যাত্রীদের ভোগান্তি নিরসন করুন

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও তার অনলাইনে টিকিট বিক্রির অংশীদারের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেওয়ায় শতশত যাত্রী অবর্ণনীয় ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে যাত্রীরা সুবিধাজনক ও মহামারির মধ্যে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ প্রক্রিয়া অনলাইনে টিকিট কাটতে পারছেন না। সাধারণত বিমানের ওয়েবসাইট কিংবা অন্যান্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে টিকিট সহজলভ্য হলেও এই মুহূর্তে এই উৎসগুলো থেকে টিকিট কাটা যাচ্ছে না। ভোক্তাদেরকে টিকিট সংগ্রহের জন্যে সশরীরে বিমানের বিক্রয়কেন্দ্রে যেতে হচ্ছে, যেটি একইসঙ্গে সময়সাপেক্ষ এবং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
অনলাইনে টিকিট বিক্রির জন্যে বিমানের একমাত্র পরিবেশক ট্রাভেলশপ লিমিটেডের সঙ্গে সরকারি উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থাটির মতানৈক্য দেখা দিয়েছে। ফলে ট্রাভেলশপ বিমানকে সেবা দেওয়া স্থগিত রেখেছে। বিমানের এমডি ও সিইওর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ট্রাভেলশপ 'বিভিন্ন পর্যায়ে, বারবার প্রত্যাশা অনুযায়ী সব ধরনের কার্যক্রম চালু করতে ব্যর্থ হয়।' অবশেষে ১০ আগস্ট হঠাৎ করে তারা বিমানকে 'সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অনৈতিকভাবে' সেবা দেওয়া বন্ধ করে দেয় এবং মানুষের মনে 'বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে।'
তার বক্তব্য খণ্ডন করে ট্রাভেলশপের চিফ অপারেটিং অফিসার বলেন, প্রতিষ্ঠানটি গত ১৭ মাসে বিমানের কাছে কমপক্ষে ২০টি চিঠি পাঠিয়ে তাদের পাওনা টাকা চেয়েছে, যার মূল্যমান ৩৭ লাখ টাকা। বিমান দেনা পরিশোধ তো দূরের কথা, এমনকি তাদের চিঠির উত্তরও দেয়নি। এ কারণে ট্রাভেলশপ বাধ্য হয়েছে বিমানকে দেওয়া সেবাগুলো স্থগিত রাখতে।
নেপথ্যের কারণ যাই হোক না কেন, আমাদের জাতীয় এয়ারলাইনসের যাত্রীরা এই দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে যে ধরনের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং খুবই লজ্জাজনক। কর্তৃপক্ষের উচিত জরুরিভাবে তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করা, কে এখানে সত্য বলছে এবং কোন পক্ষ মিথ্যে বলছে, নাকি উভয় পক্ষেরই দোষ আছে।
এ ছাড়াও, তদন্ত চলাকালে যাত্রীদের এ ধরনের দুর্দশার মধ্য দিয়ে যেতে এবং স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়ে সশরীরে বিমানের টিকিট কিনতে বাধ্য করা উচিত নয়। তাই আমরা সুপারিশ করছি বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিমানের টিকিট অন্য কোনো বিকল্প বা অস্থায়ী উপায়ে অনলাইনে বিক্রি করার। এই মুহূর্তে দেশের ই-কমার্স খাত অনেক এগিয়ে যাচ্ছে এবং ডিজিটাল সেবার বদৌলতে প্রায় সব ধরনের লেনদেন অনলাইনে করা যায়। এই অচলাবস্থা চলতে দেওয়া যায় না।
ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান
Comments