জবাবদিহিতা না থাকলে উন্নয়ন প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়তেই থাকবে

আমরা কলামগুলোতে উন্নয়ন প্রকল্পে অতিরিক্ত সময় ও ব্যয় নিয়ে লিখতে লিখতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। মনে হচ্ছে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার হয়ে উঠেছে। এসব অনিয়মের জন্য দায়ী মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও কর্মকর্তাদের প্রতি প্রতিনিয়ত সতর্কবার্তা দিতে থাকা কতটা ক্লান্তিকর, তা আমরা কেবল কল্পনাই করতে পারি।

আমরা কলামগুলোতে উন্নয়ন প্রকল্পে অতিরিক্ত সময় ও ব্যয় নিয়ে লিখতে লিখতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। মনে হচ্ছে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার হয়ে উঠেছে। এসব অনিয়মের জন্য দায়ী মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও কর্মকর্তাদের প্রতি প্রতিনিয়ত সতর্কবার্তা দিতে থাকা কতটা ক্লান্তিকর, তা আমরা কেবল কল্পনাই করতে পারি।

এমনকি প্রধানমন্ত্রীর বারবার অনুরোধ ও হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও মনে হয় না যে বিষয়টির খুব পরিবর্তন হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ত্রুটিপূর্ণ প্রকল্প পরিকল্পনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ত্রুটিপূর্ণ প্রকল্প পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত প্রকল্পের খরচ বাড়ায়।

গত বৃহস্পতিবার একটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ধীরগতি, বারবার মেয়াদ ও খরচ বাড়ানোর ব্যাপারে সমালোচনায় মুখর হয়। কেন ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও গোপালগঞ্জ জোনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রকল্পগুলো সময়মতো বাস্তবায়িত হয়নি এবং কেন প্রকল্পের সময়সীমা বারবার বাড়ানো হয়েছে সে বিষয়ে ওই সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়।

এটা জেনে আশ্চর্য হতে হয় যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কর্মকর্তারা এমন উদ্বেগের ব্যাপারে যথাযথভাবে সাড়া দেননি। দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তারা এটা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন যে, সময়সীমা বাড়ার কারণে ব্যয় বাড়েনি। তাহলে কেন বারবার মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলা হয়? এ সংক্রান্ত তথ্য বলছে, কেবল গত অর্থবছরেই ৩০০টির বেশি প্রকল্প মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেছে। এই অবস্থা মেনে নেওয়া যায় না।

একইসঙ্গে আমরা এটা শুনেও সমানভাবে হতাশ যে, সংসদীয় কমিটি একমাত্র যে ব্যবস্থাটি নিয়েছিল সেটা হলো, ঢাকা জোনের ৯টি অসম্পূর্ণ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর কারণ ব্যাখ্যা করে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে অনুরোধ করা। এমন আর কত প্রতিবেদন জমা নেওয়া হবে? অধিকাংশ প্রকল্প মেয়াদ বাড়িয়ে চলেছে, করদাতাদের সম্পদের অপচয় করছে এবং নাগরিকদের তাদের প্রত্যাশিত সুবিধা থেকে বঞ্চিত করছে।

এখন দরকার জবাবদিহিতা। অন্তহীন প্রতিবেদন লেখার মধ্য দিয়ে যা বেরিয়ে আসবে না। চলতি বছরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পের সময় ও ব্যয় বাড়ার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছিলেন, তা বাস্তবায়নের উপযুক্ত সময় এসেছে। এই জবাবদিহিতা কার্যকরের জন্য যদি জোরালো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে সরকারি অর্থায়নের প্রকল্পগুলোতে বিলম্বের সংস্কৃতির কোনো পরিবর্তন আসবে না। যা বর্তমান বাংলাদেশে স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Sea-level rise in Bangladesh: Faster than global average

Bangladesh is experiencing a faster sea-level rise than the global average of 3.42mm a year, which will impact food production and livelihoods even more than previously thought, government studies have found.

8h ago