অনুমিত ছকেই আজ বিসিবি নির্বাচন

প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় কয়েকজন নির্বাচিত হয়ে গেছেন আগেই। নির্বাচনের দুই-একদিন আগেও কয়েকজনের সরে দাঁড়ানোয় কারা নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন, সেই আভাসও স্পষ্ট। এমন বাস্তবতায় চলছে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন।
বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বারবার বলছিলেন, তিনি চান নতুন মুখ। কিন্তু খুব বেশি নতুন মুখের দেখা নেই এবারের বিসিবি নির্বাচনে। আগের দুইবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেলেও এবার অবশ্য নির্বাচন করেই বোর্ড পরিচালক হতে হবে বিসিবি সভাপতিকে।
কিন্তু তার নির্বাচিত হয়ে পরিচালক হওয়া এবং পরে নির্বাচিত পরিচালকদের ভোটে ফের সভাপতি হওয়া এক রকম নিশ্চিতই।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বোর্ড রুমে সকাল ১০টায় শুরু হয়েছে ভোট গ্রহণ। চলবে বিকাল ৫টা পর্যন্ত। ভোটের পর গণনা শেষে আজই ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হবে। এবার ১৭১ ভোটারের মধ্যে ভোট দিতে পারবেন ১২৭ জন। বাকিদের ক্যাটাগরিতে একাধিক প্রার্থী না থাকায় হচ্ছে না ভোট।

বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে থাকবেন ২৫ পরিচালক। ২৩ জন আসছেন নির্বাচনি প্রক্রিয়ায়। বাকি দুজন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মনোনয়নে। সেখানে ইতোমধ্যে চলে এসেছেন আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি ও জালাল ইউনূস।
সবচেয়ে আকর্ষণীয় ক্যাটাগরি-২। ঢাকা মেট্রোপলিটনের ১২ ক্লাব প্রতিনিধি এই ক্যাটাগরিতে থেকে নির্বাচিত হয়ে পরিচালক হন। তারাই মূলত পরিচালনা করেন বোর্ড। এখানে বর্তমান সভাপতিসহ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন ১৬ জন। ৫৭ ভোটার এই ১৬ জন থেকে ১২ জন বেছে নেওয়ার কথা। কিন্তু নির্বাচনের আগের রাতে সরে দাঁড়িয়েছেন মোহামেডান থেকে প্রতিনিধি হয়ে আসা মাসুদুজ্জামান। ব্যালটে তার নাম থাকলেও কার্যত প্রতিদ্বন্দ্বী এখানে এখন ১৫ জন।
নাজমুল হাসান শুরু থেকেই বলে আসছেন এবার তার কোন প্যানেল নেই। কে কার লোক না দেখে যোগ্যদেরই বেছে নেওয়ার আহবান তার। তবে গত সোমবার ঢাকার ক্লাব প্রতিনিধিদের আয়োজনে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে নৈশভোজে তার বলয়ের কাউন্সিলরদের উপস্থিতি বুঝিয়ে দেয়, কারা আসতে যাচ্ছেন নতুন বোর্ডে।
দুজন সরে দাঁড়ানোয় ঢাকা বিভাগে হঠাৎ উত্তেজনা গায়েব
শেষ মুহূর্তে দুজন সরে দাঁড়ানোয় উত্তাপহীন হয়ে গেছে ঢাকা বিভাগের দুটি পদের নির্বাচন। ঢাকা বিভাগ থেকে বোর্ড পরিচালক হতে লড়াইয়ে ছিলেন খালিদ হোসেন, তানভীর আহমেদ টিটু (নারায়ণগঞ্জ), নাঈমুর রহমান দুর্জয় (মানিকগঞ্জ) ও সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু (কিশোরগঞ্জ)।
নির্বাচনের দুদিন আগে সরে দাঁড়ান খালিদ হোসেন, আগের দিন সরে যান আশফাকুল ইসলাম টিটু। ব্যালটে তাদের নাম থাকলেও নাঈমুর রহমান দুর্জয় ও তানভীর আহমেদ টিটুর নির্বাচিত হওয়া এখন কেবল আনুষ্ঠানিকতা।
আঞ্চলিক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে ক্যাটাগরি ১-এর বেশিরভাগ পদেই হচ্ছে না নির্বাচন। ১০টি পদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ, খুলনা বিভাগ, রংপুর বিভাগ, সিলেট বিভাগ ও বরিশাল বিভাগের সাত পদে নেই কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী। বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন সিলেট বিভাগ থেকে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে আকরাম খান, আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন। খুলনা বিভাগের দুটি পদে আছেন-শেখ সোহেল ও কাজী ইনাম আহমেদ। বরিশাল থেকে আলমগির হোসেন আলো এবং রংপুর বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা থেকে আনোয়ারুল ইসলাম।
তবে নির্বাচন হবে রাজশাহী বিভাগে। একটি পরিচালক পদের জন্য লড়বেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট (রাজশাহী) ও সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী (পাবনা)। ৯ জন কাউন্সিলরের ভোটে এদের একজন নির্বাচিত হবেন।
একমাত্র উত্তেজনা যে ক্যাটাগরিতে
উত্তাপহীন পুরনো ছকে বাধা নির্বাচনে একমাত্র উত্তাপ দেখা যাবে ক্যাটাগরি-৩- এ। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি, সাবেক ক্রিকেটার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির নিয়ে এখান থেকে একটি পরিচালক পদের জন্য ভোটে আছেন সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান প্রভাবশালী পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নির্বাচনে নেমেছেন তারই এক সময়ের কোচ ও বিসিবির অনেক পদে কাজ করা নাজমুল আবেদিন ফাহিম। ৪৩ জন ভোটার এই দুজনের মধ্য থেকে বেছে নেবেন একজনকে।
যারা আছেন নির্বাচনে
ক্যাটাগরি দুইয়ে প্রার্থীরা- নাজমুল হাসান (আবাহনী লিমিটেড), গাজী গোলাম মর্তুজা (গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স), নজিব আহমেদ (শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব), মাহবুব উল আনাম ও মাসুদুজ্জামান (মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব- তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন তবে ব্যালটে তার নাম থাকবে), ওবায়েদ রশিদ নিজাম (শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব), সাইফুল ইসলাম ভূঁইয়া (ওল্ড ডিওএইচএস স্পোর্টস ক্লাব), সালাহ উদ্দিন চৌধুরী (কাকরাইল বয়েজ ক্লাব), ইসমাইল হায়দার মল্লিক (শেখ জামাল ক্রিকেটার্স), এনায়েত হোসেন (আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব), ফাহিম সিনহা (সূর্য তরুণ ক্লাব), ইফতেখার রহমান (ফেয়ার ফাইটার্স স্পোর্টিং ক্লাব), মনজুর কাদের (ঢাকা এসেটস), মোহাম্মদ আব্দুর রহমান (মিরপুর বয়েজ ক্রিকেট ক্লাব), রফিকুল ইসলাম (গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমি) ও মনজুর আলম (আসিফ শিফা ক্রিকেট একাডেমি)।
ঢাকা বিভাগ
দুই পদের জন্য নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন তানভীর আহমেদ টিটু (নারায়ণগঞ্জ), নাঈমুর রহমান দুর্জয় (মানিকগঞ্জ) ও সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু (কিশোরগঞ্জ), খালিদ হোসেন। খালিদ ও আশফাকুল সরে যাওয়ায় বাকি দুজনের নির্বাচিত হওয়া আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। তবে সরে গেলেও ব্যালটে নাম থাকছে সবার।
রাজশাহী বিভাগ
এক পদের জন্য লড়ছেন খালেদ মাসুদ পাইলট (রাজশাহী) ও সাইফুল আলম স্বপন।
ক্যাটাগরি-৩
লড়াইয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন ও নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
Comments