দর্শক শূন্য মাঠে পর্দা উঠল অলিম্পিকের

আতশবাজি, লেজার শো, মনোরম ডিসপ্লে সবই ছিল। কিন্তু উপভোগ করার জন্য পর্যাপ্ত দর্শকই ছিল না মাঠে। তাতে পুরো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটাই যেন হয়ে গেল ফ্যাকাসে। কিন্তু তারপরও 'গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে'র উদ্বোধনটা হলো দারুণভাবেই।

আতশবাজি, লেজার শো, মনোরম ডিসপ্লে সবই ছিল। কিন্তু উপভোগ করার জন্য পর্যাপ্ত দর্শকই ছিল না মাঠে। তাতে পুরো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটাই যেন হয়ে গেল ফ্যাকাসে। কিন্তু তারপরও 'গ্রেটেস্ট শো অন আর্থে'র উদ্বোধনটা হলো দারুণভাবেই।

করোনাভাইরাসের কারণে এবারের অলিম্পিক আয়োজন করাই ছিল বিশাল চ্যালেঞ্জিং। তার টোকিওতে এখন জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে। তাই জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বেশ কঠিনই ছিল আয়োজকদের জন্য। স্বাভাবিকভাবেই অনেক বিধিনিষেধ থাকার প্রভাব পড়েছে অলিম্পিকে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে মাঠে ছিলেন জাপানের সম্রাট নারুহিতো। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ আসরের উদ্বোধন করেন তিনি। মার্কিন ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ উপস্থিত ছিলেন স্টেডিয়ামে। এছাড়াও আরও বিশেষ অতিথি উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের মঞ্চে।

বিদেশি দর্শক আগেই নিষিদ্ধ করেছিল আয়োজকরা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় সপ্তাহ খানেক স্থানীয় দর্শকদের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করে তারা। তবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে হাজারের মতো ভিআইপি উপস্থিত ছিলেন মাঠে। অথচ স্টেডিয়ামের ধারণ ক্ষমতা ৬৮ হাজার। তবে স্টেডিয়ামের বাইরে ছিল হাজারো ভক্তের ভিড়।

প্রতিটি দেশের অ্যাথলেটদের মার্চপাস্টে অংশগ্রহণই অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ। কিন্তু এবার আগের মতো সে জমকালো ভাবটা ছিল না। কারণ অলিম্পিক প্যারেডে অ্যাথলেটদের উপস্থিতি ছিল ঐচ্ছিক। আর কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৬ জন। তাই খুব কম দেশেরই সকল অ্যাথলেট মার্চপাস্টে অংশ নেয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরদিনই যে সকল অ্যাথলেটদের ইভেন্ট রয়েছে তাদের অনুষ্ঠানে না থাকার অনুরোধ করা হয়। জাপানি বর্ণমালা ক্রম অনুসারে মাঠে প্রবেশ করে দেশগুলো।

অলিম্পিক মশাল কে জ্বালাবেন তা অন্যান্য অলিম্পিকগুলোতে আগেই জানা গেলে এবার সেটা গোপন রাখা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী জাপানি টেনিস তারকা নাওমি ওসাকা মশাল জ্বালানোর গৌরব অর্জন করেন। চলতি বছরের ২৫ মার্চ ফুকুশিমায় এর যাত্রা শুরু হয়। ৯ জুলাই টোকিওতে পৌঁছায়। মাঝে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ এটা বহন করে।

অনুষ্ঠান শুরুর আগে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) কর্তৃক অলিম্পিক সম্মাননায় ভূষিত করা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশের ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত ড. ইউনূসকে 'ক্রীড়া উন্নয়নে তার বিস্তৃত কাজ'-এর জন্য সম্মানিত করে আইওসি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুটা আতশবাজি দিয়ে শুরু হয়। এরপর আকর্ষণীয় লেজার শোর পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠানে পারফর্ম করেন উপস্থিত শিল্পী ও কলা-কুশলীরা। জাপানের শিল্প-সংস্কৃতিই তুলে ধরেন পারফরমরারা। মাঝে করোনাভাইরাসে পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া মানুষদের জন্য ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

জাপানের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে এবারের আসরের পর্দা ওঠে। এবারের আসরে ৩৩টি খেলার মোট ৫০টি ডিসিপ্লিনে অংশ নিচ্ছে ২০৭ দেশের প্রায় সাড়ে ১১ হাজার ক্রীড়াবিদ। লড়বেন ৩৩৯টি স্বর্ণ পদকের জন্য। আসরের পর্দা নামবে আগামী ৮ আগস্ট।

বাংলাদেশ থেকে এবারের অলিম্পিকে অংশ নিচ্ছেন ৬ জন অ্যাথলেট। আর্চারিতে দিয়া সিদ্দিকী ও রোমান সানা, শুটিংয়ে আব্দুল্লাহ হেল বাকি, সাঁতারে জুনায়না আহমেদ ও আরিফুল ইসলাম এবং অ্যাথলেটিক্সের অংশ নেবেন মোহাম্মদ জহির রায়হান। টোকিওতে অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পতাকা বহন করেন সাঁতারু আরিফুল ইসলাম।

Comments

The Daily Star  | English

Hats off to grassroots women torchbearers

Five grassroots women were honoured at the seventh edition of the Unsung Women Nation Builders Award-2023 yesterday evening for their resilience and dedication that empowered themselves and brought about meaningful changes in society.

3h ago