ইফতিখার-শাদাবের ঝড়ের পর শাহিনের তোপে সিরিজ পাকিস্তানের

মোহাম্মদ রিজওয়ান ও হায়দার আলির জুটি পাকিস্তানকে দিল ভালো সংগ্রহের ভিত। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ছন্দপতন ঘটল তাদের। তবে শেষদিকে ইফতিখার আহমেদ ও শাদাব খানের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তারা পেল চ্যালেঞ্জিং পুঁজি। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন ব্র্যান্ডন কিং। তার বিদায়ের পর শাহিন শাহ আফ্রিদির এক ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে আর পেরে ওঠেনি তারা।
মঙ্গলবার করাচিতে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৯ রানে জিতেছে পাকিস্তান। এতে এক ম্যাচ হাতে রেখে তিন ম্যাচের সিরিজ ঘরে তুলেছে তারা। আগের দিন একই ভেন্যুতে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬৩ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছিল স্বাগতিকরা।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৭২ রান স্কোরবোর্ডে জড়ো করে পাকিস্তান। জবাবে অনেকটা সময় ম্যাচে থাকা সফরকারী ক্যারিবিয়ানরা পুরো ওভার খেলে অলআউট হয় ১৬৩ রানে।
তৃতীয় ওভারে রিজওয়ানের ডাকে সাড়া দিয়ে দ্রুত রান নিতে গিয়ে কাটা পড়েন অধিনায়ক বাবর আজম। টিকতে পারেননি ফখর জামানও। তারপরও পাওয়ার প্লেতে ৫০ রান তুলে ফেলে পাকিস্তান।
তৃতীয় উইকেটে হায়দারকে নিয়ে ছন্দে থাকা রিজওয়ান এগিয়ে নিতে থাকেন দলকে। আগের ম্যাচে ফিফটি করা এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটারের বিদায়ে ভাঙে ৪২ বলে ৪৮ রানের জুটি। ওডেন স্মিথের শিকার হন তিনি। তার ব্যাট থেকে ৩০ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় আসে ৩৮ রান।
নিজের পরের ওভারে হায়দারকেও ফেরান স্মিথ। সীমানার কাছে শামার ব্রুকসের দারুণ ক্যাচে থামে তার ৩৪ বলে ৩১ রানের ইনিংস। এরপর মোহাম্মদ নওয়াজ ও আসিফ আলি দ্রুত সাজঘরে ফিরলে পাকিস্তান বড় ধাক্কা খায়।
শেষ ৩ ওভারে ইফতিখার ও শাদাবের ঝড়ো ব্যাটিং অবশ্য মুছে দেয় ক্ষত। পাকিস্তান যোগ করে ৪৫ রান। ১৮তম ওভারের শেষ বলে আউট হওয়া ইফতিখার ১৯ বলে করেন ৩২ রান। তিনি মারেন ১ চার ও ২ ছক্কা। শাদাব ১ চার ও ৩ ছয়ে ১২ বলে ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। স্মিথ ২ উইকেট নেন ২৪ রানের বিনিময়ে।
জবাব দিতে নেমে উইন্ডিজও প্রথম ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে তোলে ৫০ রান। তৃতীয় ওভারে শেই হোপকে বিদায় করেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। পরের ওভারে ব্রুকস এলবিডব্লিউ হন মোহাম্মদ নওয়াজের বলে।
একপ্রান্ত আগলে থাকা কিং এরপর জুটি গড়েন অধিনায়ক নিকোলাস পুরানের সঙ্গে। তৃতীয় উইকেটে ৪৬ বলে ৫৪ রান যোগ করে তারা। নওয়াজের বলে ক্যাচে পুরানের ডাইভিং ক্যাচ নিয়ে তাদের বিচ্ছিন্ন করেন হারিস রউফ। তিনি ২৬ বলে করেন ২৬ রান।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়ায় ক্যারিবিয়ানরা। রভম্যান পাওয়েল হন ওয়াসিমের দ্বিতীয় শিকার। ৩৪ বলে ফিফটি ছোঁয়া কিংকে আউট করেন রউফ। তিনি ৪৩ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৬৭ রান।
১৭তম ওভারে প্রতিপক্ষকে নাড়িয়ে দেন পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসার শাহিন। প্রথম বলে সীমানার কাছে আসিফের তালুবন্দি হন স্মিথ। পঞ্চম বলে উইকেটের পেছনে রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দেন ডমিনিক ড্রেকস। আর শেষ বলে উপড়ে যায় হেইডেন ওয়ালশের স্টাম্প। ড্রেকস ও ওয়ালশ দুজনই স্বাদ নেন গোল্ডেন ডাকের।
রোমারিও শেফার্ড শেষদিকে জোর চেষ্টা চালালেও তা যথেষ্ট হয়নি। শেষ ৩ ওভারে ৪২ রানের সমীকরণ মেলানো সম্ভব হয়নি তার পক্ষে। ১৯ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। আকিল হোসেন রানআউট হওয়ার পর ওশানে থমাসকে বোল্ড করে রউফ গুটিয়ে দেন উইন্ডিজের ইনিংস।
শাহিন ৩ উইকেট নেন ২৬ রানে। নওয়াজ, ওয়াসিম ও রউফের ঝুলিতে যায় ২টি করে উইকেট। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত শাদাব বল হাতে লেগ স্পিনেও নজর কাড়েন। উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান দেন তিনি।
Comments