কফিনে।
Comments