কোচ আর অধিনায়কের সিদ্ধান্তে ব্যাটিং অর্ডারে এত ওলট-পালট

বিশ্বকাপে এখনো পর্যন্ত তিন ম্যাচ খেলা বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার দেখে দলের চিন্তা পরিষ্কার হওয়ার উপায় নেই। নাজমুল হোসেন শান্তকে কখনো তিনে, কখনো নামানো হচ্ছে চারে। তাওহিদ হৃদয় মিডল অর্ডারে থিতু হলেও তাকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে। দলের এসব সিদ্ধান্তের দায়ভার পুরোপুরি কোচ ও অধিনায়ককে দিলেন শান্ত।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে তিনে নামানো হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে। তিনি করেন ৩০। চারে নেমে শান্ত ফেরেন ৭ রান করে। হৃদয় সাতে নেমে আউট হন ২৫ বলে ১৩ করে। এর আগের দুই ম্যাচেও ছিল ব্যাটিং অর্ডারের ভিন্নতা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চলতি বছর শুরু থেকে তিনে টানা খেলে দারুণ সফল ছিলেন শান্ত। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ভালো করার পর ঘরের বাইরেও সফল হল তিনি।
এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দলের চাপে তিনে নেমে করেন ৮৯ রান। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চারে গিয়ে সেঞ্চুরি পেলেও শান্তকে তিনে থিতু ভেবেই করা হয়েছে বিশ্বকাপ স্কোয়াড।
হৃদয়ের ব্যাপারটা আরও অবাক করা। অভিষেকের পর থেকে পাঁচ বা ছয়ে খেলেই সফল হচ্ছিলেন তিনি। আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে শুরুর ৭ ওয়ানডেতে পাঁচে নেমে তিন ফিফটি আর একটি ৪৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। ছয়ে তার ব্যাট থেকে আসে ৮২ ও ৫৪ রান।
মিডল অর্ডারে সফল এই ডানহাতিকে বিশ্বকাপে আসে হুট করেই নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে সাতে। লোয়ার মিডল অর্ডারে যেখানে চাহিদা ভিন্ন, ভূমিকা একদম আলাদা।
এই ফাটকায় লাভ হয়নি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় হারের ম্যাচে মন্থর ৩৯ রানের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩ রান করে হৃদয়।
মাত্র ২৪৫ রান করে কিউইদের বিপক্ষে ৮ উইকেটে বড় হারের পর প্রশ্ন উঠেছে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে। দলের হয়ে কথা বলতে এসে এই ব্যাপারে দায় নিতে চাইলেন না শান্ত নিজে, তবে সিদ্ধান্তটা যে খুব পছন্দ নয় বোঝা গেল কথার সুরে, 'এটা (ব্যাটিং অর্ডার) কোচ ও অধিনায়ক বলতে পারবে। আমরা যারা ব্যাট করি তারা জানি কে কোথায় ব্যাট করবে। তবে এটার পেছনের কারণতা কোচ ও অধিনায়ক পরিষ্কার করে বলতে পারবে।'
'দলের জন্য যেকোনো পজিশনে খেলতে প্রস্তুত। চার নম্বরেও রান করেছি। যেটা বললাম পুরোটাই কোচ ও অধিনায়কের বিষয়। তারা যেখানে দিবেন আমি খুশি।'
কোচ ও অধিনায়ক সিদ্ধান্ত নিলেও সেটা কথা বলেই নেন। পেছনের চিন্তাটা এক্ষেত্রে জানা জরুরি। শান্ত যেমন জানালেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনে তিনি না গিয়ে মিরাজ নেমেছেন ডান-বামের চিন্তায়, 'আমার মিরাজের বিষয়টা ডান-বাম করার চেষ্টা করি। নতুন বলে দুইটা বাঁহাতি হয়ে গেলে সমস্যা হয় যেহেতু নিচের দিকে আমাদের বাঁহাতি নেই।'
কিন্তু এই কথা আবার ভুল প্রমাণ হয় আফগানিস্তান ম্যাচের দিকে তাকালে। সেই ম্যাচে বাঁহাতি তানজিদ হাসান আউটের পরও ক্রিজে পাঠানো হয় মিরাজকে। তখন করা হয়নি ডান-বামের চিন্তা।
নিজের কারণ কিছুটা বললেও হৃদয়কে সাতে নামানোর কারণ পরিষ্কার হয়নি। শান্তর অবশ্য মত তারা পারফর্ম করেননি বলেই এত কথা হচ্ছে, 'একটু তো মানিয়ে নিতেই হয়। আমার মনে হয় সবার এই ফ্লেক্সিবিলিটি থাকা দরকার। এমন না যে হুট করেই হয়। সবাই জানে।'
'অবশ্যই হয় (আলোচনা)। যারা যে পজিশনে ব্যাট করে তারা জানে যে আজ কোন পজিশনে খেলবে। যেটা হয়েছে পারফর্ম করছে না দেখেই হয়ত কথা হচ্ছে। এশিয়া কাপে মিরাজ তিনে খেলল, আমি চারে খেললাম একটা জুটি হলো তখন এগুলো নিয়ে খুব বেশি কথা হয়নি। এখানে ঠিক-ভুল কিছু নেই। আমরা রান করতে পারিনি।'
Comments