প্রকাশ্যে গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের হুমকি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল: ঢাবি নীল দল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। প্রতীকী ছবি: স্টার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো। প্রতীকী ছবি: স্টার

প্রকাশ্যে গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের হুমকি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের প্যানেল নীল দল।

এক বিবৃতিতে নীল দল বলেছে, 'দেশের বিদ্যমান শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্নিত করে রাজনৈতিক অঙ্গনে নৈরাজ্য সৃষ্টির অপ-তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে একটি মহল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নীল দল এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।'

আজ শুক্রবার নীল দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুছ সামাদ এবং ২ যুগ্ম-আহ্বায়কের সই করা বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'এই ডিসেম্বর মাসেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের অনেক বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিষ্ঠান তাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হারিয়েছিল। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশের মধ্য দিয়ে ডিসেম্বর মাসে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। পবিত্র এ মাসের মর্যাদাকে অসম্মানিত করার জন্য ৭১ এর পরাজিত শক্তি ও তাদের দোসররা নানাবিধ অপতৎপরতায় লিপ্ত।'

'২০০৯ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার টানা ৩ বার রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকায় বাংলাদেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এর সুফল জাতি ভোগ করছে। দক্ষতার সঙ্গে করোনা মোকাবিলা এবং উন্নয়ন অগ্রগতি অব্যাহত রাখায় বিশ্ব সম্প্রদায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। পদ্মাসেতু, পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বড় বড় প্রকল্প নির্মাণের মাধ্যমে জনগণের মনে বর্তমান সরকার জায়গা করে নিয়েছে।

অপরপক্ষে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে ২০১৪ সালে ২০০ জনের বেশি মানুষকে হত্যার জন্য দায়ী একটি মহলের নেতিবাচক রাজনীতি, জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা, অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল-ধর্মঘট আর জ্বালাও পোড়াওয়ের মতো জাতি-বিধ্বংসী ভাবমূর্তির বাইরে আগামী নির্বাচনে জনগণের কাছে উপস্থাপনের মতো রাজনৈতিক পুঁজি হাতে নেই। তাই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে সরকার উৎখাতের জন্য এই মহল অপতৎপরতা শুরু করেছে। প্রকাশ্যে গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের হুমকিও তারা প্রদান করছে, যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল', বিবৃতিতে বলা হয়।

এতে আরও বলা হয়, 'গণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র উপায় নির্বাচন। বর্তমান সরকার ২০২৪ সালে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনশৃঙ্খলা ও জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইন আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা-নিষেধ সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে জনসভা করতে কোনো বাধা নেই। একটি রাজনৈতিক দল ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় জনসভার কর্মসূচি দিয়েছে। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছিল। কাজেই এদিনে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যুদ্ধংদেহী পরিস্থিতি তৈরি ৭১ এর নৃশংসতাকে মনে করিয়ে দেয়।'

বিবৃতিতে বলা হয়, 'বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে একটি অগণতান্ত্রিক সরকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থানে শিশুপার্ক নির্মাণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার অনুমতি পাওয়া সত্ত্বেও একটি মহলের জনস্বার্থ বিঘ্ন করে রাস্তায় জনসভা করার অনড় অবস্থানের কারণে ৭ ডিসেম্বর পল্টনে একজন নিরীহ পথচারীর প্রাণহানি ঘটেছে, যা কোনোক্রমেই কাম্য নয়।'

নীল দল বলে, `আমরা আশা করি সবার শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং বিধ্বংসী রাজনীতির পথ পরিহার করে সুষ্ঠুধারার রাজনীতি ফিরে আসবে। জনস্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিধান অনুযায়ী কর্মসূচি পালনের অধিকার ভোগ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানাই।'

'অন্যথায় গণতান্ত্রিক ধারা বাধাগ্রস্ত হলে তা কারো জন্যই মঙ্গলজনক হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ যে কোনো অগণতান্ত্রিক কর্মতৎপরতার বিরুদ্ধে সজাগ থেকেছে। বর্তমানেও যে কোনো ধরনের অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছি। আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিকদের প্রতি নৈরাজ্য ও অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি', বিবৃতিতে যোগ করা হয়।  

Comments

The Daily Star  | English
NSC shop rent scam in Dhaka stadiums

Shop rent Tk 3 lakh, but govt gets just Tk 22,000

A probe has found massive irregularities in the rental of shops at nine markets of the National Sports Council (NSC), including a case where the government receives as little as Tk 22,000 in monthly rent while as much as Tk 3 lakh is being collected from the tenant. 

16h ago