'আমাদের উইকেটগুলোর চরিত্রে বদল আনা দরকার'

আগামী মাসের শুরুতে নিজেদের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। পরের মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেসব চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে যখন প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ক্রিকেটের আধুনিকতম সংস্করণের বাংলাদেশ দলের সদস্যরা, তখন টেস্ট দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক নিভৃতে কাজ করছেন নিজের স্কিল নিয়ে। ঢাকার উপকণ্ঠে মাসকো সাকিব ক্রিকেট একাডেমিতে তাকে নির্দেশনা দিচ্ছেন কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। ক্রিকেটীয় ব্যাকরণ মেনে চলা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তার নিবিড় অনুশীলনের ফাঁকে কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের মাজহার উদ্দিনের সঙ্গে। আলাপচারিতায় উঠে আসে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে তার প্রত্যাশা, বাংলাদেশের পেস বোলিং ইউনিটের উন্নতি ও দেশের উইকেটের ধরনে বৈচিত্র্য আনার মতো বিষয়গুলো। পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো মুমিনুলের সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ।

দ্য ডেইলি স্টার: মিরপুরে না গিয়ে বরং এত দূরে এসে অনুশীলন করছেন। এর কারণটা কী? স্কিল নিয়ে নিরিবিলিতে কাজ করার জন্য?

মুমিনুল: আসলে সেরকম কিছু না। সত্যি বলতে, অনুশীলনের সময় একজন গাইড দরকার হয়। যদিও মিরপুরে সবকিছু প্রস্তুত ছিল, তবে ফাঁকা সময়ে এখানে এসে সালাহউদ্দিন স্যারের অধীনে আমার খেলা নিয়ে আমি কাজ করি। সামনের টেস্ট সিরিজের আগে লম্বা বিরতি রয়েছে। প্রায় তিন মাসের মতো। এছাড়া, অন্য কোনো কারণ নেই।

দ্য ডেইলি স্টার: কিছুদিন আগে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজ হারায় বাংলাদেশ। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে আপনার তখন কেমন লেগেছিল?

মুমিনুল: চমৎকার একটা অনুভূতি ছিল। বাংলাদেশ যে কায়দায় দাপট দেখিয়ে সিরিজ জিতেছে সেটা অসাধারণ। আমার কল্পনাতেও আসেনি যে, আমরা ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিততে পারি। আমরা এর আগে ওয়ানডে ও টেস্টে একবার করে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিলাম, কিন্তু এবার দল যা অর্জন করেছে তা নিয়ে আমি খুব গর্বিত। এটা আমাদের জন্য নতুন একটি শুরু। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ধারাবাহিকভাবে ভালো করতে ব্যর্থ হচ্ছিলাম আমরা। আমি মনে করি, বিশ্বকাপের আগে এমন কিছু প্রয়োজন ছিল আমাদের।

দ্য ডেইলি স্টার: যখন দলের সদস্যরা সীমিত ওভারের ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত থাকে, তখন আপনার পক্ষে মনোযোগ ধরে রাখা কতটা কঠিন হয়?

মুমিনুল: লম্বা বিরতি থাকলে এটা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে। একবার আমি পাঁচ মাসের বিরতির পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নেমেছিলাম। তখন থেকে আমি নিজেকে মানিয়ে নিতে পেরেছি। ঘরোয়া ক্রিকেটে যত ম্যাচই খেলুন না কেন, পাঁচ মাসের বিরতির পর টেস্ট খেলতে নাম খুবই কঠিন। তবে আমরা খুব বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ পাই না। আর আমাদের ফলও স্বস্তিকর নয়।

দ্য ডেইলি স্টার: ২০১৯ সালে হঠাৎ করেই আপনাকে টেস্ট দলের অধিনায়ক করা হয়। গত মাসে জিম্বাবুয়ে সফরে আপনি প্রথমবারের মতো বিদেশের মাটিতে টেস্ট জিতলেন। অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট দলের কাছ থেকে সামনের দিনগুলোতে আপনি কী দেখতে চান?

মুমিনুল: জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতেছি মানে যে, আমরা টেস্ট ক্রিকেটে অনেক কিছু করে ফেলেছি তা নয়। আমি মনে করি, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড সফরের টেস্ট সিরিজে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কন্ডিশন ও প্রতিপক্ষ যেমনই হোক না কেন দলের সবার পারফর্ম করাটা জরুরি। তাই আমার মনে হয়, যদি আমরা দলগতভাবে পারফর্ম করতে পারি, আমরা টেস্ট দল হিসেবে উন্নতি করতে পারব। আমি আরও বলতে চাই যে, আমাদের দলে যেসব পেসার আছেন, তারা স্পিনারদের সঙ্গে মিলে টেস্ট ম্যাচে ২০ উইকেট নিতে পারবে। কীভাবে বিদেশের মাটিতে পারফর্ম করতে হবে সেটা জানাও ফাস্ট বোলারদের জন্য জরুরি।

দ্য ডেইলি স্টার: ঘরের মাঠের উইকেট নিয়ে অনেক কথা চলছে। এখানে পেসাররা তেমন সহায়তা পান না। ফলে বিদেশে গিয়ে তাদের ধুকতে হয়। এর সমাধান কী?

মুমিনুল: আমি মনে করি, আমাদের উইকেটগুলোর চরিত্রে বদল আনা দরকার। আমি আগেও এটা বলেছি। যখন পিচ বাউন্সি হবে, পেসাররা তখন বল করতে আগ্রহী হয়। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব করার সময় আমি একাদশে দুই-তিনজন পেসার খেলাই, কিন্তু পরে দেখি উইকেট থেকে সাহায্য মিলছে না। এটা বোলারদের দৃষ্টিকোণ থেকে খুবই হতাশাজনক। কিছু ফ্ল্যাট পিচ থাকতে পারে, যেখানে পেসাররা রিভার্স সুইং শিখতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ উইকেট হওয়া উচিত পেসবান্ধব। তখন আপনি দেখতে পাবেন যে, পেসারদের মধ্যে উৎসাহ দেখতে পাবেন এবং তাদের মধ্যে উদ্দীপনাও দ্রুত বাড়বে।

Comments

The Daily Star  | English

US tariff at 20% 'satisfactory', says Khosru

Will comment after knowing full details of the deal

2h ago