লকডাউনে চাকরি হারিয়েছিলেন ৩ খাতের ৮৭ শতাংশ কর্মী

করোনা মহামারি রোধে লকডাউনে চলাকালে পরিবহন, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও খুচরা পণ্য বিক্রি খাতে যুক্ত একটি বড় অংশ কর্মহীন হয়ে পড়েছিলেন। দীর্ঘ দিন আয় না থাকায় অনেকের জমানো অর্থও শেষ হয়ে যায়।
একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে, ২০২০ ও ২০২১ সালের লকডাউনে সম্মিলিতভাবে এই খাতগুলোতে কর্মহীনতার হার ছিল ৮৭ শতাংশ। ৩টি খাতের মধ্যে পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ ৯৫ শতাংশ মানুষ কাজ হারিয়েছিলেন। খুচরা পণ্য বিক্রি ও হোটেল রেস্তোরাঁ খাতে এই হার ছিল ৮৩ শতাংশ করে।
ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নিজস্ব ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়।
বিলস ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত 'বেসরকারি খাতের কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা ও চাকরির নিরাপত্তা: করোনাভাইরাস মহামারির অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা' শিরোনামে গবেষণাটি পরিচালনা করে।
সংস্থাটির উপপরিচালক (গবেষণা) ম. মনিরুল ইসলাম গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, 'চাকরি হারানো কর্মীদের মধ্যে ৭ শতাংশ এখনো কোনো কাজ খুঁজে পাননি।'
উল্লেখিত ৩ খাতে সম্মিলিতভাবে ৮১ শতাংশ আয় কমে গেছে। সর্বোচ্চ ৯৬ শতাংশ আয় কমে পরিবহন খাতে এবং বাকি ২ খাতে ৮৩ শতাংশ আয় কমেছে।
স্বাভাবিক অবস্থায় একজন কর্মীর গড় মাসিক আয় ছিল ১৩ হাজার ৫৭৮ টাকা, যেটি লকডাউনের সময় ২ হাজার ৫২৪ টাকায় নেমে আসে। লকডাউনের পর আয় বেড়ে ১২ হাজার ৫২৯ হয়েছে বলে জানান মনিরুল।
তিনি আরও জানান, লকডাউনের সময় খণ্ডকালীন চাকরির হার ২১৫ শতাংশ বেড়ে যায়। ২০ শতাংশ কর্মী তাদের সম্পত্তি বিক্রি করে দেন, খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দেন এবং আর্থিক সংকটের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য তাদের সন্তানদের কাজ করতে পাঠান।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, ৯০ শতাংশ কর্মীদের পরিবার ঋণ নিয়েছে এবং লকডাউনের সময় তাদের সঞ্চিত অর্থ কমেছে।
২০২০ ও ২০২১ সালে জনসাধারণের চলাচলের ওপর দেশব্যাপী বিধিনিষেধ আরোপের পর এই ৩ খাতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছিল। এ কারণে সমীক্ষায় এই ৩ খাতকে বিবেচনা করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের বক্তারা বেসরকারি খাতের সব কর্মীদের জন্য একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ডাটাবেস তৈরির সুপারিশ করেন। এ ছাড়া, তারা বেসরকারি খাতের কর্মীদের জরুরি প্রয়োজনে বেকার ভাতা দেওয়ার নীতিমালা তৈরি করার সুপারিশও করেন।
অন্যান্যদের মধ্যে বিলসের চেয়ারপারসন আমিরুল হক আমিন ও পরিচালক কোহিনুর মাহমুদ ও নাজমা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।
Comments