করোনা বাড়ছে, সামনে কঠিন সময়

বিশেষজ্ঞরা ঠিক যেমনটা আশঙ্কা করেছিলেন, করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেশে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৩ হাজার ৩৫৯ জনের শনাক্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই সময়ের মধ্যে ১২ জনের মারা গেছেন।
নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে এ দিন শনাক্তের হার ছিল ১২ দশমিক ০৩ শতাংশ, যেখানে গত ১ জানুয়ারি সংখ্যাটি ছিল ২ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্রের ভাষ্য, উপসর্গ আছে এমন সবাইকে পরীক্ষা করা গেলে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতো।
এই যখন পরিস্থিতি তখন আমাদের অর্থনীতি ও হাসপাতালগুলো বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার আগেই সব ব্যবস্থা নিতে হবে।
এই সমস্যা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্বেগকে আমরা যথার্থ মনে করছি। এখন আমরা তার মন্ত্রণালয় থেকে আশা করি, সব সরকারি হাসপাতালে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও ওষুধ সরবরাহ করে আসন্ন দিনগুলোতে ব্যাপক সংখ্যক রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত থাকবে, যে পরিস্থিতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেও আশঙ্কা করছেন।
গত ১২ জানুয়ারি প্রায় ১৩ শ করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে যেমন হাসপাতালে চাপ বাড়বে তেমনি সেখানে অনেকেরই অক্সিজেনের প্রয়োজন হবে। তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নিশ্চিত করতে হবে যেন কোনো হাসপাতালে উপকরণের সংকট তৈরি না হয়।
সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেলে এখন ২০ হাজার শয্যার ব্যবস্থা আছে তা অপ্রতুল হতে পারে। তাই হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর পাশাপাশি টিকাদান কার্যক্রমকেও জোরদার করতে হবে।
গতকাল ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া নতুন বিধি-নিষেধগুলোর কয়েকটি বাস্তবসম্মত ও সুচিন্তিত ছিল না। পরিবহন খাতের জন্য যে নির্দেশনা ছিল সেটি তার মধ্যে একটি। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সব গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রেখে চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
কিন্তু সব অফিস, কারখানা ও বিপণিবিতান খোলা রেখে এই বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
পূর্বতন অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া নিত্য যাত্রীদের ভোগান্তি দেখেছি, যেখানে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বাড়তি ভাড়া থেকে ফায়দা নেয়। তাই আমরা মনে করি সরকারের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
শিক্ষাখাতে গত দুই বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলতে পারি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিশেষ করে স্কুলগুলো ঢালাওভাবে বন্ধ করে দেওয়া উচিত হবে না। বিশেষজ্ঞদের মত নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবশ্যই যথাযথ পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।
উচ্চ সংক্রমণ হার বিবেচনায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ধরে সরকার সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সর্বোপরি মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভ্যাকসিন নিতে জনগণকে উৎসাহিত করতে হবে।
Comments