ওপেনিং নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রশ্নে সাকিবের বিরক্তি
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশ দল যেন একটা গবেষণাগার। প্রতি ম্যাচেই বাজিয়ে দেখা হচ্ছে নতুন কিছু। যদি কিছু লেগে যায়! নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে চার ম্যাচে দেখা গেছে চারটি আলাদা ওপেনিং জুটি। ওপেনিংয়ে চলতি বছর একমাত্র যিনি ভালো করছিলেন সেই লিটন দাসের নির্দিষ্ট কোন পজিশনই ঠিক নেই। কারণ ব্যাখ্যায় প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান দেখালেন প্রতিক্রিয়া, উত্তর দিলেন বিরক্তিমাখা।
ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওপেন করেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমান। এশিয়া কাপেও মেইক শিফট এই দুই ওপেনারকে দেখা গিয়েছিল। ব্যর্থ হয়ে সাব্বির বাদ পড়েছেন বিশ্বকাপ দল থেকে।
দ্বিতীয় ম্যাচে মিরাজের সঙ্গে ওপেন করতে পাঠানো হয় নাজমুল হোসেন শান্তকে। এরপরের ম্যাচে মিরাজকে বাদ দিয়ে শান্তর সঙ্গে পাঠানো হয় লিটকে। শেষ ম্যাচে আবার ওপেন করেছেন শান্ত ও সৌম্য সরকার।
অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ওয়ার্মআপ ম্যাচে আবার মিরাজকে শান্তর সঙ্গে ফেরানো হয় ওপেনিংয়ে। এই অস্থিরতা অবশ্য চলছে বেশ অনেকদিন ধরে। প্রায় প্রতি ম্যাচেই দেখা মিলছে নতুন ওপেনিং জুটি।
অথচ চলতি বছর ওপেনিংয়ে একাধিক ফিফটি আছে লিটনের। ৪৯, ৩৫ এরকম ইনিংসও আছে। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশি ওপেনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৩২.৮০ (কমপক্ষে ২০০ রান) স্ট্রাইকরেট লিটনের। অথচ গত বিশ্বকাপের পর থেকে এই বিশ্বকাপের আগ তাকে কেবল ৬ ম্যাচে ওপেন করানো হয়েছে। তাতেও তার গড় ২৯.৬৬, স্ট্রাইক রেট ১৪৯.৫৭।
তিনি ছাড়া বাকি আর কারো ব্যাটে মেটেনি এই চাহিদাও। স্বাভাবিকভাবেই লিটনকে ওপেনিংয়ে রেখে তার সঙ্গী খোঁজার কথা বলছিলেন নির্বাচকরা। কিন্তু বিশ্বকাপ প্রস্তুতি শুরুর পর দেখা গেল লিটনের পজিশনই থিতু নয়। তিন, চারেও খেলানো হচ্ছে তাকে। খুব কম করছেন ওপেনিং।
রোববার সংবাদ সম্মেলনে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে সাকিবের পালটা প্রশ্ন, 'আপনার কি মনে হয় লিটন ওপেন করলে আমরা জিতব কিংবা ওপেনার ঠিক হয়ে গেলে আমরা জিতব?'
বাংলাদেশ অধিনায়ককে যখন মনে করিয়ে দেওয়া হয় এই পজিশনে লিটন ছাড়া তো কেউ ভালো করছেন না। তখন অনেকটা রেগে কি প্রশ্নকারীকে উদ্দেশ করে জবাব দেন তিনি, 'আপনি যেভাবে বলছেন সেভাবে আসলে আপনাকে ডিসিশন মেকারের জায়গায় আপনাকে রাখতে হবে।'
এর আগে পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সাকিব বলেছেন স্কোয়াডে থাকা ১৫ জনকে যেকোনো ভূমিকায় নামার জন্য প্রস্তুত করেছেন তারা। কারো নির্দিষ্ট কোন ভূমিকা দেওয়ার পথে যাচ্ছে না দল, যখন যে দায়িত্ব দেওয়া হবে মানিয়ে নিতে হবে ক্রিকেটারদের, 'দেখুন এখানে ১৫ জন খেলতে এসেছে। সবাই তৈরি এবং ফিট। সবাই প্রতিটি পজিশনের জন্যই মানিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য রাখে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই সবাই সে জিনিসটা মানিয়ে নিতে পারবে না। খোলা মনে থাকবে। দলের প্রয়োজনে যাকে যখন যেখানে খেলতে হয়, যে ওভার বল করা লাগে, যে জায়গায় ফিল্ডিং করা লাগে সবাই সেটার জন্য প্রস্তুত থাকবে।'
'আর বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সেই দলগুলোই ভালো করে যাদের মানিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য যত ভালো আছে। আশা করি আমাদের দলের সেই জ্ঞানটা আছে। এবং এই সম্পর্কে সবাই অবগত। যাকে যখন যেখানে লাগবে তার জন্য সবাই প্রস্তুত থাকবে। সেই জায়গায় সবাই প্রস্তুতও আছে। এখান থেকে আমাদের এগারোজনকে বেছে নিতে হবে।'
Comments