ই-কমার্সে প্রতারিতদের রিফান্ড প্রক্রিয়ায় আবারও হোঁচট

যেসব ই-কমার্স গ্রাহক মূল্য পরিশোধ করার পরও পণ্য হাতে পাননি, তাদের টাকা ফেরত পাওয়া বা রিফান্ড দেওয়ার প্রক্রিয়াটি গতকাল আবারও হোঁচট খেয়েছে।

সচিবালয়ে অংশীজনদের সঙ্গে এক বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গতকাল গ্রাহক ও বিক্রেতাদের একটি তালিকা চেয়েছে।  যেসব পেমেন্টের বিপরীতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, সেগুলোর বিস্তারিত তথ্যও চেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংক ৬টি পেমেন্ট গেটওয়েকে নির্দেশ দেয় আইনি জটিলতা নেই এরকম পেমেন্টগুলো ফিরিয়ে দিতে। তবে সেবাদাতারা এ বিষয়টি জানতেন না।

বৈঠকের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, 'কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুরোধে আমরা আজ এই তালিকাটি চেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি পাঠাব।'

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে বলা হয়েছে ৭ দিনের মধ্যে এই তালিকা দিতে।

তবে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলার সময় শফিকুজ্জামান কবে নাগাদ ভোক্তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে পারেননি।

অসংখ্য অভিযোগের ভিত্তিতে জুলাই মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক ই-কমার্স পেমেন্টের ব্যবস্থাপনার জন্য এসক্রো সেবা চালু করে। অক্টোবরের শেষের দিকে এসক্রো অ্যাকাউন্টে আটকে থাকা ৫১২ কোটি টাকা গ্রাহকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এসক্রো হচ্ছে একটি তৃতীয় পক্ষ, যারা এক পক্ষ থেকে আরেক পক্ষের কাছে স্থানান্তরের আগে পেমেন্ট সাময়িকভাবে আটকে রাখে। উভয় পক্ষ তাদের চুক্তির শর্ত পূরণ করার আগ পর্যন্ত এসক্রো সার্ভিস অর্থ আটকে রাখে।

এই সিদ্ধান্তের পর থেকেই সরকারি সংস্থাগুলো একে অপরের কাছে চিঠি পাঠিয়ে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে মতামত ও ভেটিং আদানপ্রদান করছেন।

জুলাই মাসের আগে করা পেমেন্ট প্রসঙ্গে এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, কিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মালিকরা সেগুলো (তহবিল) তছরুপ করেন, কারণ তখন এসক্রো ব্যবস্থা চালু ছিল না।

ইভ্যালি, আলেশা মার্ট, ধামাকা ও ই-অরেঞ্জ সহ বেশকিছু ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভোক্তা ও বিক্রেতারা ঠিক কত টাকা পান, সে পরিমাণটি এখনও জানা যায়নি। একটি আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, এর পরিমাণ কমপক্ষে ৩ হাজার কোটি হতে পারে।

ইতোমধ্যে ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নং (ইউবিন) এর নিবন্ধন প্রক্রিয়াতেও বিলম্বের আশংকা দেখা যাচ্ছে।

জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য ইকমার্স ও এফকমার্স (ফেসবুক কমার্স) প্রতিষ্ঠানগুলোর ইউবিন নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে।

প্রাথমিকভাবে, এ মাসে এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান হিসেবে কর্মরত শফিকুজ্জামান জানান, তাদের আরও যাচাই বাছাই করতে হবে এবং এ জন্য আরও ১ মাস সময় লাগবে। উল্লেখ্য, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এই সেলটি গঠন করেছিল শুধুমাত্র ই-কমার্স সংক্রান্ত বিষয়ের দেখভাল করার জন্য।

Comments

The Daily Star  | English

Commercial banks’ lending to govt jumps 60%

With the central bank halting direct financing by printing new notes, the government also has no option but to turn to commercial banks to meet its fiscal needs.

11h ago