দেয়ালসজ্জা

সাজানো-গোছানো ঘর অতিথির সামনে পরিবারের সদস্যদের সহজ ও আন্তরিক করে তোলে। পরিচয় দেয় রুচিশীলতার। বাড়িয়ে দেয় সামাজিক সম্মান। আর শূন্য ঘরের দেয়াল যেন ঘরের পরিবেশকেই নিরানন্দ করে তোলে। তাই ঘর সাজানোর প্রথম উদ্যোগ হিসেবে বেছে নিতে পারেন ঘরের দেয়ালকে।

সাজানো-গোছানো ঘর অতিথির সামনে পরিবারের সদস্যদের সহজ ও আন্তরিক করে তোলে। পরিচয় দেয় রুচিশীলতার। বাড়িয়ে দেয় সামাজিক সম্মান। আর শূন্য ঘরের দেয়াল যেন ঘরের পরিবেশকেই নিরানন্দ করে তোলে। তাই ঘর সাজানোর প্রথম উদ্যোগ হিসেবে বেছে নিতে পারেন ঘরের দেয়ালকে। এক টুকরো দেয়াল রাঙিয়ে নিয়ে ঘর সাজানোর কাজ শুরু করতে পারেন। বেছে নিতে পারেন বসার ঘরের বা শোবার ঘরের মাঝের দেয়ালটি। প্রথমেই নির্বাচিত দেয়ালের মেঝেতে কাপড় বিছিয়ে নিন। যাতে দেয়াল রাঙাতে ঘরের মেঝে অপরিষ্কার না হয়ে পড়ে। এ কারণে দেয়াল রঙ করা অনেকের কাছেই বেশ ঝামেলাপূর্ণ মনে হতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে রঙ করার সময় ঝরা রঙ যেন কাপড়ের ওপর পড়ে। শুকনো দেয়াল রঙ করার সময় প্রায় তিন সেন্টিমিটার পুরু করে রঙ লাগাবেন। মনে রাখবেন, আপনি যদি রঙ দিয়েই দাগ ফেলে কোনো আবহ তৈরি করতে চান, তাহলে রঙ শুকানোর আগেই তা করে নিতে হবে। এ কাজে আপনি ব্যবহার করতে পারেন চিরুনি, টিস্যু, স্পঞ্জ কিংবা বিভিন্ন আকারের রঙ করার ব্রাশ। দেয়াল সাজাতে পারেন আঁকাবাঁকা, এলোমেলো, ডানে-বাঁয়ে বা ওপর-নিচে রেখা টেনে। করতে পারেন হালকা গাঢ় রঙের নজরকাড়া ব্যবহার।


আগে থেকেই টেক্সচার করা রঙও বাজারে আছে। শুকনো দেয়ালে বিশেষ ব্রাশ দিয়ে লাগিয়ে নিলেই হলো। ফলে রঙ করে আবার টেক্সচার করার দরকার পড়ল না। আবার কৌশল খাটিয়ে শুধু রঙ করেই টেক্সচার আনা যায়। যেমন- কাঠের রঙের আবহ আনতে রঙের ওপর বার্নিশ ব্যবহার করতে পারেন। ভাবছেন ভাড়াবাড়িতে রঙ করে কী হবে ছাই! আজ আছি তো কাল নেই!! সেজন্যও উপায় আছে। রঙ করার ঝামেলা করতে না চাইলে মাপমতো দেয়াল সাজানোর কাগজ বা ওয়ালপেপার নিয়ে আসুন। তাতে আলাদা করে রং করা বা টেক্সচার তৈরি করতে হলো না। রেডিমেড টেক্সচার বা

রঙ বেছে নিয়ে ঘর সাজালেন। ওয়ালপেপার বড় বড় রোলে বা টাইলসের মতো খণ্ডে খণ্ডে পাওয়া যায়, যা ঝুলিয়ে বা জোড়া দিয়ে বা আঠা দিয়ে দেয়ালে লাগানো যায়। রকমফের অনুযায়ী ওয়ালপেপার লাগানোর নিয়মও আলাদা। ওয়ালপেপার লাগানোর সাধারণ হিসাব হলো দেয়ালের মাপ নেয়া, মাপমতো কাগজ কিনে আনা, তারপর সেগুলো দেয়ালে ভালোভাবে আঠা দিয়ে লাগানো। শুধু দেয়ালের রঙ বা কাগজের আলপনায় যদি মন না ভরে, তাহলে সাজান ব্যতিক্রমী সৃজনশীল কোনো উপায়ে। বেছে নিন সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও কম খরচে দেয়ালে সাজিয়ে তাক লাগানোর উপায়।


প্রথাগত পদ্ধতিতে দেয়াল সাজাতে তাকের আকার বা শেইপ একটু বদলে দিন। নিত্যদিনের প্রিয়পাঠের বই থেকে বেছে নিন উজ্জ্বল মলাটের বইগুলো। শর্ত হলো ‘দৈর্ঘ্যে প্রস্থে সমান হবে টানা’। তারপর রঙিন লাইনিং করে দিন খোলামেলা দেয়ালটিকে। তাছাড়া দেয়ালে পিন গেঁথে লাগাতে পারেন নানা আকারের বর্ণিল প্লেট। ঘরে আলোর প্রতিফলন আনতে লাগাতে পারেন নানান আকারের আয়না। তাছাড়া অনেকগুলো ঘড়ি টানিয়ে বিভিন্ন দেশের সময় নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন। দেয়াল সাজবে দেখার মতো করেই! দেয়ালে রং-বেরঙের কাগজ, আলপনা স্টিকার বা প্রজাপতি লাগানো যায়। আর ছোট-বড় ছবি ফ্রেমে বাঁধিয়ে দেয়াল সাজানোর উপায় তো হাতেই থাকছে।
শিশুর ঘরের দেয়ালে রঙিন বর্ণমালা লাগিয়ে দেয়াল সাজানো যায়। বিভিন্ন আকারের টুকটুকে লাল গাঢ় গোলাপি আর মিষ্টি হলুদের বর্ণমালায় সাজানোর কাজ তো হবেই, পাশাপাশি শিশুর অ আ ক খ শেখার পাঠও জমবে ভালো। যাকে বলে এক ঢিলে দু’পাখি শিকার। আর হ্যাঁ, পাশাপাশি শিশুর নিজ হাতে আঁকা মাস্টারপিসগুলোও বাঁধিয়ে ঝুলিয়ে দিতে পারেন। আমাদের দেশের আবহাওয়ার কারণে ঘরে প্রচুর ধুলোবালি আসে। ঘরের দেয়াল তাই নিয়মিত পরিষ্কার করা চাই। শোপিস বা আয়না মুছতে হবে নিয়মিত। দেয়ালে ঝোলানো ভারী শোপিস বা হেলানো তাকের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা দরকার। যাতে কোনোভাবে কাত হয়ে বা খুলে পড়ে ঘরের কেউ যেন আহত না হয়। বিশেষ করে শিশুদের ব্যাপারে সবসময় বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে।
 খালেদা লাবনী
ছবি : শাহরিয়ার কবির হিমেল

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh Bank dissolves National Bank board

Bangladesh Bank again dissolves National Bank board

The bank’s sponsor director Khalilur Rahman made the new chairman

2h ago