অসাধারণ কিছু করব যেন মানুষ আমাকে মনে রাখে: তাইজুল

বাংলাদেশ জাতীয় দলে, বিশেষ করে, লাল বলের সংস্করণে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম নিজের দক্ষতা ও সামর্থ্যের ছাপ রেখে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ জাতীয় দলে, বিশেষ করে, লাল বলের সংস্করণে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম নিজের দক্ষতা ও সামর্থ্যের ছাপ রেখে যাচ্ছেন। তবে ৩০ বছর বয়সী এই বিনয়ী তারকা পাদপ্রদীপের আলোর আসার চেয়ে নিভৃতে নিজের দায়িত্ব পালন করতে পছন্দ করেন। নিয়মিত পারফর্মার হলেও তারকাখ্যাতির সঙ্গে তার সংযোগ নেই বললেই চলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়ার আগে দ্য ডেইলি স্টারের মাজহার উদ্দিনের সঙ্গে তাইজুল কথা বলেছেন ক্রিকেট, জীবনের নানা দিক ও অন্যান্য আরও বিষয়ে। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য:

দ্য ডেইলি স্টার: আরেকটি সফর সামনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ নিয়ে আপনার প্রস্তুতি কেমন?

তাইজুল ইসলাম: একটা কন্ডিশন থেকে আরেকটা কন্ডিশনে গিয়ে মানিয়ে নেওয়া সবসময় কঠিন। কন্ডিশনের চাহিদা কী সেটা জানাই হলো প্রস্তুতি। আগেরবার যখন আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলেছিলাম, পিচ স্পিনার ও পেসার সবাইকে সাহায্য করেছিল। সাকিব (আল হাসান) ভাই ৫ উইকেট নিয়েছিলেন এবং (মেহেদী হাসান) মিরাজ ও আমিও বেশ কিছু উইকেট পেয়েছিলাম। পর্যবেক্ষণ না করে পিচ নিয়ে মন্তব্য করা উচিত হবে না। এমন না যে অতীতে আমরা সেখানে স্পিনবান্ধব উইকেট দেখিনি কিন্তু পেসাররা সাধারণত ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে বেশি উইকেট পেয়ে থাকে। যদি আপনার কেবল নির্দিষ্ট একটি পরিকল্পনা থাকে, তাহলে কাজটা কঠিন হবে। তাই আপনাকে ফ্লেক্সিবল হবে। আমার প্রাথমিক লক্ষ্য হলো আঁটসাঁট বল করে পেসারদের সহায়তা করা। তবে স্পিনাররা সহায়তা পেলে পুরো চেহারা পাল্টে যাবে।

স্টার: প্রতিটি সিরিজের আগে আপনি নিজেকে কীভাবে তৈরি করেন?

তাইজুল: প্রস্তুতির একটা অংশ হলো অনুশীলন। এর ভেতরে আছে স্কিল নিয়ে কাজ করা এবং সঠিক জায়গায় একটানা বল করে যাওয়া। তবে আমি মনে করি, মাঠের বাইরের প্রস্তুতিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। মানসিক হোক বা অন্য কিছু, নিজের ঘরে বসে সেই প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। আমি মাঠে ও মাঠের বাইরের ওই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি।

স্টার: ঘরের মাঠের সঙ্গে তুলনায় বিদেশের মাটিতে বোলিংয়ের ক্ষেত্রে আপনি কী কী পরিবর্তন আনেন?

তাইজুল: আমার জন্য সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো কন্ডিশন কেমন এবং আমি কীভাবে সেটার সাহায্য কাজে লাগাতে পারি সেসব বোঝা। যেমন, বাতাস একটি বড় ভূমিকা রাখে। দেশের বাইরে প্রথম কয়েকটি দিনে আপনি উইকেট থেকে খুব বেশি সুবিধা আদায় করতে পারবেন না। কোন লাইন ও লেংথ বেছে নেবেন তা নির্দিষ্ট অ্যাঙ্গেলে বল করে কতখানি ড্রিফট পাবেন সেটার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। তাই বিদেশে দ্রুত মানিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। শুরুর দিকে বিদেশে বোলিংয়ে আমার সমস্যা হতো। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি মানিয়ে নিতে শিখেছি। আরেকটা ব্যাপার হলো বোলিংয়ের ভ্যারিয়েশন। আমি মনে করি, দীর্ঘ সংস্করণের ক্রিকেটে এটা খুবই দরকারি।

স্টার: টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ১৫০ উইকেট শিকারের রেকর্ড আপনার এবং বছরের পর বছর আপনি নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন। কখনও কি মনে হয় যে সাকিব আল হাসানের মতো একজন একই সময়ে খেলায় আপনি ছায়ায় ঢাকা পড়ে গেছেন? 

তাইজুল: না, আমার কখনও সেরকম অনুভূতি হয় না। যখন আমি ভালো খেলি এবং দেশের জন্য পারফর্ম করি, আমার ভালো লাগে। এর বাইরে আর কিছু মনে হয় না।

স্টার: দলের অন্যান্য তারকাদের সঙ্গে তুলনায় কখনও কি মনে হয়, আপনার আরও বেশি খ্যাতি পাওয়া উচিত?

তাইজুল: আমার মনে হয়, হাইলাইট হওয়ার জন্য বা এক্সপোজার পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট বিষয় অনুসরণ করতে হয়। কিন্তু আমি ইচ্ছা করেই সেগুলো থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখি। আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব না। আমি বলছি না যে এটা খারাপ বা আমি হাইলাইটেড হতে চাই না। একদিন হয়তো আমি এমন অসাধারণ কিছু করব যেন এই দেশের মানুষ আমাকে মনে রাখে। আমি গণমাধ্যম থেকেও দূরে থাকার চেষ্টা করি। কারণ, আমি মনে করি, খেলায় মনোযোগী থাকার জন্য এটা কাজে দেয়।

তাইজুল: আপনি কি মনে করেন না যে ইতোমধ্যে বেশ কিছু জিনিস অর্জন করেছেন?

স্টার: হ্যাঁ, আমি করেছি। কিন্তু আমি মনে করি, অসাধারণ কিছু করে দেশকে জেতানো এখনও বাকি আছে আমার। ধরুন, আমি একাই র‍্যাঙ্কিংয়ের ওপরের দিকে থাকা একটি দলকে ধসিয়ে দিলাম এবং বাংলাদেশের জন্য জয় ছিনিয়ে আনলাম কিংবা একটি শিরোপা জিতলাম। আমি এমন কিছু এখনও করিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Rooppur Nuclear Power Plant: First unit to start production in Dec

One of the two units of the Rooppur Nuclear Power Plant will be commissioned this December if transmission lines are ready although the deadline for the project’s completion has been extended to 2027.

3h ago