লড়াকু ওমরজাইয়ের আক্ষেপের ইনিংসে আফগানিস্তানের ২৪৫ রানের পুঁজি
আফগানিস্তান আগের ম্যাচেই বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছিল। ভারত বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে এসে আরেকটি সেঞ্চুরির সুর শুনতে পেল তারা। কিন্তু শেষ তিন বলে কোনো রান আনতে না পেরে আজমতুল্লাহ ওমরজাই শেষমেশ আটকে থাকলেন ৯৭ রানেই। তবে তার লড়াকু ইনিংসেই অলআউট হওয়ার আগে আফগানিস্তান পেল ২৪৪ রানের পুঁজি। অথচ দলীয় ১১৬ রানেই ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা।
শুক্রবার আহমেদাবাদে টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে ধীরেসুস্থে শুরু করে আফগানিস্তান। দেখেশুনে খেলে ধীরে ধীরে রানের গতি বাড়িয়ে ৮ ওভারে ৪১ রান তুলে ফেলে তারা। এরপর চাকা উল্টো ঘুরতে শুরু করে। কেশব মহারাজ দুর্দান্ত ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ তোলান রহমানউল্লাহ গুরবাজকে। ২২ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ২৫ রানের ইনিংস খেলে ফিরে যান গুরবাজ। পরের দুই ওভারেই একই পথ ধরেন আরও দুই আফগান। দশম ওভারে ইব্রাহিম জাদরান আউট হয়ে যান ৩০ বলে ১৫ রান করে। একাদশ ওভারে মহারাজ এসে শিকার করে ফেলেন অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শহিদিকে।
টানা তিন ওভারে উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় আফগানিস্তান। রহমত শাহ ও ওমরজাই মিলে পুনরুদ্ধারের কাজে মন দেন, কিন্তু বেশ মন্থর গতিতে এগিয়ে চলে তাদের জুটি। বেশ টার্ন পেয়ে দুর্দান্ত আঁটসাঁট বোলিংয়ে মহারাজ তাদের ডানা মেলতে দেননি। একশ পেরিয়ে যেতে ইনিংসের অর্ধেক পার হয়ে যায় আফগানদের। ব্যক্তিগত ২৬ রানে আন্দিল ফেলুকওয়ায়োর ভুলে রানআউট হওয়া থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন রহমত। কিন্তু ওই রানেই পরে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান ৪৬ বলের ইনিংস খেলে।
দলীয় ৯৪ রানে রহমতের ফেরার পর ইকরাম আলীখিলও চলে যান ১১২ রানেই। দুই বাউন্ডারিতে ১২ রান এনে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের হাতে ক্যাচ দিয়ে ইকরাম ফিরে গেলে জেরাল্ড কোয়েটজি পান দ্বিতীয় উইকেট। রান যোগ করতেই আরেকটি উইকেট হারিয়ে বসে আফগানিস্তান। মোহাম্মদ নবি ফিরে যান মাত্র ২ রান করেই। ১১৬ রানে ষষ্ঠ উইকেট খুইয়ে ধুঁকতে থাকা আফগান ইনিংসে কিছুটা প্রাণ সঞ্চার হয় পরের জুটিতে।
একপাশে অবিচল থেকে খেলে যাওয়া ওমরজাই ফিফটি পেয়ে যান ৭১ বলে। কিন্তু সঙ্গীর অভাবই পড়ে যায় তার। ১৪ রানের রশিদ খান ফিরে গেলে ভেঙে যায় ৪৪ রানের জুটি। এরপর নূর আহমেদ এসে অপ্রত্যাশিতভাবে তাকে সঙ্গ দেন ৪টি চারে ৩২ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে। তবে ওমরজাই দেড়শর আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় থাকা আফগানিস্তানকে নিয়ে যান একেবারে শেষ ওভারে।
ওমরজাই নিজে তখন ব্যক্তিগত ৯৬ রানে। স্ট্রাইক বদল করে আবার শেষ তিন বলে ফিরে পান স্ট্রাইক। কিন্তু তিনটি বলেই কিছু করতে না পারলে সেঞ্চুরির আক্ষেপে পুড়তে হয় তাকে। ওমরজাই অপরাজিত থাকেন ১০৭ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৯৭ রান করে। শেষ বলে নাভিন উল হকের রানআউটের মাধ্যমে আফগানিস্তানের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে।
দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার কোয়েটজি ৪৪ রানে ৪ উইকেট পান। দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রণ দেখিয়ে বাঁহাতি স্পিনার মহারাজ তার কোটা শেষ করেন ২৫ রানে ২ উইকেট নিয়ে। সমান সংখ্যক উইকেট নিতে খরুচে পেসার লুঙ্গি এনগিদি দেন ৬৯ রান।
Comments