গয়না শিল্পের সুদিন ফিরছে ঝিনাইদহে

ছবি: আজিবর রহমান

করোনা মহামারির কারণে তৈরি হওয়া দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে ঝিনাইদহের ইমিটেশন বা 'সিটি গোল্ড' গয়না শিল্প। ঝিনাইদহের  মহেশপুর উপজেলার প্রায় ১০ হাজার পরিবার সুদিনের দেখা পাচ্ছে এই শিল্পের কারণে।

জেলায় এই ধরনের পণ্য তৈরির প্রথম কারখানা মিলন সিটি গোল্ড। ২০০৪ সালে মহেশপুরে প্রতিষ্ঠার পর থেকে মালিক রাশেদুন্নবী মিলন সাফল্যের সঙ্গে কারখানাটি পরিচালনা করে আসছেন।

কারখানাটি ২০০৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে প্রায় ৬০০ জন শ্রমিক নিয়োগ দেয়। ধীরে ধীরে ধাতব শিল্পে অভিজ্ঞতা অর্জন করার পর শ্রমিকরা ওই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব কারখানা স্থাপন করতে শুরু করেন।

মহেশপুরে বর্তমানে ২৩টি ইমিটেশনের গয়নার কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় কানের দুল, হার, চুড়ি, আংটি, ব্রেসলেট ও অন্যান্য গয়না তৈরি করা হয়।

আমিন সিটি গোল্ড ফ্যাক্টরি নামের একটি কারখানার মালিক আমিনুর রহমান জানান, স্থানীয় ইমিটেশন গয়না শিল্পের কারণে মহেশপুর সমৃদ্ধ হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'আমরা ভালোই দিন কাটাচ্ছিলাম। কিন্তু, মহামারির কারণে সময় ভালো যাচ্ছিল না। করোনা সংক্রমণ রোধে বারবার বিধিনিষেধ আরোপ এবং অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।'

তবে, লকডাউন তুলে দেওয়ার পর থেকে এই শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে।   

মহেশপুরের আরেকটি কারখানার মালিক শহীদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, তিনি ১২ বছর ধরে ইমেটশন শিল্পের সঙ্গে জড়িত।

তিনি বলেন, 'মহামারির কারণে আমরা যেসব পরিকল্পনা নিয়েছিলাম, সেগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আমরা আবার কাজ শুরু করেছি।'

নওদাগা গ্রামের বাসিন্দা সীমা খাতুন মিলন সিটি গোল্ডে কাজ করছেন ৭ বছর  ধরে। মহামারির আগে তিনি বাড়িতে ইমিটেশনের কানের দুল বানাতেন এবং কারখানায় সেগুলো বিক্রি করে মাসে প্রায় ৬ হাজার টাকা আয় করতেন। কিন্তু, দেশজুড়ে করোনা মহামারি আঘাত হানার পর, তার আয় মাসে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার টাকায় নেমে আসে।

তবে, এখন তার উপার্জন আবার বেড়েছে।

একই গ্রামের গৃহবধূ রিমা খাতুনও একই কথা জানান।

তিনি বলেন, 'মহামারির মধ্যে কাঁচামালের ব্যয় বাড়ার কারণে মুনাফা কম ছিল।  তবে বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার পর ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।'

জলিলপুর বাজারের ইত্যাদি স্টোরে ইমিটেশন গয়নার কাঁচামাল বিক্রি হয়।  দোকানটির মালিক শরিফুল ইসলাম জানান, লকডাউনের কারণে দাম অনেক বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু, এখন দাম কমছে।

স্থানীয় ইমিটেশন জুয়েলারি মেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি রাশেদুন্নবী মিলন জানান, ২০২০ সালের মার্চ মাসে দেশে মহামারি  শুরুর আগ পর্যন্ত এটি অত্যন্ত লাভজনক একটি ব্যবসা ছিল। কিন্তু, পরে ভারত ও চীন থেকে আমদানি ব্যয় বাড়ার কারণে কাঁচামালের দাম বেড়ে যায়। ফলে মহামারি পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় ব্যবসা প্রায় ৭০ শতাংশ কমে যায়।

তবে, এখন ব্যবসা আবার আগের মতো চলতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।

অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম  

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh bank buys dollar

BB buys $313m more from 22 banks

Bangladesh Bank purchased another $313 million from 22 commercial banks in an auction yesterday, reacting to the sharp drop in the US dollar rate.

4h ago