বিভ্রান্তি থেকে আস্থা তৈরি হয় না

করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আগামী সপ্তাহগুলোতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়ার হুমকির পাশাপাশি করোনা সংক্রান্ত নতুন বিধিনিষেধের নিষ্প্রভ বাস্তবায়নে আমরা উদ্বিগ্ন।
অফিস, কারখানা, শপিংমলসহ সবকিছু খোলা রেখে অর্ধেক সক্ষমতায় গণপরিবহন চালানো সিদ্ধান্ত জনসাধারণের জন্য কীভাবে সহায়ক হবে তা স্পষ্ট নয়। ছবি: স্টার

করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আগামী সপ্তাহগুলোতে অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়ার হুমকির পাশাপাশি করোনা সংক্রান্ত নতুন বিধিনিষেধের নিষ্প্রভ বাস্তবায়নে আমরা উদ্বিগ্ন।

গত ১৩ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে এ বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়।

পরিবহন খাতে অর্ধেক সক্ষমতায় যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা নিয়ে ইতোমধ্যেই বিভ্রান্তি দেখা গেছে। জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞার প্রথম দিনেই সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি তাদের সদস্যদের পূর্ণ সক্ষমতায় যানবাহন চালানোর নির্দেশ দিয়েছে।

জিজ্ঞেস করা হলে সমিতির প্রতিনিধিরা দাবি করেন, এর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে তারা 'মৌখিক' অনুমতি পেয়েছেন। পুরোদিন পার হলেও মন্ত্রণালয় এ বিষয়টি নিশ্চিত করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি।

আমরা আশ্চর্য না হয়ে পারলাম না যে, সরকারি নির্দেশে কেন বিভ্রান্তি ও দ্বন্দ্ব? কিসের ভিত্তিতেই বা তারা পূর্ণ সক্ষমতায় যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত নিল?

বাস্তবসম্মত নয়, এমন যেকোনো ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে আমরা সরকারকে সতর্ক করেছিলাম। অফিস, কারখানা, শপিংমলসহ সবকিছু খোলা রেখে অর্ধেক সক্ষমতায় গণপরিবহন চালানো সিদ্ধান্ত জনসাধারণের জন্য কীভাবে সহায়ক হবে তা স্পষ্ট নয়।

সরকার নির্দেশনা দিয়ে একদিন পর তা পরিবর্তন করেছে, এমন ঘটনা এটিই প্রথম নয়। সরকারকে প্রায়ই বিভিন্ন প্রভাবশালী গোষ্ঠীর কারণে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা পরিবর্তন করতে দেখা গেছে। ওইসব গোষ্ঠীর মধ্যে সর্বাগ্রে ছিলেন পরিবহন মালিকরা। মহামারি শুরুর পর থেকেই আমরা দেখেছি, যখনই কর্তৃপক্ষের সময়োপযোগী, বাস্তবসম্মত ও দূরদর্শী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল তখনই তারা ভড়কে গেছে। যদি আমরা চাই যে জনসাধারণ এসব নির্দেশনা গুরুত্বের সঙ্গে নেবে, তাহলে সামনের দিনগুলোতে সুনির্দিষ্ট ও ন্যায্য সিদ্ধান্ত নেওয়া সরকারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, বিভ্রান্তি থেকে আস্থা বা অনুবর্তিতা তৈরি হয় না।

এ ছাড়া, আমাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অন্যান্য বিধিনিষেধও মানা হচ্ছে না। বেশিরভাগ রেস্তোরাঁ টিকা কার্ড ছাড়া গ্রাহকদের সেবা না দেওয়ার নির্দেশনা মেনে চলছে না। এই কার্ড কীভাবে সংগ্রহ করতে হবে, অনেক গ্রাহক সেই বিষয়ে জানেন না বলেও মনে হচ্ছে। মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে এটি স্পষ্ট যে, শুধু খেয়ালমাফিক নির্দেশনা এ ক্ষেত্রে সহায়ক হবে না।

ভাইরাসের বিস্তার রোধে কঠোরভাবে বিধিনিষেধ প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি প্রয়োজন। যদি আমরা প্রাণহানি ও আরেকটি লকডাউন (যা অনিবার্যভাবে অর্থনীতি এবং জনগণের জীবিকাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে) এড়াতে চাই, তবে কর্তৃপক্ষ ও জনসাধারণ উভয়কেই বিধিনিষেধ মেনে চলার গুরুত্ব বুঝতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank dissolves National Bank board

Troubled NBL offers cash to journalists in snacks box

After the press conference, the bank officials offered packets with snacks to journalists. However, after taking the packet, journalists noticed that it contained an envelope with Tk 5,000 inside

58m ago