ফাইনালে হারের শোধ তুলে বিশ্বকাপ শুরু নিউজিল্যান্ডের

ব্যাট হাতে ডেভন কনওয়ের তাণ্ডবের পর টিম সাউদি ও মিচেল স্যান্টনারের দারুণ বোলিংয়ে একপেশে ম্যাচ জিতে শুভ সূচনা করল নিউজিল্যান্ড।
ছবি: টুইটার

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে দেখা মিলেছে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার। ফলে সুপার টুয়েলভের উদ্বোধনী ম্যাচে তুমুল উত্তেজনার আশা হয়তো করেছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে তাদেরকে নিরাশই করল আসরের আয়োজক ও শিরোপাধারী অস্ট্রেলিয়া। ব্যাট হাতে ডেভন কনওয়ের তাণ্ডবের পর টিম সাউদি ও মিচেল স্যান্টনারের দারুণ বোলিংয়ে একপেশে ম্যাচ জিতে শুভ সূচনা করল নিউজিল্যান্ড। পাশাপাশি তারা নিল সবশেষ বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের মধুর প্রতিশোধ।

শনিবার সিডনিতে এক নম্বর গ্রুপের ম্যাচে ৮৯ রানের বিশাল ব্যবধানে জিতেছে কিউইরা। কেইন উইলিয়ামসনদের করা ৩ উইকেটে ২০০ রানের জবাবে একদমই লড়াই জমাতে পারেনি অজিরা। বিবর্ণ ব্যাটিংয়ে ১৭.১ ওভারে মাত্র ১১১ রানেই গুটিয়ে যায় অ্যারন ফিঞ্চের দল।

ম্যাচসেরা কনওয়ে ওপেনিংয়ে নেমে ৯২ রানে অপরাজিত থাকেন। মাত্র ৫৮ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৭ চার ও ২ ছক্কা। তার সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে অবশ্য বিস্ফোরক ছিলেন আরেক ওপেনার ফিন অ্যালেন। মাত্র ১৬ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৪২ রানের ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের বড় পুঁজির ভিত গড়ে দেন তিনি। ৩ উইকেট নিতে ২.১ ওভারে পেসার সাউদি দেন মাত্র ৬ রান। ৪ ওভারে ৩ উইকেট নিতে স্পিনার স্যান্টনারের খরচা ৩১ রান।

বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। দুর্ভাগ্যের বলি হয়ে সাউদির বলে বোল্ড হয়ে যান ডেভিড ওয়ার্নার। বল ব্যাটে লাগিয়েছিলেন ঠিকই এই অজি ওপেনার, এরপর তার শরীরে লেগে আবারও ব্যাট ছুঁয়ে অদ্ভুত কায়দায় আঘাত হানে স্টাম্পে। দলীয় ৫ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে ক্যাঙ্গারুদের।

এরপর অধিনায়ক ফিঞ্চ ও মিচেল মার্শ ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিলেও ভক্তদের হতাশ করেন তারাও। ১১ বলে ১৩ রান করে স্যান্টনারকে উইকেট দিয়ে ফেরেন ফিঞ্চ। সাউদিকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে জিমি নিশামকে ক্যাচ দেন ১২ বলে ১৬ রান করা মার্শ।

পাওয়ার প্লেতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে যায় অজিরা। এরপর আর কখনোই ম্যাচে ফিরতে পারেনি তারা। মার্কাস স্টয়নিস ফেরেন গ্লেন ফিলিপসের চোখ ধাঁধানো ক্যাচে। পাখির মতো হাওয়ায় ভেসে বল তালুবন্দি করেন তিনি। স্টয়নিসের পর টিম ডেভিডকেও দ্রুত ফেরান স্যান্টনার। উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ম্যাথু ওয়েডকে টিকতে দেননি লোকি ফার্গুসন।

একপ্রান্ত আগলে থাকা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল থামেন ইশ সোধির বলে বোল্ড হয়ে। ২০ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন তিনি। এরপর অজিদের স্কোর তিন অঙ্কে পৌঁছায় প্যাট কামিন্সের কল্যাণে। তিনি উড়িয়ে মারতে গিয়ে কনওয়ের গ্লাভসে ধরা পড়েন সাউদির বলে। ১৮ বলে ২১ রান করে তিনি আউট হলে থামে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। মাঝে মিচেল স্টার্ক ও অ্যাডাম জ্যাম্পার স্টাম্প উপড়ে নেন ট্রেন্ট বোল্ট।

এর আগে টস জিতে আগে বোলিং করা সিদ্ধান্ত বেছে নেন ফিঞ্চ। তবে তার সেই সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণের দায়িত্বটা যেন নিজের ঘাড়ে নিয়ে নেন অ্যালেন। স্টার্কের প্রথম ওভারেই চড়াও হন ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটার। ১ ছয় ও ২ চারে প্রথম ওভার থেকেই ১৪ রান আদায় করে নেন তিনি।

দ্বিতীয় ওভারে বাউন্ডারি হাঁকানোর উৎসবে যোগ দেন কনওয়েও। দুই ওভার শেষে কিউইদের সংগ্রহ দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ২৯ রান। কামিন্সের পরের ওভারে আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন ফিন। সেই ওভারে একাই নেন ১৬ রান। চতুর্থ ওভারে স্টয়নিসকে ছক্কা হাঁকিয়ে দলীয় সংগ্রহ ৫০ পার করান তিনি।

পরের ওভারের প্রথম বলেই জস হ্যাজেলউড বোল্ড করে দেন অ্যালেনকে। পাওয়ার প্লেতে নিউজিল্যান্ড আনে ৬০ রান। ওয়ান ডাউনে নামা উইলিয়ামসন শক্ত ভিত পেলেও চালিয়ে খেলতে পারেননি। তাতে রান রেট বেশ নেমে আসে। দলীয় প্রথম ৫০ রান করতে কিউইদের ২৩ বল লাগলেও দ্বিতীয় ৫০ ছুঁতে লেগে যায় ৩৮ বল।

১১তম ওভারের প্রথম বলে রাজকীয় ভঙ্গিতে নিজের ফিফটি তুলে নেন কনওয়ে। জ্যাম্পাকে মিডউইকেট দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে এবারের আসরের সুপার টুয়েলভে প্রথম ফিফটির কীর্তি গড়েন তিনি। তবে আক্রমণে ফিরেই জ্যাম্পা শিকার করেন উইলিয়ামসনকে। ২৩ বলে ২৩ রান করে ফেরেন কিউই কাপ্তান।

ফিলিপস বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি দারুণ খেলতে থাকা কনওয়েকে। হ্যাজেলউডকে তুলে মারতে গিয়ে টপ এজের ফাঁদে পড়েন তিনি। আউট হওয়ার আগে করেন ১২ রান। ১৬ ওভার শেষে কিউইদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান।

সেখান থেকে শেষ চার ওভারে ৪৮ রানের ধ্বংসাত্মক অবিচ্ছিন্ন জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে রান পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে যান নিশাম ও কনওয়ে। এক সময় এবারের বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরির সুবাসও জাগান কনওয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৯২ রানেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে।

তবে শেষ ওভারে ঝড়টা ঠিকই তুলেছিলেন নিশাম। ১৪ রান আসে সেই ওভার থেকে। শেষ বলে ছক্কা দিয়ে নিজেদের ইনিংস শেষ করেন নিশাম। মাত্র ১৩ বলে ২৬ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago